Advertisement
E-Paper

ভারতকে ভয় ধরিয়ে দিল ওমান!‍ নিয়মরক্ষার ম্যাচে কোনও মতে পাশ সূর্যেরা, রবিতে পাকিস্তান ম‍্যাচের আগে চিন্তা বাড়ল গম্ভীরের

ওমানের বিরুদ্ধে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়ে নিজেদেরই সমস্যায় ফেলে দিয়েছিল ভারত। আর একটু হলে ম্যাচ হারতেও পারতেন সূর্যকুমার যাদবেরা। কোনও রকমে ওমানকে হারাল ভারত।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০০:০০
cricket

ওমানের ব্যাটিং দেখে চাপে পড়ে গিয়েছিলেন সূর্যকুমার যাদবও। ছবি: রয়টার্স।

ওমানকে কি একটু বেশিই হালকা ভাবে নিয়েছিল ভারত? তাদের খেলা দেখে সে রকমই মনে হল। খানিকটা দায়সারা খেললেন সূর্যকুমার যাদবেরা। একটা সময় মনে হচ্ছিল, ওমান না অঘটন ঘটিয়ে দেয়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তা হয়নি। রবিবার পাকিস্তান ম্যাচের আগে দলের সকলকে দেখে নিতে চেয়েছিলেন গৌতম গম্ভীর। ব্যাটিং, বোলিং দুই ক্ষেত্রেই পরীক্ষা করে দেখলেন তিনি। সেই কারণেই হয়তো চলতি এশিয়া কাপে ওমানকে হারাতে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হল ভারতের। গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানকে হারাতেও এতটা সমস্যা হয়নি সূর্যদের। ওমানকে ২১ রানে হারিয়ে ভারত অপরাজিত থাকলেও সুপার ফোরের আগে কয়েকটি প্রশ্ন উঠে গেল গম্ভীরের সামনে।

টস জিতে সূর্যকুমারের ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই বোঝা গিয়েছিল, সব ধরনের পরিস্থিতির জন্য নিজেদের তৈরি রাখতে চাইছেন তাঁরা। ব্যাটিং অর্ডারেও সেই ছবি দেখা গেল। চলতি এশিয়া কাপে এর আগে সঞ্জু স্যামসন, হার্দিক পাণ্ড্য, অক্ষর পটেলরা ব্যাট করতে পারেননি। ওমানের বিরুদ্ধে সকলেই ব্যাট করলেন। ৮ উইকেট পড়ে গেলেও ব্যাট করতে নামলেন না অধিনায়ক সূর্য।

ওমান ম্যাচের আগে আলোচনা চলছিল রেকর্ড নিয়ে। অনেকেই বলছিলেন, রেকর্ডের বন্যা বয়ে যেতে পারে এই ম্যাচে। বিশেষ করে ভারত প্রথমে ব্যাট করতে নামায় সেই সম্ভাবনা আরও বাড়ে। কিন্তু ওমান দেখিয়ে দিল, একটি ম্যাচ না জিতলেও লড়াই করতে ভয় পায় না তারা।

নজর কাড়লেন শাহ ফয়জ়ল। পাকিস্তানে জন্মানো এই বাঁহাতি পেসার খেলেন ওমানের হয়ে। নতুন ও পুরনো দুই বলেই ভারতীয় ব্যাটারদের সমস্যায় ফেললেন তিনি। দ্বিতীয় ওভারে তাঁর ভিতরের দিকে ঢুকে আসা বল বুঝতে পারলেন না শুভমন গিল। তাঁর অফ স্টাম্প ছিটকে গেল। উইকেট মেডেন নিলেন ফয়জ়ল। চলতি এশিয়া কাপে বড় রান পাননি শুভমন। এই ম্যাচেও ৫ রানে আউট হলেন। রান পেলেন না হার্দিকও। ১ রানের মাথায় রান আউট হলেন। শিবম দুবে ৫ রানে ফিরলেন। ভারতের তিন ব্যাটারের ফর্ম চিন্তায় রাখবে গম্ভীরকে।

অভিষেক শর্মা অবশ্য ছন্দে রয়েছেন। এই ম্যাচেও ঝোড়ো ইনিংস খেললেন। ১৫ বলে ৩৮ রান করলেন তিনি। ভাল দেখাল সঞ্জু স্যামসনকে। চলতি এশিয়া কাপে প্রথম বার খেলতে নেমে অর্ধশতরান করলেন তিনি। শুরুতে ফয়জ়লের বল খেলতে সমস্যা হচ্ছিল সঞ্জুর। কিন্তু উইকেট দিয়ে আসেননি তিনি। ধৈর্য ধরে খেলেন। কয়েক বল পরে হাত খুলে খেলেন। পর পর উইকেট পড়লেও ভারতের ইনিংসকে সচল রাখলেন সঞ্জু।

ভাল দেখাল অক্ষরকে। শুরু থেকে বড় শট খেললেন তিনি। শেষ দিকে তিলক বর্মার ইনিংস ভারতকে বড় রানে নিয়ে গেল। সঞ্জুর ৫৬, অক্ষরের ২৬ ও তিলকের ২৯ রানে ভর করে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৮৮ রান করল ভারত। হর্ষিত রানা, অর্শদীপ সিংহ, কুলদীপ যাদবও ব্যাট করে ফেললেন। কিন্তু সূর্য নামলেন না। নইলে আরও বেশি রান হত ভারতের।

১৮৯ রান ওমানের পক্ষে কঠিন হলেও চেষ্টা করেছে তারা। ওপেনিং জুটিতে অধিনায়ক জতিন্দর সিংহ ও আমির কলিম ৫৬ রান তোলেন। ওমানই আইসিসি-র দ্বিতীয় সহযোগী সদস্য দেশ যারা ওপেনিং জুটিতে ভারতের বিরুদ্ধে ৫০ রান করল।

ভারতের বোলিংয়ের শুরু করেছিলেন তিন পেসার। হার্দিক, অর্শদীপ ও হর্ষিত পাওয়ার প্লে-তে উইকেট তুলতে পারলেন না। জসপ্রীত বুমরাহ এই ম্যাচে খেলেননি। ভারতীয় পেসারেরা গায়ের জোরে বল করে গেলেন। বৈচিত্র বিশেষ দেখালেন না। ফলে নতুন বলে উইকেট এল না।

ওমানের জুটি ভাঙলেন সেই কুলদীপ যাদব। এ বারের এশিয়া কাপে কুলদীপকে থামানো যাচ্ছে না। তাঁর বল বুঝতেই পারছেন না ব্যাটারেরা। ওমানের বিরুদ্ধেও শুরুতে তাই দেখা গেল। জতিন্দরকে ৩২ রানে ফেরালেন তিনি। জরুরি রান রেট ক্রমশ বেড়ে চললেও হাল ছাড়েনি ওমান।

ব্যাটারদের পাশাপাশি বোলিং আক্রমণেও পরীক্ষা করলেন সূর্য। শিবম, তিলক, অভিষেকদের বল দিলেন তিনি। এক সময় প্রশ্ন উঠেছিল, উইকেটরক্ষক বাদে বাকি ১০ জনই কি বল করবেন? স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল, সকলকে দেখে নিতে চাইছেন। তবে তা করতে গিয়ে অযথা লম্বা হল ওমানের ইনিংস। তবে কি বুমরাহ ও বরুণ চক্রবর্তী না খেললে প্রতিপক্ষকে অল আউট করতে সমস্যা হচ্ছে ভারতের? দুবাইয়ের মাটিতে তেমনটা না হলেও আবু ধাবিতে সেটাই দেখা গেল। এই মাঠে অবশ্য আর ম্যাচ খেলবে না ভারত। এশিয়া কাপে তাদের বাকি সব ম্যাচ দুবাইয়ে।

আগের দুই ম্যাচে ভারতীয় বোলারেরা যে দাপট দেখিয়েছিলেন তা ওমানের বিরুদ্ধে দেখা গেল না। ওমানের অনভিজ্ঞ ব্যাটারেরাও হার্দিক, শিবমদের বিরুদ্ধে বড় শট মারলেন। পর পর দু’টি অর্ধশতরানের জুটি হল। উইকেট তুলতে সমস্যায় পড়ল ভারত। ক্যাচও পড়ল। নিয়মরক্ষার ম্যাচ হলেও ভারতের উচিত ছিল দাপট দেখানো। সেটা দেখা গেল না।

ব্যাট হাতে নজর কাড়লেন কলিম ও হাম্মাদ মির্জ়া। কুলদীপের মতো বোলারের বিরুদ্ধেও বড় শট মারতে ভয় পাননি তাঁরা। দু’জনেই অর্ধশতরান করেন। শিশির পড়ায় বল ধরতে একটু সমস্যা হচ্ছিল বোলারদের। স্পিনারেরাও খুব একটা সাহায্য পেলেন না পিচ থেকে। কলিমের থেকেও দ্রুত রান করছিলেন হাম্মাদ। কুলদীপকে পর পর দু’বলে দু’টি বড় ছক্কা মারলেন তিনি। তা দেখে অবাক হয়ে যান কুলদীপ।

শেষ ১৮ বলে দরকার ছিল ৪৮ রান। যেভাবে ওমানের দুই ব্যাটার খেলছিলেন, তাতে তা অসম্ভব ছিল না। তখনই দুর্দান্ত ক্যাচে কলিমকে ফেরালেন হার্দিক। হার্দিক ক্যাচ ধরতে না পারলে সেটাও ছক্কা হত। ৪৬ বলে ৬৪ রান করলেন কলিম। হাম্মাদ আউট হলেন ৫১ রানে। তাঁরা আউট হওয়ায় ওমানের লড়াই শেষ হয়ে গেল। অনেক চেষ্টা করেও ওমান জিততে পারল না। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৬৭ রান করল ওমান। এশিয়া কাপ থেকে বিদায় নিলেও ভারতের বিরুদ্ধে তাদের পারফরম্যান্স আত্মবিশ্বাস বাড়াবে ওমানের।

Asia Cup 2025 Team India
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy