বিরাট কোহলি করছেন কী? ব্যাট করতে নামছেন আর আউট হয়ে ফিরছেন। ২২৪ দিন পর ফিরে এখনও পর্যন্ত একটি রানও করতে পারেননি। পার্থের পর অ্যাডিলেডেও শূন্য রানে আউট হয়েছেন। অনামী জ়েভিয়ার বার্টলেটের বল ব্যাটে লাগাতে পারেননি। এক দিনের কেরিয়ারে প্রথম বার পর পর দু’ম্যাচে শূন্য রানে আউট হয়েছেন কোহলি। তাঁর ব্যাটিং ভয় ধরাচ্ছে। এ রকম ফর্ম নিয়ে কি আর বেশি সুযোগ পাবেন তিনি? নির্বাচক প্রধান অজিত আগরকর ও প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীরের হাতে নিজেই অস্ত্র তুলে দিচ্ছেন কোহলি।
পার্থে নেমে আট বল খেলেছিলেন কোহলি। জশ হেজ়লউড ও মিচেল স্টার্কের বল সামলাতে পারেননি। পয়েন্ট অঞ্চলে গায়ের জোরে শট মারতে গিয়ে আউট হয়েছিলেন। অ্যাডিলেডে হেজ়লউড, স্টার্ককেও সামলাতে হয়নি। সামনে ছিলেন অনামী জ়েভিয়ার বার্টলেট। তাঁর প্রথম দু’টি বল ছাড়েন কোহলি। দেখে মনে হচ্ছিল, অফ স্টাম্পের বাইরের বল দেখে খেলার চেষ্টা করছেন। তৃতীয় বল ডিফেন্ড করেন। চতুর্থ বল পিচে পড়ে ভিতরে ঢোকে। বলে ব্যাট লাগাতে পারেননি কোহলি। বল গিয়ে লাগে প্যাডের মাঝে। আম্পায়ার সঙ্গে সঙ্গে আউট দেন। রিভিউ নেননি কোহলি। রোহিতের সঙ্গে কথা বলে ফিরে যান। পরে দেখা যায়, বল মিডল স্টাম্পে লাগত।
কোহলি যখন ফিরছেন, তখন অ্যাডিলেডের দর্শকেরা উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দেন। তাঁদের দিকে গ্লাভস তুলে ‘গুডবাই’ জানান কোহলি। মাথা নিচু করেই মাঠ ছাড়েন তিনি। অ্যাডিলেড কোহলির অন্যতম প্রিয় মাঠ। এই মাঠে ৯৭৫ রান রয়েছে তাঁর। সেখানেই শূন্য রানে আউট হয়ে হতাশ হয়ে মাঠ ছাড়েন কোহলি। তিনি স্পষ্ট বুঝতে পারছিলেন, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তাঁর আর একটিই ইনিংস বাকি। এর পর আর এই দেশে খেলা হবে না।
এখন প্রশ্ন হল, এই সিরিজ়ের পর কি আর ভারতের জার্সিতে কোনও দেশেই খেলার সুযোগ পাবেন কোহলি? এখন একটি ফরম্যাটেই খেলেন তিনি। বছরে সবচেয়ে কম এক দিনের ম্যাচ হয়। কোহলি যা খেলছেন, তাতে পরের সিরিজ়ে তাঁর সুযোগ পাওয়া কঠিন। তাঁর হয়ে কথা বলার মানুষের সংখ্যাও এ বার ধীরে ধীরে কমবে। কারণ, যদি তিনি রান করতেন, তা হলে কোহলিকে খেলানোর দাবি বাড়ত। সেটা তো তিনি করতে পারছেন না।
আরও পড়ুন:
ভারতের কোচ হওয়ার পর থেকে তরুণদের প্রাধান্য দিয়ে এসেছেন গম্ভীর। শোনা যায়, তাঁর চাপেই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন রোহিত ও কোহলি। এক দিনের ক্রিকেটেও তাঁরা কত দিন খেলবেন তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আগরকর তো অস্ট্রেলিয়া সিরিজ়ের দল ঘোষণার সময়ই বলে দিয়েছেন, রোহিত ও কোহলি ২০২৭ সালের এক দিনের বিশ্বকাপে নিশ্চিত নন। জায়গা পেতে হলে তাঁদের ধারাবাহিক ভাবে রান পেতে হবে। কোহলি যে ভাবে পর পর ব্যর্থ হচ্ছেন, তাতে গম্ভীরদের বলার জায়গা থাকবে। তাঁরা পরিসংখ্যান দিয়ে দেখিয়ে দেবেন, কেন কোহলিকে আর এক দিনের দলে জায়গা দেওয়া হবে না।
এই পরিস্থিতিতে এক ভাবেই এক দিনের দলে জায়গা ধরে রাখার সুযোগ পেতেন কোহলি। ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে হত তাঁকে। কিন্তু তাঁকে দেখে মনে হচ্ছে, ঘরোয়া ক্রিকেটের দিকে খুব একটা মন নেই। কারণ, আইপিএলের পর থেকে লন্ডনে ছিলেন। সেখানেই প্রস্তুতি নিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগে ভারতে ফিরেছিলেন। সেখান থেকে দলের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছেন। তাই এর পরেও তাঁর ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার সম্ভাবনা কম। সে ক্ষেত্রে কিন্তু কোহলির আন্তর্জাতিক কেরিয়ার শেষের জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। কোহলি নিজেই অস্ত্র তুলে দিচ্ছেন গম্ভীর, আগরকরদের হাতে।