Advertisement
E-Paper

সেটব‍্যাককে কামব‍্যাকে বদলে দিয়েছি! গাওস্করের ডিগবাজি নিয়ে বললেন পন্থ

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে শতরানের পর ঋষভ পন্থের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সুনীল গাওস্কর। নিজের কথা থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরেছেন তিনি। গাওস্করের ডিগবাজি নিয়ে মুখ খুলেছেন পন্থও।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৫ ১৬:৩৭
cricket

হেডিংলেতে শতরানের পর ঋষভ পন্থ। ছবি: রয়টার্স।

ডিগবাজি খেয়েছেন সুনীল গাওস্কর। যে ঋষভ পন্থকে অস্ট্রেলিয়া সফরে ‘স্টুপিড, স্টুপিড, স্টুপিড’ বলেছিলেন, তাঁকেই ‘সুপার্ব, সুপার্ব, সুপার্ব’ বলেছেন তিনি। হেডিংলেতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পন্থের শতরান গাওস্করকে বাধ্য করেছে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরতে। গাওস্করের এই ডিগবাজি নিয়ে মুখ খুলেছেন পন্থ। তাঁর কামব্যাকের নেপথ্য কাহিনি জানিয়েছেন তিনি।

ভারত-ইংল্যান্ড প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা শুরু হওয়ার আগে ধারাভাষ্যকার চেতেশ্বর পুজারার সঙ্গে মাঠে দাঁড়িয়ে কথা বলেন পন্থ। সেখানে পুজারা তাঁকে বলেন, “সানি ভাই এক দিন তোমাকে বলেছিল স্টুপিড, স্টুপিড, স্টুপিড। তুমি যখন শতরান করলে তখন সানি ভাই বলেছে, সুপার্ব, সুপার্ব, সুপার্ব। এটা শুনে তোমার কেমন লাগছে?” পুজারার মুখে সে কথা শুনে হাসি চওড়া হয় পন্থের। তিনি বলেন, “পুজ্জি ভাই, তুমি জানো আমার কেমন মনে হচ্ছে। খুব ভাল লাগছে। নিজের খামতি মেটানোর চেষ্টা করেছি। সেটব্যাককে কামব্যাকে বদলে দিয়েছি। জানি, আমার কিছু ভুল ছিল। সেই ভুল শোধরানোর জন্য পরিশ্রম করেছি। ব্যাট করার সময় মনঃসংযোগ রেখেছি। খেলায় শৃঙ্খলা এনেছি। তাতেই সফল হয়েছি।”

গত বছর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বক্সিং ডে টেস্টের তৃতীয় দিন র‌্যাম্প শট মারতে গিয়ে আউট হয়েছিলেন পন্থ। ধারাভাষ্য দিতে দিতে গাওস্কর বিরক্ত হয়ে বলেছিলেন, ‘স্টুপিড, স্টুপিড, স্টুপিড’। পরে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে জানিয়েছিলেন, ম্যাচের যে পরিস্থিতিতে পন্থ ও রকম শট খেলে আউট হয়েছেন তাতে তাঁকে বোকা ছাড়া আর কিছু বলা যায় না। ঠিক ১৭৫ দিন পরে নিজের কথা গিলেছেন গাওস্কর। হেডিংলেতে ভারত-ইংল্যান্ড প্রথম টেস্টেও ধারাভাষ্য দিচ্ছেন তিনি। প্রথম দিন পন্থ অর্ধশতরান করার পর তাঁর ব্যাটিংয়ের প্রশংসা করেছিলেন ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার। দ্বিতীয় দিন তিনি শতরান করার পরে ১৭৫ দিন আগে বলা কথা থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গাওস্কর বললেন, ‘সুপার্ব, সুপার্ব, সুপার্ব।’ অর্থাৎ, দারুণ, দারুণ, দারুণ। তিনি আরও জানান, পন্থ যে ভাবে ধৈর্যের সঙ্গে আগ্রাসন মিশিয়ে ইনিংস খেলেছেন তাতে অবাক হয়েছেন তিনি। পন্থের পরিণত ইনিংসের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এর থেকে ভাল শব্দ তাঁর জানা নেই বলে জানিয়েছেন গাওস্কর। তাঁর সেই কথার জবাব দিলেন পন্থ।

হেডিংলেতে নিজের স্বাভাবিক খেলা খেলেছেন পন্থ। ৯৯ রানের মাথায় এক হাতে ছক্কা মেরে শতরান করেছেন। পুজারা তাঁকে প্রশ্ন করেন, আগে থেকেই কি ছক্কা মারার কথা ভেবে রেখেছিলেন তিনি? জবাবে পন্থ জানান, ছক্কা মেরে শতরানের পরিকল্পনা তাঁর ছিল। কিন্তু তাড়াহুড়ো করতে চাননি তিনি। পন্থ বলেন, “বশিরের আগের ওভারেই ভেবেছিলাম শতরান করে ফেলব। কিন্তু খুব ঝুঁকিও নিতে চাইনি। ও ভাল বল করছিল। তাই ওই ওভারে ওকে সম্মান দিয়েছি। বশিরের পরের ওভারে আবার এক বার ভাবলাম, এ বার সুযোগ নিই। ওকে বলেছিলাম, ফিল্ডার ভিতরে রাখলে বড় শট মারব। ভাগ্য ভাল যে ৯৯ রানের মাথায় ও ফিল্ডার ভিতরে রেখেছিল। তাই সুযোগ নিয়েছি। কিন্তু আগে থেকে কিছু ভাবিনি। বল দেখে খেলতে চেয়েছিলাম। বল দেখে মেরেছি।”

শতরানের পর ডিগবাজি মেরে উল্লাস করতে দেখা গিয়েছে পন্থকে। এর আগে আইপিএলে লখনউ সুপার জায়ান্টসের শেষ গ্রুপ ম্যাচেও শতরান করে একই কায়দায় উল্লাস করেছিলেন তিনি। আগেই থেকেই কি এই উল্লাসের কথা ভেবে রেখেছিলেন পন্থ? ভারতীয় ব্যাটার জানিয়েছেন, তিনটে পরিকল্পনা ছিল তাঁর মাথায়। পন্থ বলেন, “তিনটে সেলিব্রেশন ভেবে রেখেছিলাম। একটা, চোখের উপর ডান হাত রেখে। আর একটা, হাতের ইশারায় বুঝিয়ে যে ব্যাটেই সব জবাব দিলাম। কিন্তু শেষে মনে হল, ডিগবাজি খেয়েই সেলিব্রেট করব।”

পন্থ আরও জানিয়েছেন, যে ছোট থেকে ডিগবাজি মেরে তাঁর অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। তাই এই ধরনের উল্লাসের জন্য বেশি পরিশ্রম করতে হয় না তাঁকে। পন্থ বলেন, “ছোট থেকে স্কুলে জিমন্যাস্টিক করেছি। তাই এটা অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। ঘুম থেকে উঠেও ডিগবাজি মারতে পারি। তাই এটা আমার কাছে সহজ।”

অথচ তিন মাস আগে আইপিএলে খারাপ ফর্মে ছিলেন পন্থ। ব্যাটে রান ছিল না। একের পর এক ম্যাচ বাজে শট খেলে আউট হচ্ছিলেন। লাল বলের ক্রিকেটে ফিরে প্রথম ইনিংসেই শতরান করেছেন। নিজের মানসিকতায় কী কী বদল করেছেন তিনি? জবাবে পন্থ বলেন, “ঠিক করেছি কয়েকটা শট টেস্টে খেলব না। ‘ভি’ (মিড অন থেকে মিড অফ) -এর মধ্যে খেলার চেষ্টা করব। এই ইনিংসে দেখলে বুঝবে, বাইরের বলে শট মারিনি। চেষ্টা করেছি সামনের দিকে খেলার।”

বোলারের মগজের সঙ্গে লড়াই করেন পন্থ। তাঁকে চাপে রাখার চেষ্টা করেন। সেই পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন তিনি। পন্থ বলেন, “বোলারের মগজ বোঝার চেষ্টা করি। ও কী ভাবছে সেটা আন্দাজ করি। পাশাপাশি বোলারের উপর চাপ দেওয়াটাও জরুরি। ও যেন ভাবে, আমি যে কোনও বলে শট মারতে পারি। বোলারের মগজের সঙ্গে খেলি। ওর লেংথ খারাপ করার চেষ্টা করি। বল যদি ভাল জায়গায় থাকে তা হলে খুব বেশি কিছু করার চেষ্টা করি না। বোলারের লেংথ খারাপ হলে মারার চেষ্টা করি।”

হেডিংলেতে প্রথম ইনিংসে শতরানের পর মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে ছাপিয়ে গিয়েছেন পন্থ। টেস্টে সাত নম্বর শতরান করেছেন তিনি। ধোনির রয়েছে ছ’টা। ভারতের উইকেটরক্ষকদের মধ্যে টেস্টে সবচেয়ে বেশি শতরানের মালিক হয়েছেন পন্থ।

Rishabh Pant Sunil Gavaskar India vs England 2025
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy