রাহুল দ্রাবিড়-উত্তর ক্রিকেটে ভারতের ‘ওয়াল’ বলা হত তাঁকে। এক বার ব্যাট করতে নামলে তাঁকে আউট করতে হিমশিম খেতেন বোলারেরা। সেটা শুধু ভারতের সিনিয়র দলে খেলার সময় নয়, বয়সভিত্তিক ক্রিকেটেও। চেতেশ্বর পুজারাকে আউট করতে সমস্যায় পড়তেন রোহিত শর্মারা। সেই হতাশা তাঁর চোখে-মুখে দেখা যেত। তাঁর মা তাঁকে জিজ্ঞাসা করতেন যে কী হয়েছে? তখনই মায়ের কাছে নিজের হতাশা প্রকাশ করতেন রোহিত। ২৪ বছর পুরনো সেই কথা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন ৩৮-এর রোহিত।
সৌরাষ্ট্রের হয়ে খেলতেন পুজারা। রোহিত খেলতেন মুম্বইয়ের হয়ে। একই সময়ে কেরিয়ার শুরু তাঁদের। পুজারার স্ত্রী পূজা একটা বইপ্রকাশ করেছেন। নাম ‘দ্য ডায়রি অফ এ ক্রিকেটার্স ওয়াইফ’। বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানে ছিলেন সস্ত্রীক রোহিত। সেখানেই তাঁদের পুরনো দিনের কথা ভাগ করে নিয়েছেন তিনি। রোহিত বলেন, “আমার এখনও মনে আছে, সৌরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে খেলার আগে আমরা একজনকে নিয়েই ভাবতাম। আমাদের পরিকল্পনা হত যে পুজারাকে কী ভাবে আউট করা যাবে। কারণ, ওকে আউট করতে না পারলে ম্যাচ হেরে যাব।”
রোহিত জানিয়েছেন, পুজারা তাঁদের সারা দিন ফিল্ডিং করতে বাধ্য করতেন। তার প্রভাব তাঁদের শরীরের উপর পড়ত। ধকল দেখা যেত চোখে-মুখে। রোহিত বলেন, “আমার মনে আছে, যখন মাঠ থেকে বাড়ি ফিরতাম, আমার চোখ-মুখের রং বদলে যেত। তখন ১৪ বছর বয়স। মা জিজ্ঞাসা করত, কী হয়েছে? বলতাম, মা, আমি কী করব? চেতেশ্বর পুজারা নামের এক ব্যাটার আছে। ও তিন দিন ধরে ব্যাট করে। তাই সারা দিন আমাদের ফিল্ডিং করতে হয়।”
আরও পড়ুন:
ভারতের হয়ে লাল বলের ক্রিকেটে পুজারা বড় নাম। ১০৩টে টেস্ট খেলেছেন তিনি। কেরিয়ারের শুরুতে দুটো হাঁটুতেই অস্ত্রোপচার হয়েছিল পুজারার। তার পরেও ভারতের হয়ে ১৩ বছর ধরে ক্রিকেট খেলা যে সহজ কথা নয় তার জন্য কুর্নিশ জানিয়েছেন রোহিত। তিনি বলেন, “ওর বড় চোট লেগেছিল। দুটো হাঁটুতেই এসিএল ছিঁড়ে গিয়েছিল। কোনও ক্রিকেটার বা অন্য কোনও খেলার সঙ্গে যুক্ত কারও কাছে এটা খুব বাজে চোট। তার পরেও ও এত বছর খেলেছে। এটা মুখের কথা নয়।”
ভারতের হয়ে ২০১০ সালে টেস্ট অভিষেক হয় পুজারার। ১০৩টে টেস্টে ৭১৯৫ রান করেছেন তিনি। ১৯টা শতরান ও ৩৫টা অর্ধশতরান করেছেন পুজারা। টেস্টে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি বল খেলার রেকর্ড তাঁর রয়েছে। কিন্তু পুজারার মন্থর খেলার ধরন তাঁর বিপক্ষে গিয়েছে। ২০২৩ সালের পর থেকে আর ভারতের টেস্ট দলে জায়গা পাননি তিনি। অবশ্য এখনও অবসর নেননি পুজারা।