এক পক্ষ তাঁর পিঠ চাপড়ে দিচ্ছে। অন্য পক্ষ আবার তাঁর খেলা নিয়েই প্রশ্ন তুলছে। পুণেয় প্রথম একাদশে না থাকার পরেও খেললেন হর্ষিত রানা। কনকাশন পরিবর্ত হিসাবে অভিষেক হল তাঁর। শুধু খেললেন না, দলকে জেতালেন হর্ষিত। কিন্তু তার পরেও বিতর্ক পিছু ছাড়ল না তাঁর খেলা নিয়ে।
প্রথম ইনিংসের শেষ ওভারে হেলমেটে বল লাগে শিবম দুবের। ক্রিকেটের নতুন নিয়মে মাথায় বল লাগলে কোনও ক্রিকেটারকে নিয়ে ঝুঁকি নেওয়া যায় না। দরকার পড়লে তাঁর বদলে অন্য ক্রিকেটার নামতে পারেন। কিন্তু যে ক্রিকেটারের চোট লেগেছে তাঁর যথোপযুক্ত পরিবর্ত নামাতে হবে। অর্থাৎ, ব্যাটারের বদলে ব্যাটার, বোলারের বদলে বোলার বা অলরাউন্ডারের বদলে অলরাউন্ডার নামানো যাবে। ইংল্যান্ডের আপত্তি ঠিক এই জায়গাতেই। আইসিসির নিয়মের ১.২.৭.৩ ধারা অনুযায়ী, “ম্যাচ রেফারি কনকাশন সাব এর পরিবর্ত হিসেবে একই প্রকারের ক্রিকেটারকে নামানোরই অনুমতি দেয়। যাতে বিপক্ষ দল অতিরিক্ত সুবিধা না পায়।”
শিবম পেসার-অলরাউন্ডার। তাঁর পরিবর্তে কোনও পেসার-অলরাউন্ডারকে নামানো যেত। সেই তালিকায় ছিলেন রমনদীপ সিংহ। কিন্তু যে হেতু শিবম পেসার, সেই যুক্তিতেই নামানো হয় হর্ষিতকে। এই সিদ্ধান্ত মানতে পারেনি ইংল্যান্ড। অধিনায়ক জস বাটলারকে দেখে বোঝা যায়, কতটা বিরক্ত তিনি। এই বিষয়ে বিতর্ক বেড়েছে বাটলারের মন্তব্যে। তিনি বলেন, “এই পরিবর্ত মোটেই উপযুক্ত নয়। কেন এক জন অলরাউন্ডারের পরিবর্তে জোরে বোলার নামবে? হয় শিবমকে বলের গতি ঘণ্টায় আরও ২৫ কিলোমিটার বাড়াতে হতো নয়তো হর্ষিতকে ব্যাটিংয়ে আরও উন্নতি করতে হত।” আরও যোগ করেন, “এখনও ‘পরিবর্ত’-এর সিদ্ধান্ত নিয়ে খুশি হতে পারছি না।”
আরও পড়ুন:
বিতর্ক হলেও হর্ষিতের পারফরম্যান্স নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠছে না। প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই লিয়াম লিভিংস্টোনকে আউট করেন তিনি। পরের ওভারে ১৮ রান দিলেও ভয় পাননি। ডেথ ওভারে আরও দুই ওভার বল করেন হর্ষিত। জেকব বেথেল ও জেমি ওভারটনকে আউট করে ইংল্যান্ডের সব আশা শেষ করে দেন তিনি।
শিবমের চোট পরীক্ষা করার পরে তাঁর পরিবর্ত নামানোর সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। হর্ষিতও তখনই বিষয়টি জানতে পেরেছিলেন। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, “সত্যিই স্বপ্নের অভিষেক হল। শিবম ভাই ফেরার দু’ওভার পরে আমাকে গৌতি ভাই বলে যে আমি খেলব। আমি মানসিক ভাবে তৈরি ছিলাম। তাই খেলতে কোনও সমস্যা হয়নি।”
সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন হর্ষিত। তাঁর কেকেআরে খেলার অভিজ্ঞতা তাঁকে সাহায্য করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। হর্ষিত বলেন, “আইপিএলে কেকেআরের হয়ে ডেথ ওভারে অনেক বল করেছি। জানি, কোন পরিস্থিতিতে কী ভাবে বল করতে হয়। একটা সুযোগের অপেক্ষা করছিলম। নিজেকে প্রমাণ করার ছিল। আইপিএলে যে ভাবে বল করি সেটাই করার চেষ্টা করেছি। সফল হয়েছি।”
হর্ষিতের বলের প্রশংসা করেছেন ইংরেজ ধারাভাষ্যকার কেভিন পিটারসেন। কিন্তু তাঁর প্রশ্ন, কোন যুক্তিতে শিবমের পরিবর্ত হলেন হর্ষিত। শিবম অলরাউন্ডার। সেখানে হর্ষিত বিশেষজ্ঞ পেসার। তাই তিনি যে ভাল বল করবেন সেটাই স্বাভাবিক। হর্ষিত খেলায় তাঁকে দিয়ে চার ওভার বল করানোর সুযোগ পেলেন সূর্য। তিনি না থাকলে সেই কাজটা হার্দিক পাণ্ড্য বা অক্ষর পটেলকে করতে হত। তা হলে হয়তো ম্যাচ হারতে হত ভারতকে। তাই সন্তুষ্ট হতে পারছে না ইংল্যান্ড শিবির।