Advertisement
E-Paper

ক্রিকেট শিখতে যাওয়ার টাকা ছিল না ইলেকট্রিক মিস্ত্রির ছেলের, দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান চোট সারিয়ে ফেরা তিলকের

দেশের হয়ে ২২টি সাদা বলের ম্যাচ খেলেও শতরান করতে পারেননি তিলক। আইপিএলেও কোনও শতরান নেই। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ১০৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে আক্ষেপ মেটালেন তিলক।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৪ ২২:৫১
Picture of Tilak Varma

তিলক বর্মা। ছবি: এএফপি।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম শতরান তিলক বর্মার। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ১০৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেললেন। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স কেন ধরে রেখেছে, তা জাতীয় দলের জার্সি গায়ে বুঝিয়ে দিলেন ২২ বছরের তরুণ ব্যাটার। অথচ একটা সময় ক্রিকেট শিখতে যাওয়ার টাকাও ছিল না তাঁর কাছে।

তিলক চোট সারিয়ে মাঠে ফিরেছেন কিছু দিন আগে। তার পর এই শতরান আলাদা তৃপ্তি দিয়েছে তরুণ ব্যাটারকে। ভারতীয় দলের ইনিংস শেষ হওয়ার পর তিলক বলেছেন, ‘‘এই মুহূর্তটার জন্য দীর্ঘ দিন অপেক্ষা করেছি। চোট সারিয়ে ফেরার পর শতরান করতে পেরে দারুণ লাগছে। শুরুতে পিচ একটু চ্যালেঞ্জিং ছিল। পিচে দু’রকম গতি ছিল। পরে অবশ্য কিছুটা সহজ হয়ে গিয়েছে। বাড়তি কিছু করার চেষ্টা করিনি। লক্ষ্যে স্থির থাকার চেষ্টা করেছি। আমি এবং অভিষেক শর্মা দু’জনেই চাপে ছিলাম একটা সময় পর্যন্ত। অভিষেকও খুব ভাল ব্যাট করেছে। আমার চাপ কমিয়ে দিয়েছে।’’

ভারতীয় ক্রিকেটে হায়দরাবাদের ব্যাটারদের আলাদা কদর রয়েছে। মহম্মদ আজহারউদ্দিন, ভিভিএস লক্ষ্ণণদের সেই ধারাই বয়ে নিয়ে চলেছেন তিলক। দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতীয় কোচ হিসাবে গিয়েছেন লক্ষ্ণণ। তাঁর সামনেই প্রথম আন্তর্জাতিক শতরান করলেন তিলক। একটি রেকর্ডও গড়েছেন তিলক। সর্বকনিষ্ঠ ব্যাটার হিসাবে টি-টোয়েন্টির ক্রমতালিকায় প্রথম ১০-এ থাকা কোনও দলের বিরুদ্ধে শতরান করেছেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ২২ বছর ৫ দিন বয়সে তিনি এই কীর্তি করেছেন। আগে এই রেকর্ড ছিল পাকিস্তানের আহমেদ শেহজ়াদের। ২০১৪ সালে ২২ বছর ১২৭ দিন বয়সে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শতরান করেছিলেন তিনি। সেই রেকর্ড ভাঙলেন তিলক।

তিলকের বাবা নাম্বুরি নাগারাজু ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। মা গায়ত্রী দেবী গৃহবধূ। টানাটানির সংসারে কষ্ট করে ছেলেকে ক্রিকেটার তৈরি করেছেন তাঁরা। তাঁদের সেই কষ্টের প্রতিদান দিচ্ছে তিলকের ব্যাট। গত কয়েক বছর ধরে দেশের তরুণ ক্রিকেটারদের মধ্যে প্রথম সারিতে জায়গা করে নেওয়া তিলকের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ২০২৩ সালের ৩ অগস্ট। ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট দিয়ে শুরু। সেই ২০ ওভারের ক্রিকেটেই প্রথম শতরান পেলেন তিলক।

১১ বছরের তিলকের টেনিস বলের ক্রিকেটে ব্যাটিং দেখে সম্ভাবনা দেখেছিলেন তাঁর কোচ সালিম বায়াশ। তিনিই তিলককে নিয়ে যান নিজের লিগালা ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে। সেই থেকে শুরু তিলকের প্রথাগত ক্রিকেট সাধনা। বাড়ি থেকে অ্যাকাডেমির দূরত্ব ছিল ৪০ কিলোমিটার। সেই পথ প্রতি দিন যাওয়ার মতো সামর্থ্য ছিল না বর্মা পরিবারের। সালিমই সেই দায়িত্ব নেন। নিজের স্কুটারে প্রতি দিন তিলককে নিয়ে যেতেন, আবার প্রশিক্ষণ শেষে বাড়ি পৌঁছে দিতেন।

২০১৮-১৯ মরসুমে হায়দরাবাদের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয় তিলকের। তার পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। আইপিএলে মুম্বইয়ের হয়ে নজর কাড়ার পর সুযোগ পান ভারতীয় দলে। বুধবারের আগে পর্যন্ত দেশের হয়ে চারটি এক দিনের ম্যাচ এবং ১৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন তিলক। তিনটি অর্ধশতরান থাকলেও শতরান করতে পারেননি এত দিন। সেই আক্ষেপ মিটিয়ে নিলেন সেঞ্চুরিয়নের ২২ গজে। ৫৬ বলে ১০৭ রানের অপরাজিত ইনিংস সাজালেন ৮টি চার এবং ৭টি ছয় দিয়ে। তাঁর আগ্রাসী ইনিংসে ভর করে ভারত তুলল ৬ উইকেটে ২১৯ রান।

আইপিএলে মুম্বইয়ের হয়ে ৩৮টি ম্যাচ খেলে ১১৫৬ রান করেছেন তিলক। সেখানেও তাঁর কোনও শতরান নেই। অর্ধশতরান রয়েছে ছ’টি। সর্বোচ্চ অপরাজিত ৮৪।

India vs South Africa Tilak Varma T20I century
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy