শুধু অধিনায়ক নন, কলকাতা নাইট রাইডার্স এ বারের আইপিএলে গুরুত্ব দেবে সহ-অধিনায়ককেও। বুধবারের একটি অনুষ্ঠানে সেটাই স্পষ্ট করে দিল তারা। সমর্থকদের জন্য যে ভাবে একসঙ্গে ট্রফি নিয়ে এলেন অজিঙ্ক রাহানে এবং বেঙ্কটেশ আয়ার, শুরুটা সেখানেই। এর পর অনুষ্ঠান যত এগিয়েছে, ততই সেটা স্পষ্ট হয়েছে।
সাধারণত ক্রিকেটের কোনও অনুষ্ঠানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় অধিনায়ককে। বুধবার যেমন গুজরাত টাইটান্সের সাংবাদিক বৈঠকে ক্রিকেটারদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন একা অধিনায়ক শুভমন গিল। কেকেআরের ক্ষেত্রে কিন্তু তা হয়নি। গত বৃহস্পতিবার নাইটদের সাংবাদিক বৈঠকে ক্রিকেটারদের মধ্যে যেমন অধিনায়ক রাহানে ছিলেন, তেমনই ছিলেন সহ-অধিনায়ক বেঙ্কটেশ। বুধবার যেমন তাঁরা একসঙ্গে ট্রফি ধরে নিয়ে এলেন।
এ বারের আইপিএলে কেকেআরের অধিনায়ক রাহানে। যা সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে তাঁর ব্যাটে রান এবং মুম্বইকে অধিনায়ক হিসাবে ট্রফি জেতানোর পুরস্কার বলে মনে করা হচ্ছে। মাত্র দেড় কোটি টাকায় রাহানেকে কিনেছিল কেকেআর। কিন্তু নিলামের টেবিল থেকেই অধিনায়ক হিসাবে এক জনের নাম চর্চায় চলে এসেছিল। ২৩ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকায় বেঙ্কটেশকে কিনেছিল কলকাতা। সবচেয়ে বেশি দাম পাওয়া ক্রিকেটারকেই অধিনায়ক করা হবে বলে মনে করা হচ্ছিল। বেঙ্কটেশ নিজেও একাধিক বার বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে, তিনি অধিনায়ক হতে তৈরি। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বার বার বলেছিলেন যে, তাঁর অধিনায়ক হতে আপত্তি নেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সহ-অধিনায়ক করে রাখা হয় তাঁকে। আর অধিনায়কের দায়িত্ব যায় রাহানের হাতে। যদিও গুরুত্ব বেড়ে গিয়েছে কেকেআরের সবচেয়ে দামি ক্রিকেটারের।
আরও পড়ুন:
বুধবার কেকেআরের ওই অনুষ্ঠানে ছিল আলোচনাসভা। সেখানে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন দলের সিইও বেঙ্কি মাইসোর, কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত, মেন্টর ডোয়েন ব্র্যাভো, অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানে এবং সহ-অধিনায়ক বেঙ্কটেশ আয়ার। সাধারণত এই ধরনের আলোচনাসভায় সহ-অধিনায়ক ডাক পান না। কিন্তু কেকেআরের এই মরসুমে সুরটা একটু আলাদা। এখানে রাহানে যেমন গুরুত্ব পাচ্ছেন, তেমনই পাচ্ছেন বেঙ্কটেশ। প্রায় সমান-সমান গুরুত্ব। এক প্রকার বুঝিয়ে দেওয়া হল, রাহানের হাতে দলের রাশ থাকতেই পারে, কিন্তু বেঙ্কটেশের কথাও উড়িয়ে দেওয়া যাবে না।
আলোচনাসভায় প্রথম প্রশ্নটি সঞ্চালক করলেন বেঙ্কটেশকেই। গত বার কলকাতাকে আইপিএল জেতানো অলরাউন্ডার বলেন, “কেকেআর আমাকে ক্রিকেট কেরিয়ারে সবচেয়ে বড় সুযোগটা দিয়েছে। এই দলের সাজঘরে যেমন আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইনের মতো কিংবদন্তিরা রয়েছে, তেমনই রয়েছে রিঙ্কু সিংহদের মতো তরুণেরা। এই ভারসাম্য দলকে আলাদা মাত্রা দেয়। রিঙ্কু সাজঘরের আবহাওয়া পাল্টে দিতে পারে। সকলকে সবসময় আনন্দে রাখে। আমরা সকলে ক্রিকেটটা উপভোগ করে খেলি। আমরা এই বছরও ট্রফি জেতার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।”
দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিল রাহানের কাছে। তিনি বলেন, “খুব ভাল দল হয়েছে এ বারে আমাদের। সকলে এক রকম চিন্তাভাবনা করছে দেখে ভাল লাগছে। ইডেনে খেলতে পছন্দ করি। দর্শকদের সামনে নামার জন্য অপেক্ষা করছি।”
কেকেআরের নতুন মেন্টর ব্র্যাভো দলের লক্ষ্য স্থির করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “সাফল্য পাওয়ার একমাত্র রাস্তা হল খেলাটাকে ভালবাসা। দলের ক্রিকেটারেরা ট্রফি জিততে জানে। এ বার ট্রফি ধরে রাখার চেষ্টা করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য পর পর দু’বছর ট্রফি জয়। আমি এই দলের মধ্যে চ্যাম্পিয়নের মানসিকতা আনতে চাই।”
কেকেআরের সমস্ত খেলোয়াড় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে রিঙ্কু, বরুণ চক্রবর্তী এবং হর্ষিত রানাকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ ছিল সমর্থকদের মধ্যে। সেই সমর্থকদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য ব্র্যাভো তাঁর ‘চ্যাম্পিয়ন’ গানটি পরিবেশন করেন।
সেই অনুষ্ঠানে ফিরল কেকেআরের কালো, সোনালি জার্সিও। সমর্থকদের জন্য এই জার্সি ফিরিয়ে এনেছে কলকাতা। ইডেনে সমর্থকদের এই কালো, সোনালি জার্সি পরে দেখা যেতে পারে।