ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে সাধারণত যে পিচ দেখা যায়, বুধবার মুম্বই-দিল্লি ম্যাচে তা ছিল না। টসের সময়ই দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়ক ফাফ ডু’প্লেসি জানিয়েছিলেন, পিচ দেখে শুকনো মনে হচ্ছে। খেলা যত গড়াল তত মন্থর হল পিচ। এই পিচে সহজে হাত খোলা মুশকিল। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ব্যাটারদের দেখে সেটা বোঝা গেল। কিন্তু সূর্যকুমার যাদবকে কেন টি-টোয়েন্টির অন্যতম সেরা ব্যাটার বলা হয় সেটা দেখালেন তিনি। যে পিচে বাকিরা সমস্যায় পড়লেন সেই পিচেই ঝোড়ো ইনিংস খেললেন সূর্য। দলকে একাই টানলেন সূর্যকুমার। অর্ধশতরান করলেন তিনি। প্রথমে ব্যাট করে দিল্লি ক্যাপিটালসের সামনে ১৮১ রানের লক্ষ্য দিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স।
এই ধরনের পিচে পাওয়ার প্লে রান তোলার সেরা সময়। কারণ, বল তখন শক্ত থাকে। পাশাপাশি ন’জন ফিল্ডার ৩০ গজ বৃত্তের ভিতরে থাকেন। মুম্বই সেই চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তৃতীয় ওভারে রোহিত শর্মাকে আউট করে মুম্বইকে ধাক্কা দিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। ৫ রানে আউট হন তিনি। মুস্তাফিজুর রোহিতের অফ স্টাম্পের একটু বাইরে বল করেন। বল পিচে পড়ে আরও বাইরের দিকে যায়। রোহিতের পা নড়েনি। এক জায়গায় দাঁড়িয়ে শট মারতে যান তিনি। বল ব্যাটের কানায় লেগে পিছনে যায়। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে ভাল ক্যাচ ধরেন উইকেটরক্ষক অভিষেক পোড়েল।
দ্বিতীয় উইকেটে রায়ান রিকেলটন ও উইল জ্যাকস ভাল খেলছিলেন। পাওয়ার প্লে ব্যবহার করে বড় শট মারছিলেন তাঁরা। কিন্তু বেশি ক্ষণ সেই জুটি চলল না। ২১ রানের মাথায় জ্যাকসকে আউট করলেন মুকেশ কুমার। কুলদীপ যাদব ও বিপরাজ নিগম বল করতে আসার পর আরও সমস্যায় পড়লেন মুম্বইয়ের ব্যাটারেরা। ২৫ রান করে কুলদীপের বলে আউট হলেন রিকেলটন।
আরও পড়ুন:
স্পিনারদের বল পিচে পড়ে ঘুরছিল। উইকেট থেকে সুবিধা পাওয়ায় দিল্লির দুই স্পিনার বলের গতি কম রাখেন। ফলে বড় শট মারতে আরও সমস্যা হল। সূর্যকুমার যাদব ও তিলক বর্মা ৫৫ রানের জুটি বাঁধলেও রান তোলার গতি কম ছিল। কখনওই মুম্বইকে দেখে মনে হয়নি ১৮০ বা ২০০ রান করার চেষ্টা করছে তারা। মনে হচ্ছিল, ১৬০ রান লক্ষ্য করে এগোচ্ছেন দুই ব্যাটার।
ডেথ ওভারে হাত খোলার চেষ্টা করেন দুই ব্যাটার। কিন্তু মুকেশের বলে ২৭ রান করে ফেরেন তিলক। রান পাননি অধিনায়ক হার্দিক পাণ্ড্য। ৩ রান করেন তিনি। দিল্লির বোলারেরাও বুদ্ধি করে বল করছিলেন। গতির হেরফের করছিলেন তাঁরা। তার মাঝেই অন্য রকমের ইনিংস খেললেন সূর্য। সব বলে বড় শট মারার চেষ্টা করলেন না। ধৈর্য ধরে খেললেন। অপেক্ষা করলেন খারাপ বলের। এই মন্থর পিচেও ৩৬ বলে অর্ধশতরান করলেন তিনি।
মুম্বই অপেক্ষা করছিল একটা খারাপ ওভারের। মুকেশের ১৯তম ওভারকে নিশানা করলেন সূর্য ও নমন ধীর। সেই ওভারে ২৭ রান তুলল মুম্বই। একটা ওভারই খেলার গতি বদলে দিল। শেষ ওভারে ২১ রান দিলেন চামিরা। দু’ওভারে হল ৪৮ রান। সূর্যদের আক্রমণের সামনে নিজেদের লেংথ হারিয়ে ফেললেন মুকেশ ও চামিরা। ফলে যেখানে মনে হচ্ছিল ১৬০ রান করতে সমস্যা হবে মুম্বইয়ের সেখানে তারা করল ১৮০ রান। সূর্য ৪৩ বলে ৭৩ রান করে অপরাজিত থাকলেন। তাঁকে সঙ্গ দিলেন নমন। ৮ বলে ২৪ রান করলেন তিনি। ওয়াংখেড়ের এই পিচে মুম্বইয়ের বোলারদের খেলা কিন্তু সহজ হবে না দিল্লির ব্যাটারদের পক্ষে। তাঁদের সামনে কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে।