প্রতি ম্যাচেই অবিশ্বাস্য ক্যাচ নেওয়াটা অভ্যাস করে ফেলেছেন গ্লেন ফিলিপ্স। একের পর এক ম্যাচে কঠিন ক্যাচ ধরছেন ফিলিপ্স। বিশ্বের অন্যতম সেরা ফিল্ডার এখন তিনিই। সেরা বললেও অত্যুক্তি করা হবে না।
রবিবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ফিলিপ্সই তুলে নিলেন শুভমন গিলের উইকেট। শর্ট এক্সট্রা কভারে দাঁড়িয়েছিলেন ফিলিপ্স। সেই দিকেই মিচেল স্যান্টনারের বলে সপাটে মারেন শুভমন। ওটা যে ক্যাচ হতে পারে, তা কেউই ভাবতে পারেননি। কিন্তু নিখুঁত সময়ে ঝাঁপ মারেন ফিলিপ্স। অনেকে হয়তো তাঁর জায়গায় থাকলে ক্যাচ ধরার চেষ্টাই করবেন না। ফিলিপ্স সেখানে ক্যাচটি ধরলেন। এক, দু’বার এমন ক্যাচ ধরলে বলা হতে পারে যে, কোনও ভাবে হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ফিলিপ্স প্রতি ম্যাচেই এমন ক্যাচ নিচ্ছেন। এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ক্যাচ ধরার ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ সফল তিনি।
গত বছর নভেম্বরে একটি ক্যাচ নিয়ে শিরোনামে উঠে এসেছিলেন ফিলিপ্স। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটি টেস্ট ম্যাচে অলি পোপের ক্যাচ ধরেছিলেন তিনি। গালিতে ডান দিকে ঝাঁপিয়ে তাঁর নেওয়া সেই ক্যাচের পর তুলনা শুরু হয়ে গিয়েছিল জন্টি রোডসের সঙ্গে। ক্যাচ ধরার দক্ষতার জন্য সতীর্থেরা ফিলিপ্সকে ডাকেন ‘বাজপাখি’ বলে। তিনি যে সত্যিই সতীর্থদের দেওয়া নামের যোগ্য, তা আরও এক বার বুঝিয়ে দিলেন।
আরও পড়ুন:
২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ক্যাচ ধরে চর্চায় উঠে এসেছিল ফিলিপ্সের নাম। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের তখন নবম ওভার চলছে। ব্যাট করছিলেন মার্কাস স্টোইনিস। মিচেল স্যান্টনারের দ্বিতীয় বলে অফ সাইডের দিকে বল আকাশে তুলে দিয়েছিলেন অজ়ি অলরাউন্ডার। ডিপ কভার থেকে অনেকটা দৌড়ে এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে দু’হাতে বল তালুবন্দি করেছিলেন ফিলিপ্স।
গত রবিবার নিয়েছিলেন কোহলির ক্যাচ। প্রায় একই রকম ক্যাচ নিতে তাঁকে দেখা গিয়েছিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। মহম্মদ রিজ়ওয়ান আপারকাট মেরেছিলেন। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ছিলেন ফিলিপ্স। সে দিন বলটি তাঁর বাঁ দিক দিয়ে যাচ্ছিল। ফিলিপ্স ঝাঁপ দিয়েছিলেন সে দিকে। এক হাতে ক্যাচ ধরে নেন অনায়াসে। কোহলির ক্যাচটি ছিল ডান দিকে।
গত রবিবার দুবাই স্টেডিয়ামে সপ্তম ওভারটি করছিলেন ম্যাট হেনরি। তিনি ফাইনালে চোটের কারণে খেলতে পারছেন না। তাঁর চতুর্থ বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে ছিল। কোহলি সপাটে ব্যাট চালান। ফিলিপ্স বাদ দিয়ে অন্য কেউ থাকলে হয়তো বল বাউন্ডারিতে চলে যেত। পয়েন্টে ফিল্ডিং করছিলেন তিনি। ফিলিপ্সের ডান দিকে বল ছিল। বল লক্ষ্য করে হাত বাড়িয়ে লাফ মারেন ফিলিপ্স। বল তালুবন্দি করার সময় তাঁর পা মাটি ছেড়ে উঠছে। প্রায় হাওয়ায় ভাসিয়ে দিলেন শরীর। কোহলির ব্যাটে বল লাগার পর মাত্র ০.৬৮ সেকেন্ডের মধ্যে বল ফিলিপ্সের কাছে আসে। তিনি যে জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিলেন, বলটি ধরলেন তার থেকে একটু পিছনে। খুব সহজ ছিল না ক্যাচটা। কিন্তু ফিলিপ্স থাকলে সব ক্যাচই সহজ।