কলকাতা উপভোগ করছেন পাকিস্তান ক্রিকেটাররা। ছবি: সংগৃহীত।
বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে যাওয়ার আশা শেষ তাঁর দলের। শোয়েব আখতার, ওয়াসিম আক্রমদের মতো প্রাক্তনীরা তাঁর ছন্দ এবং নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেই চলেছেন। বিশ্বকাপে এটাই পাকিস্তানের সব চেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স কি না, উঠছে সেই প্রশ্নও। এতটা চাপের মধ্যে দলের অধিনায়কের অবস্থা কী রকম হতে পারে, তা আন্দাজ করতে খুব মাথা ঘামানোর প্রয়োজন পড়ে না। রবিবার টিম হোটেলে গিয়ে দেখা গেল, পাক অধিনায়ক বাবর আজ়ম ও মহম্মদ রিজ়ওয়ান বিকেলের দিকে এক ঘণ্টা সময় কাটালেন সুইমিং পুলে। জলে শরীর ডুবিয়ে আলোচনা করে গেলেন নিজেদের মধ্যে।
বাইপাসের ধারে কলকাতার সেই পাঁচতারা হোটেলের কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, শহরে পা রাখার পর থেকে দলের কারও সঙ্গেই সে ভাবে কথা বলছিলেন না বাবর। এমনকি সুইমিং পুলেও এসেছিলেন একাই। রিজ়ওয়ান এসে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন। সাঁতার পর্ব শেষ করেই উপস্থিত পুলিশকর্মীদের লং ড্রাইভে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন পাক অধিনায়ক। নিরাপত্তার ঘেরাটোপে থাকা বাবরকে নিয়ে বেশি দূরে যাওয়ার ঝুঁকি নিতে চাননি কেউই। শুরুতে বাবরকে পরামর্শ দেওয়া হয়, সায়েন্স সিটিতে পায়চারি করার। পাক অধিনায়ক জানতে পারেন, তাঁরা যে হোটেলে আছেন, তার পাশেই রয়েছে সেই পার্ক। বাবর ফের জানতে চান, সামান্য দূরে যাওয়া সম্ভব কি না। পুলিশকর্মীরা তার পরে সিদ্ধান্ত নেন তাঁকে নিউ টাউনের ইকো পার্কে নিয়ে যাওয়ার। তাতে সামান্য ঘোরাও হবে। ইকো পার্কের সৌন্দর্যও উপভোগ করতে পারবেন। রাত আটটা নাগাদ ইমাম-উল-হককে সঙ্গে নিয়ে বাবর ঘুরে আসেন ইকো পার্ক।
সাত বছর পরে কলকাতায় পা রেখেছে পাকিস্তান। বাবরদের আপ্যায়নে বিন্দুমাত্র ত্রুটি রাখতে চায়নি কলকাতা পুলিশ। হায়দরাবাদের মতো তেমন কড়াকড়ি নেই। ক্রিকেটারেরা যাতে এই শহর উপভোগও করতে পারেন, সেই দিকটাও দেখা হচ্ছে।
রবিবার দুপুরেই যেমন বান্ধবী ও পরিবারের সদস্যদের জন্য গয়না কিনতে ক্যামাক স্ট্রিটের অলঙ্কারের দোকানে গিয়েছিলেন আবদুল্লা শফিক ও সৌদ শাকিল। যদিও সকালের দিকে কলকাতার একটি জনপ্রিয় শপিং মল ঘুরে দেখার অনুমতি খারিজ হয় শাদাব খান ও ইফতিখার আহমেদের। কারণ, এই শহরে ক্রিকেটপ্রেমীর অভাব নেই। ছুটির দিনে এমনিতেই শপিং মলে ভিড় উপচে পড়ে। তাই শাদাবদের সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
ইফতিখার যদিও তাতে হতাশ নন। হোটেলের লবিতে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘অসাধারণ লাগছে এই শহর। সকলের ব্যবহার খুব ভাল।’’
পাক ক্রিকেটারদের খাবার যেই শেফ বানিয়ে দিচ্ছেন, তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, কলকাতায় এসে এখনও বিরিয়ানি ছুঁয়েও দেখেননি পাক ক্রিকেটারেরা। ব্রেকফাস্টে ডিম-সহ প্রোটিনযুক্ত ডায়েট চলছে তাঁদের। লাঞ্চ ও ডিনারে মেডিটারেনিয়ান কাবাবে মজে উঠেছেন তাঁরা। মেনুতে নেই বিরিয়ানি। পাক দলের ভিডিয়োগ্রাফার অমর আহসান বলছিলেন, ‘‘আপনারা এত লেখালেখি করেছেন যে, এখন বিরিয়ানির সামনে যেতেই সকলে ভয় পাচ্ছে। জিতলে দেখা যাবে।’’
ইডেনে ম্যাচ দেখার জন্য রবিবারই কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছেন হাসান আলির স্ত্রী ও কন্যা। বিশ্বকাপের এই মুহূর্তের ছবিটা দেখলে মনে হবে মঙ্গলবার পাকিস্তান বনাম বাংলাদেশ ম্যাচের কোনও গুরুত্ব নেই। কিন্তু দু’দেশের সম্পর্কের বিচারে এই ম্যাচকে কেন্দ্র করে বাড়ছে উত্তেজনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy