৪১ বছরে প্রথম বার এশিয়া কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হতে চলেছে ভারত ও পাকিস্তান। চলতি এশিয়া কাপে তৃতীয় বার মুখোমুখি হবে দু’দল। বৃহস্পতিবারের পাকিস্তান-বাংলাদেশ ম্যাচ ছিল সেমিফাইনাল। সেই ম্যাচে বাংলাদেশকে ১১ রানে হারাল পাকিস্তান। ব্যাটিং ব্যর্থতার খেসারত দিতে হল বাংলাদেশকে। রবিবার এশিয়ার সেরা হওয়ার লড়াইয়ে সূর্যকুমার যাদবদের বিরুদ্ধে খেলতে নামবেন সলমন আলি আঘারা।
দুবাইয়ের মাঠে পর পর দু’দিন ম্যাচ খেলতে হল বাংলাদেশকে। পর পর ম্যাচ খেলার ধকল পড়ল ক্রিকেটারদের শরীরে। পাশাপাশি ভারতের পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও খেলতে পারলেন না লিটন দাস। ফলে দলের সেরা ব্যাটারকে পেল না বাংলাদেশ। তার প্রভাব পড়ল দলের ব্যাটিংয়ে। বল ভাল করেও ম্যাচ জিততে পারল না তারা।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভাল হয়নি পাকিস্তানের। আরও এক বার দলের টপ ও মিডল অর্ডার ব্যর্থ। ভারতের বিরুদ্ধে অর্ধশতরান করা সাহিবজ়াদা ফারহান প্রথম ওভারেই আউট হলেন। ৪ রান করলেন তিনি। ভারতের বিরুদ্ধেও প্রথম ওভারে আউট হতেন তিনি। ক্যাচ ছাড়েন অভিষেক শর্মা। এই ম্যাচে পয়েন্টে রিশাদ হোসেন ক্যাচ ছাড়েননি। আরও এক ম্যাচে শূন্য রানে ফিরলেন সাইম আয়ুব। চলতি প্রতিযোগিতায় চার ম্যাচে রানের খাতা খুলতে পারলেন না তিনি। রান পাননি ফখর জ়মান (১৩), সলমন আলি আঘা (১৯) ও হুসেন তলত (৩)। ৪৯ রানে ৫ উইকেট পড়ে যায় পাকিস্তানের। ম্যাচ জিতলেও দলের ব্যাটিং চিন্তায় রাখবে পাকিস্তানকে।
বাংলাদেশের বোলারদের সামনে যে ভাবে পাকিস্তান ব্যাট করছিল, দেখে মনে হচ্ছিল ১০০ রানও হবে না। পাকিস্তানকে খেলায় ফেরালেন বাংলাদেশের ফিল্ডারেরা। শূন্য রানের মাথায় শাহিন শাহ আফ্রিদি ও মহম্মদ নওয়াজ়ের ক্যাচ পড়ল। শাহিন ১৯ ও নওয়াজ় ২৫ রান করলেন। নজর কাড়লেন মহম্মদ হ্যারিসও। ৩১ রান করলেন তিনি। শেষ দিকে ফাহিম আশরফ করলেন ১৪ রান। শেষ ৮ ওভারে ৮০ রান করল পাকিস্তান। লোয়ার অর্ডারের ব্যাটে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রান করল তারা।
আরও পড়ুন:
লক্ষ্য কম থাকলেও ম্যাচ জিততে হলে শুরুটা ভাল করতে হত বাংলাদেশকে। শুরুতে একটু সময় নেওয়ার সুযোগ ছিল তাদের। অনভিজ্ঞ ব্যাটারেরা সেখানেই ভুল করলেন। প্রথম ওভারে শাহিনকে ছক্কা মারতে গিয়ে শূন্য রানে ফিরলেন পারভেজ হোসেন ইমন। ভাল দেখাচ্ছিল সইফ হাসানকে। দু’টি ছক্কা মারেন তিনি। কিন্তু হ্যারিস রউফের বল বুঝতে না পেরে আউট হলেন তিনি। ভারতের বিরুদ্ধে একাই লড়েছিলেন সইফ। তিনি আউট হওয়ায় বাংলাদেশ বড় ধাক্কা খেল।
শামিম হোসেন (৩০) ছাড়া বাংলাদেশের কোনও ব্যাটার রান পেলেন না। ভাল বল করলেন পাকিস্তানের দুই পেসার শাহিন ও হ্যারিস। দু’জনেই ৩ করে উইকেট নিলেন। তাঁদের পেস ও বৈচিত্রের কাছে হার মানতে হল বাংলাদেশকে। দুই স্পিনার সাইম ও নওয়াজ়ও ভাল বল করলেন। মাঝের ওভারে উইকেট তুললেন তাঁরা। একটা ভুলও করলেন বাংলাদেশের ব্যাটারেরা। প্রত্যেকে শুরু থেকে বড় শট খেলার চেষ্টা করলেন। সময় নিলেন না। তাড়াহুড়ো করে উইকেট দিয়ে এলেন। তার খেসারত দিতে হল তাঁদের। ১৩৬ রানও তাড়া করতে পারলেন না তাঁরা।
চলতি এশিয়া কাপে এর আগে দু’বার মুখোমুখি হয়েছে ভারত-পাকিস্তান। দু’বারই জিতেছে ভারত। তৃতীয় বার কি বদলা নিতে পারবে পাকিস্তান? নাকি জয়ের হ্যাটট্রিক করবেন সূর্যকুমারেরা? ফলাফল যা-ই হোক না কেন, তিন দিন পর আরও এক মহারণের অপেক্ষায় ক্রিকেটবিশ্ব।