হুঁশিয়ারি দিয়েও পিছু হটল পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার (আইসিসি) অবস্থানের সামনে সুর নরম করতে বাধ্য হল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। আগের বক্তব্য থেকে সরে এসে বুধবার সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিরুদ্ধে খেলতে রাজি হলেন সলমনেরা।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, আইসিসির সঙ্গে ‘সহনশীল সমঝোতা’য় পৌঁছেছে পাকিস্তান। এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বাকি ম্যাচগুলিতে ম্যাচ রেফারির দায়িত্বে থাকবেন না অ্যান্ডি পাইক্রফ্ট। পাকিস্তানের ম্যাচগুলিতে থাকবেন আইসিসির আর এক ম্যাচ রেফারি রিচি রিচার্ডসন। বুধবারের পাকিস্তান-আমিরশাহির ম্যাচের দায়িত্বে থাকার কথা ছিল পাইক্রফ্টের। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দায়িত্ব সামলাবেন রিচার্ডসন। পিসিবি-র চেয়ারম্যান তথা এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) প্রধান মহসিন নকভির সম্মানার্থে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে জয় শাহের আইসিসি।
এর আগে পাকিস্তান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিল, পাইক্রফ্টকে অবিলম্বে এশিয়া কাপ থেকে সরানো না হলে তারা আমিরশাহির বিরুদ্ধে খেলবে না। কিন্তু সোমবার রাতে অঙ্ক বদলে যায়। আমিরশাহি গ্রুপের ম্যাচে ওমানকে হারিয়ে দেওয়ায় চাপে পড়ে যান সলমনেরা। বুধবারের ম্যাচ না খেললে প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নিতে হবে তাঁদের। কারণ এশিয়া কাপের সুপার ফোরে উঠতে হলে আমিরশাহির বিরুদ্ধে জিততেই হবে পাকিস্তানকে। তাই আগের অবস্থান থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছে পাকিস্তান। তবে, প্রতিবাদে রীতি অনুযায়ী ম্যাচের আগের দিন মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক বয়কট করে পাক শিবির। এর পর পাকিস্তানকে ঘিরে জল্পনা আরও বৃদ্ধি পায়।
এ ছাড়াও, পাকিস্তানের দাবি খারিজ করে আইসিসি যে চিঠি দিয়েছিল তাতে সই করেছিলেন আইসিসির জেনারেল ম্যানেজার ওয়াসিম খান। যিনি আবার পিসিবির প্রাক্তন সিইও। নিজেদের দেশের ক্রিকেট কর্তার সই করা চিঠি পাওয়ার পরেই কিছুটা ‘ব্যাকফুট’-এ চলে যেতে বাধ্য হন পিসিবি কর্তারা। এ ছাড়াও প্রতিযোগিতার মাঝ পথে সরে দাঁড়ালে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হত পাকিস্তানকে। প্রায় ১ কোটি ৬০ লক্ষ ডলার ক্ষতি হত তাদের (ভারতীয় মূদ্রায় প্রায় ১৪০ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা)। এই পরিমাণ ক্ষতি সামাল দেওয়ার মতো আর্থিক সচ্ছলতা নেই পিসিবির। ফলে, এশিয়া কাপ বয়কট করার হুঁশিয়ারি দিয়েও পিছিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে পাকিস্তান।
আরও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে টসের পর পাক অধিনায়ক সলমনের সঙ্গে হাত মেলাননি ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। খেলা শেষেও সেই ছবি দেখা যায়। সাজঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন ভারতীয় ক্রিকেটারেরা। প্রতিবাদে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বয়কট করে পাকিস্তান। এই ঘটনায় ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্টকে নিশানা করে পাকিস্তান। তাঁর অপসারণ চেয়ে সমাজমাধ্যমে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান মহসিন নকভি লেখেন, ‘‘আইসিসির দ্বারস্থ হয়েছে পিসিবি। ম্যাচ রেফারির বিরুদ্ধে আইসিসির আচরণবিধি এবং এমসিসির নিয়ম লঙ্ঘিত হয়েছে। এশিয়া কাপ থেকে ম্যাচ রেফারিকে অবিলম্বে অপসারণের দাবি জানিয়েছে পিসিবি।’’
পাকিস্তানের অভিযোগ ছিল, ম্যাচ রেফারি আইসিসি-র আচরণবিধি এবং এমসিসি-র নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিপক্ষ দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করা, তাঁদের অভিনন্দন বা শুভেচ্ছা জানানো রীতি বা ক্রিকেটীয় সৌজন্য। বাধ্যতামূলক নয়। স্বাভাবিক ভাবেই ম্যাচ রেফারি হিসাবে পাইক্রফ্ট নিয়ম-বিরুদ্ধ কিছু করার পরামর্শ দেননি। তাই তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি আইসিসি।