দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবিদ্বেষের শিকার হয়েছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা যখন নির্বাসিত ছিল, ভারতকেই সমর্থন করতেন। কারণ, তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত। গুজরাতে জন্ম বাবার। মা মহারাষ্ট্রের। কাজের সূত্রে কঠিন সময় ডারবানে উড়ে যেতে হয়েছিল তাঁর বাবাকে। সেই দেশেই জন্ম ক্রিকেটভক্ত রবি বিঠ্ঠলের। শ্বেতাঙ্গ না হওয়ায় স্কুলে ভর্তি হতে পারছিলেন না। সমস্যা হয়েছিল চাকরির ক্ষেত্রেও। কিন্তু ক্রিকেট-জ্বর ছিল ছোট থেকেই।
বর্ণবিদ্বেষী শাসন শেষ হওয়ার পরে ১৯৯১-এ ইডেনে ম্যাচ খেলতে এসেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই ম্যাচও দেখতে এসেছিলেন রবি। তখন ভারতকেই সমর্থন করতেন। বলছিলেন, ‘‘আমি ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তাই ভারতকেই সমর্থন করতাম। দক্ষিণ আফ্রিকায় আমাদের ভাল চোখে দেখা হত না। বর্ণবিদ্বেষের কারণে স্কুলে ভর্তি হতে পারছিলাম না। শ্বেতাঙ্গ না হওয়ায় ক্রিকেটও খেলতে পারিনি। কিন্তু এই খেলাকে ভালবেসেছি ছোট থেকে।’’ যোগ করেন, ‘‘ইডেনে প্রথম এসেছিলাম ১৯৯১-এ। তখন এই মাঠ অন্য রকম ছিল। মনে আছে সিমেন্টের আসনে বসেছিলাম। এই ইডেন বড্ড অচেনা।’’
রবি এখন দক্ষিণ আফ্রিকার সমর্থক। জার্সি বদলানোর নেপথ্যেও একটি কাহিনি লুকিয়ে। বলছিলেন, ‘‘১৯৯২ বিশ্বকাপের সময় মহম্মদ আজ়হারউদ্দিনের অটোগ্রাফ নিতে গিয়েছিলাম। ও আমাকে নির্দিষ্ট সময়ে যেতে বলেছিল। তখনই গিয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে সই দিতে চায়নি। সে দিন সিদ্ধান্ত নিই, দক্ষিণ আফ্রিকাকেই সমর্থন করব।’’
প্রাক্তন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক হ্যান্সি ক্রোনিয়ের বড় ভক্ত ছিলেন রবি। ম্যাচ গড়াপেটায় জড়িয়ে পড়ার পরে খুব কষ্ট পেয়েছিলেন। বলছিলেন, ‘‘আমার ঘর জুড়ে শুধু ক্রোনিয়ের পোস্টার ছিল। যে দিন জানতে পারি ম্যাচ গড়াপেটায় ও জড়িত, এক রাতে সব পোস্টার জ্বালিয়ে দিয়েছিলাম।’’ এখনও পর্যন্ত ৯টি বিশ্বকাপ দেখেছেন রবি। তাঁর ইচ্ছে ১০ সম্পূর্ণ করার। ২০২৭-এ তাঁর দেশেই বিশ্বকাপ। ৭০ বছর বয়সি রবি বলেন, ‘‘বেঁচে থাকতে চাই আর দু’টো বছর। বাভুমার হাতে বিশ্বকাপ দেখতে চাই।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)