Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Australia vs West Indies

মাঠে নামা ছিল অনিশ্চিত, পায়ের যন্ত্রণা নিয়ে সেই ‘নিরাপত্তারক্ষী’ জোসেফই ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের নায়ক

২০২৩ সালে প্রথম প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলেছিলেন শামার। অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়া-ওয়েস্ট ইন্ডিজ় প্রথম টেস্টে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক। পায়ের চোট নিয়ে দ্বিতীয় টেস্টে তিনিই নায়ক।

picture of Shamar Joseph

শামার জোসেফ। ছবি: (এক্স) টুইটার।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৫:১৮
Share: Save:

জস হ্যাজলউডের স্টাম্প ছিটকে দিয়েই দৌড়তে শুরু করলেন শামার জোসেফ। দু’পাশে দু’হাত ছড়িয়ে তাঁর দৌড় থামল সতীর্থদের আলিঙ্গনে। অস্ট্রেলিয়াকে ২১ বছর পর টেস্টে হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের নায়ককে ঘিরে উচ্ছ্বাস থামতেই চাইছিল না ক্রেগ ব্রেথওয়েটদের। অথচ রবিবার জোসেফের মাঠে নামাই ছিল অনিশ্চিত।

শনিবার ব্যাট করার সময় মিচেল স্টার্কের ইয়র্কার আছড়ে পড়েছিল জোসেফের ডান পায়ের পাতায়। সামলাতে পারেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের তরুণ জোরে বোলার। যন্ত্রণায় কাতরে ওঠেন। ঠিক মতো দাঁড়াতেই পারছিলেন না। দলের সাপোর্ট স্টাফদের কাঁধে ভর দিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল শামারের হাড় ভেঙে গিয়েছে। স্ক্যান করে দেখা যায় হাড় ভাঙেনি। তবে তাঁর পায়ে তৈরি হয়েছিল ক্ষত। ব্যথা কমানোর ওষুধ আর মনের জোর সম্বল করে শামার মাঠে নেমেছিলেন রবিবার।

স্টার্কের সেই ইয়র্কারই বোধহয় তাতিয়ে দিয়েছিল ২৪ বছরের ক্রিকেটারকে। রবিবার যন্ত্রণা উপেক্ষা করে আহত বাঘের মতো তিনি ঝাঁপিয়ে পড়লেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইন আপের উপর। এক এক করে তুলে নিলেন সাত উইকেট। বাউন্স এবং গতিতে নাজেহাল করলেন অসি ব্যাটারদের। তাঁর শিকারের তালিকায় রয়েছেন ক্যামেরন গ্রিন (৪২), ট্র্যাভিস হেড (০), মিচেল মার্শ (১০), অ্যালেক্স ক্যারে (২), মিচেল স্টার্ক (২১), প্যাট কামিন্স (২) এবং নাথান লায়ন (৯)। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগেই ৬ উইকেট তুলে নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে চাপে ফেলে দিয়েছিলেন জোসেফ। তাঁর দাপটে ১৯৮৮ সালের পর প্রথম বার ব্রিসবেনে টেস্ট জিতল ওয়েস্ট ইন্ডিজ়। ২৭ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্টে ক্রিকেটে জিতল ক্যারিবিয়ানরা। শেষ বার ১৯৯৭ সালে জয়ের দু’বছর পর জন্ম শামারের।

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল শামারের। ক্রিকেটজীবনের প্রথম টেস্ট সিরিজ়েই তিনি সেরা ক্রিকেটার। অথচ তিনি প্রথম প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলেছেন ২০২৩ সালে। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের এক প্রত্যন্ত গ্রামে জন্ম শামারের। গুয়েনা দ্বীপের বারাকারা নামের এক গ্রামে জন্ম শামারের। ২০১৮ সাল পর্যন্ত সেই গ্রামে কোনও ফোন বা ইন্টারনেট ছিল না। নৌকা করে দু’দিনের পথ পার করে এসে তবে পাওয়া যেত সেই সব। তার পরেও ক্রিকেটের স্বাদ পেয়েছিলেন শামার। টেপ বলে ক্রিকেট খেলতেন গ্রামে। খুব কম বাড়িতেই টিভি ছিল। সেখানেই কার্টলি অ্যাম্ব্রোস, কোর্টনি ওয়ালসদের খেলা দেখতেন শামার। পরিবারকে আর্থিক ভাবে সাহায্য করার জন্য নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন শামার। তাঁর দু’বছরের এক সন্তানও রয়েছে।

সেই দায়িত্ব কাঁধে নিয়েও খেলার প্রতি ভালবাসা কমেনি শামারের। সেই ভালবাসা থেকেই হঠাৎ চাকরি ছেড়ে ক্রিকেটে মন দেন তিনি। জায়গা করে নেন প্রথম শ্রেণির দল গুয়েনা হারপি ঈগলসে। কয়েকটি ম্যাচেই তিনি নজর কেড়ে নিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের নির্বাচকদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Shamar Joseph test cricket Injury
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE