ছয় দশক আগে ভারতের রঞ্জি ট্রফির মান বাড়ানোর জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের রয় গিলক্রিস্টকে খেলানো হয়েছিল। তার পরে অতলান্তিক মহাসাগর দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের এখন যা হাল, তাতে বাংলার বর্তমান রঞ্জি দলের বিরুদ্ধেও তারা কল্কে পাবে কি না সন্দেহ। এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ়কে কি আর টেস্ট ম্যাচ খেলতে দেওয়া উচিত?
প্রায় এক বছর আগে শেষ বার টেস্টে ৪০০-র উপর রান করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ়। পরের ১৫ ইনিংসে ৪০০ তো দূর, মাত্র এক বার ২৫০ টপকেছে তারা। গত আড়াই বছরে একটিও টেস্ট সিরিজ় জিততে পারেনি। ২০০০ সালের পর থেকে যে ৮৭টি সিরিজ় তারা খেলেছে, তার মধ্যে মাত্র ২৩টি জিতেছে। তার মধ্যে ১৫টি টেস্টে দুর্বল বাংলাদেশ, জ়িম্বাবোয়ে এবং আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে। তথৈবচ অবস্থা সাদা বলের ক্রিকেটেও। ২০২৩ সালের এক দিনের বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি তারা। গত সপ্তাহে ক্রিকেটে ‘লিলিপুট’ নেপালের কাছেও দু’টি ম্যাচ হেরেছে দু’বারের টি২০ বিশ্বচ্যাম্পিয়নেরা। বাংলার রঞ্জিজয়ী অধিনায়ক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেই ফেললেন, “ভারতের বিরুদ্ধে তো দেখা গেল, ব্যাটারেরা ব্যাট করতে জানে না। বোলারেরা উইকেট নিতে জানে না। আমার মনে হয় না, ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের ক্রিকেট আর ফিরতে পারবে। ওরা তো এখন বাংলার রঞ্জি দলের কাছেও হেরে যাবে।”
ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের যে দল ভারতের বিরুদ্ধে খেলতে এসেছে, তার মধ্যে দু’-তিন জন ছাড়া বাকিদের নাম ক’জন জানেন সন্দেহ। অধিনায়ক রস্টন চেজ় এবং শাই হোপ কিছুটা পরিচিত। কিন্তু বাকিরা? ত্যাগনারায়ণ চন্দ্রপল বোধহয় বাবার (শিবনারায়ণ চন্দ্রপল) পরিচয়ে খেলছেন। ভারতের গলি ক্রিকেটেও অ্যালিক অ্যাথানেজ়, জন ক্যাম্পবেলের থেকে ভাল ব্যাটার পাওয়া যায়। বোলারদের কথা যত কম বলা যায় তত ভাল। বছরের বাকি সময়ে এই ক্রিকেটারদের নাম শোনা যায় না। শুধু দেশের খেলার সময়ই তাঁদের দেখা যায়। এই ‘পার্ট-টাইম’ ক্রিকেটারদের দিয়ে আর যা-ই হোক, টেস্ট ম্যাচ জেতা যায় না।
অহমদাবাদে ভারতের কাছে হারের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ় দল। —ফাইল চিত্র।
তা হলে কি বিশ্বক্রিকেটে এখন নেহাতই ‘দুধ-ভাত’ ওয়েস্ট ইন্ডিজ়কে রাখা হয়েছে বাকি দলগুলির আত্মবিশ্বাস এবং বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে পয়েন্ট বাড়ানোর জন্য? ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউ জ়িল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দল নিজেদের মধ্যে সিরিজ় খেলার মাঝে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের সঙ্গে দু’টি বা তিনটি টেস্ট খেলে নেবে। সেগুলি দু-আড়াই দিনে জিতে ‘বড়’ টিমের ক্রিকেটারেরা প্রস্তুতি সেরে নেবেন। আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নেবেন। সাফল্যের ঘরে আরও কিছু রান এবং উইকেট আসবে। পাশাপাশি পয়েন্টও বাড়বে। যার ফলে টেস্ট বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলার সম্ভাবনা তৈরি হবে।
সেই সূত্রেই প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে, জয় শাহের আইসিসি কি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সূচি তৈরির সময় সেই কারণেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ়কে টেস্ট খেলিয়ে দেশগুলির মধ্যে রেখে দেয়? নইলে কেন ‘দ্বিস্তরীয়’ টেস্ট বিশ্বকাপ হচ্ছে না? যেখানে দুই স্তরের মান অনুযায়ী ম্যাচ হবে? তা হলে অন্তত ভারত, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশের বিরুদ্ধে ধুঁকতে হত না একদা বিশ্বত্রাস ওয়েস্ট ইন্ডিজ়কে। তারা তাদের সমমানের দলের সঙ্গে টেস্ট ম্যাচ খেলতে পারত।
আশা দেখছেন না রবার্টস
অস্ট্রেলিয়ার কাছে ২৭ রানে অল আউটের পর হতাশা চেপে রাখতে পারেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের প্রাক্তন জোরে বোলার অ্যান্ডি রবার্টস। বলেছেন, “আমাদের ক্রিকেট অনেক নীচে নেমেছে। এর চেয়েও নীচে নামার জায়গা আছে কি? গর্তের একেবারে নীচে পৌঁছে গিয়েছি আমরা। মনে হচ্ছে, হালও ছেড়ে দিয়েছি। ফেরার জায়গা নেই।”
১৯৮০ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত টেস্টে অপরাজিত ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ়। টানা ১৫ বছর কোনও দেশ তাদের হারাতে পারেনি। সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ই গত আড়াই বছরে একটিও টেস্ট সিরিজ় জিততে পারেনি। ২০০০ সালের পর থেকে যে ৮৭টি সিরিজ় তারা খেলেছে, তার মধ্যে মাত্র ২৩টি জিতেছে। তার মধ্যে ১৫টি টেস্টে দুর্বল বাংলাদেশ, জ়িম্বাবোয়ে ও আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে। জ়িম্বাবোয়ে এবং আফগানিস্তান টেস্টে পূর্ণ সদস্যের দল নয়। বিভিন্ন দেশ তাদের বিরুদ্ধে খেলে প্রস্তুতি সেরে নেয়। তাদের হারিয়ে কৌলীন্য বাড়ছে না ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের। বড় দলের বিরুদ্ধে মাঠে নামলেই ফুটোফাটা বেআব্রু হয়ে পড়ছে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ় আর নেই!
ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের প্রাক্তন অধিনায়ক তথা প্রাক্তন ডিরেক্টর অফ ক্রিকেট জিমি অ্যাডামসের মতে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ় বলে আর কিছু নেই। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ় নাম নিয়ে খেলার আর কোনও অর্থ আছে? কোথায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ়? ১৫টা দেশকে জোর করে ধরে একটা দল হিসাবে খেলানো হচ্ছে। এই ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের হয়ে কেউ মন থেকে খেলে না। তার বদলে ত্রিনিদাদ, বার্বাডোজ়, গায়ানার হয়ে আলাদা আলাদা খেললে হয়তো ভাল হবে। যেমনটা আমরা বিশ্বকাপ ফুটবল বা অলিম্পিক্সে খেলি।”
অরুণ লাল ভারতের হয়ে তাঁর শেষ ম্যাচ খেলেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধেই। তাঁর কথায়, “তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ে কী অসম্ভব প্রতিভাবান সব ক্রিকেটার ছিল! ব্যাটিংয়ে রিচার্ডস, লয়েডরা। বল হাতে মার্শাল, ওয়ালশের মতো ক্রিকেটার। যে কোনও দলকে ভয় ধরিয়ে দেওয়ার মতো। পর পর দু’বার বিশ্বকাপ জিতেছিল। এখন আর ক্রিকেটার কোথায়?” বস্তুত, অরুণ মনে করেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের তরুণদের ক্রিকেটের প্রতি ভালবাসাও আর তেমন নেই। তাঁর ব্যাখ্যা, “এটা এক দিনে হয়নি। দীর্ঘ দিন ধরেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ় ক্রিকেট মানচিত্র থেকে পিছিয়ে যাচ্ছিল। ওদের দেশের তরুণেরা অ্যাথলেটিক্স, বাস্কেটবলের মতো খেলার দিকে বেশি ঝুঁকছে। আর্থিক ভাবে আমেরিকার দিকে তাকিয়ে থাকে ওরা। সে দেশে ক্রিকেট খুব বেশি গুরুত্ব পায় না। তাই ক্যারিবিয়ানেরাও ক্রিকেট ছেড়ে অন্য খেলায় মেতে থাকে।”
আউট হয়ে মাথা নিচু করে ফিরছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের জেসন হোল্ডার। —ফাইল চিত্র।
‘নাম কা ওয়াস্তে’ ক্রিকেট বোর্ড
কোনও দেশের ক্রিকেটের মান নির্ভর করে সে দেশের প্রশাসনের উপর। যেমন বিসিসিআই। কর্তা বদলে গেলেও সিস্টেম একই থাকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ে সে সবের বালাই নেই। কে কবে দায়িত্বে আসেন, কে কবে ছেড়ে দেন, কেউ জানে না। ক্রিস গেল, সুনীল নারাইন, আন্দ্রে রাসেল, নিকোলাস পুরানেরা সরাসরি বোর্ডের সঙ্গে সংঘাতে যান। বিদেশের লিগ খেলার জন্য দেশের হয়ে খেলা ছেড়ে দেন। তবে তাঁদের দোষও দেওয়া যায় না। দেশের হয়ে খেললে যে পরিমাণ অর্থ পাওয়া যায়, ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি ক্রিকেটে তার চেয়ে অনেক বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া যায়। গেল-রাসেলদের দোষ দিয়ে লাভ কী?
দেশের ক্রিকেট বোর্ডের দিকে আঙুল তুলেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের আর এক প্রাক্তন ক্রিকেটার ডেসমন্ড হেনেস। তিনি বলেন, “ড্যারেন স্যামিকে তিন ফরম্যাটের কোচ করে দেওয়া হয়েছে। আবার ও-ই নির্বাচক। একসঙ্গে একটা দল টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজ় খেলতে যাচ্ছে। তা হলে কোচ কী ভাবে সামলাবে?” স্যামির দ্বৈত ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে হেনেস বলছেন, “কোচ দলে বড়দার ভূমিকায় থাকে। তাকে ক্রিকেটারেরা সমস্যার কথা জানায়। সেই কোচই নির্বাচক হলে ক্রিকেটারেরা কি তার সঙ্গে খোলামেলা কথা বলবে? চোটের কথা বলবে? তারা বরং ভাববে যে, সমস্যার কথা বললে কোচ কাম নির্বাচক দল থেকেই ছেঁটে ফেলতে পারে।” ঘরোয়া ক্রিকেটের গুরুত্বের কথা বলছেন সম্বরণও, “ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের ঘরোয়া ক্রিকেটের মান খুব খারাপ। ওদের মাঠগুলো দেখলেই সেটা বোঝা যায়। কোনও পরিকাঠামো নেই। দেখে মনে হয়, খেলার ইচ্ছাটাই ওদের আর নেই।”
অর্থ-অনর্থ
গত ৬০ বছর ধরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ় ক্রিকেটের পরিবর্তন দেখেছেন ধারাভাষ্যকার জোসেফ পেরেইরা। ৮৬ বছর বয়সি পেরেইরার বক্তব্য, ‘‘আর্থিক ক্ষমতা না থাকলে বোর্ড কী ভাবে দেশের ক্রিকেটের উন্নতি করবে। ভারত, অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্যান্ডের তুলনায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের ক্রিকেটারেরা কত টাকা পায়? কোভিডের সময় আমরাই প্রথম ইংল্যান্ডে গিয়েছিলাম। আমাদের ক্রিকেটারেরা জীবন বাজি রেখে খেলেছিল। তার বদলে আমরা কী পেলাম? ইংল্যান্ড গ্রেনাডায় একটা অতিরিক্ত টেস্ট খেলল। ওইটুকুই।”
ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের প্রাক্তন অধিনায়ক লয়েড মনে করেন, পুরনো গৌরবের কথা মাথায় রেখে আইসিসি-র উচিত ওয়েস্ট ইন্ডিজ়কে বেশি অর্থসাহায্য করা। তাঁর কথায়, “ভারত, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া আইসিসি-র কাছ থেকে ১৬০০ কোটি টাকা করে পাচ্ছে। আমরা পাচ্ছি ৭০০ কোটির মতো। যা বাংলাদেশ, আফগানিস্তানের সমান। যখন আমরা ভাল খেলতাম, তখন সকলে আমাদের বিরুদ্ধেই খেলতে চাইত। নিয়মিত অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের সঙ্গে খেলেছি। পাকিস্তান, ভারতে গেলে লক্ষ লক্ষ মানুষ খেলা দেখতে আসতেন। আমাদের ভাঙিয়ে অনেক বছর অর্থ রোজগার করেছে আইসিসি। এ বার আমাদের কিছু পাওয়া উচিত।”
সম্বরণও বলছেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বোর্ডের খারাপ অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কথা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওদের বোর্ডের কাছে টাকা নেই বলেই গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ওখানে হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও ওদের আর্থিক চাহিদা মেটেনি। যত দিন না আর্থিক ভাবে ওরা শক্তিশালী হচ্ছে, তত দিন ওদের ঘরোয়া ক্রিকেটের উন্নতি হবে না। ক্লাস টু পাশ না করে কেউ কী ভাবে মাধ্যমিক দেবে?”
তবে এর উল্টো যুক্তিও আছে। দক্ষিণ আফ্রিকা বা নিউ জ়িল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডও আর্থিক সমস্যায় ভুগছে। তাদের ক্রিকেটারেরাও বিভিন্ন দেশের লিগে খেলে রোজগার করেন। কিন্তু তাঁরা দেশের হয়েও খেলেন। গত দু’টি আইসিসি প্রতিযোগিতায় ভারতের বিরুদ্ধে ফাইনাল খেলেছে এই দুই দলই।
অনর্থ-অর্থ
ভারতের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ়ের আগে দলের দুই পেসার শামার জোসেফ ও আলজারি জোসেফ চোটের কারণে ছিটকে গিয়েছেন। সেই পরিস্থিতিতে ডেকে পাঠানো হয়েছিল প্রাক্তন অধিনায়ক জেসন হোল্ডারকে। তিনি নিজের অপারগতার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। অধিনায়ক চেজ় ব্যাখ্যা দিয়েছেন হোল্ডারের সিদ্ধান্তের, “অনেকে সব ফরম্যাটেই খেলে। তাদের শরীরের উপর ধকল বেশি পড়ে। জানি, ওকে শরীরের খেয়ালও রাখতে হবে। দিনের শেষে আমরা সকলেই রোজগার করছি সংসার চালাতে। শরীর ফিট না থাকলে কী করে খেলব। বুঝতে পারছি, ও কেন এল না। আমাদের অসুবিধা হল ঠিকই। তবে ওর দিকটাও বুঝতে হবে।”
প্রাক্তনদের প্রচেষ্টা জলে
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২৭ রানে অল আউট হওয়ার পরে প্রাক্তন ক্রিকেটারদের কাছে সাহায্য চেয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ় ক্রিকেট বোর্ড। ব্রায়ান লারা, ক্লাইভ লয়েড, ডেসমন্ড হেনেস, ভিভ রিচার্ডস, চন্দ্রপলেরা সাড়া দিয়েছিলেন। বৈঠকও করেছিলেন। পরে লারা বলেছিলেন, “আগে দক্ষতার নিরিখে দল তৈরি হত। আমরা বিশ্বের সেরা দল হয়েছিলাম। তার পর থেকে খেলাটা অনেক বদলে গিয়েছে। তাই প্রতিভা তুলে আনতে নতুন পন্থা নিতে হবে আমাদের। বাকি দেশগুলো আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে গিয়েছে। এখনও দক্ষতা রয়েছে দেশের ক্রিকেটে। তা কাজে লাগানো হচ্ছে না।”
মিচেল স্টার্কদের (ডান দিকে) দাপটে ২৭ রানে অল আউট হওয়ার পর হতাশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের ব্যাটার। —ফাইল চিত্র।
ভারতে এসে সম্প্রচারকারী চ্যানেলের সঙ্গে আলোচনা করা, বড় স্পনসরদের আমন্ত্রণ করে চুক্তির প্রস্তাবও দিয়েছিলেন প্রাক্তনেরা। বিস্তারিত পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু তার পরেও সমস্যার সুরাহা হয়নি। কারণ হিসাবে দেশের ক্রিকেটের সিস্টেমকে দায়ী করেছেন বর্তমান টেস্ট অধিনায়ক রস্টন চেজ়। অহমদাবাদে লজ্জাজনক হারের পর চেজ় বলেন, “আমাদের দেশের সিস্টেম খারাপ। পরিকাঠামো ভাল নয়। বার বার বলি এমন পিচ বানাতে, যেখানে ব্যাটারেরা লম্বা ইনিংস খেলতে পারে। সেটা হচ্ছে না। তার ফল দেখা যাচ্ছে। আউটফিল্ডও মন্থর। ফলে দৌড়ে রান নিতে সমস্যা হয়। প্রস্তুতিতে এত খামতি থাকলে বিদেশে খেলতে গিয়ে সমস্যা হবেই।”
কারণ যা-ই হোক, ফলাফলের ইতরবিশেষ হচ্ছে না ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের। দিল্লি টেস্টেও ভারতের কাছে গোহারা হারবেন চেজ়রা। তখন প্রশ্ন আরও জোরালো হবে— এই দলকে আদৌ কেন টেস্ট ম্যাচ খেলার মর্যাদা দেওয়া হবে!