শুক্রবার থেকে ইডেন গার্ডেন্সে শুরু হবে ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট। ১৩ বছর পর ইডেনের কোনও টেস্ট ম্যাচে ভারতীয় দলে থাকবে না মহম্মদ শামির নাম। ২০১৩-য় টেস্টে অভিষেক হওয়ার পর থেকে ইডেনে হওয়া চারটি টেস্টেই খেলেছিলেন শামি। এই প্রথম ‘ঘরের’ মাঠে টেস্ট খেলা হবে না তাঁর। প্রথম টেস্টের আগের দিন ভারতীয় দলে শামির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন অধিনায়ক শুভমন গিল। পাশাপাশি জানিয়ে দিয়েছেন, প্রথম একাদশ এখনও ঠিক করতে পারেননি তাঁরা। কারণ ইডেনের পিচ এখনও পুরোপুরি চিনে উঠতে পারেননি।
শামির ভবিষ্যৎ শেষ?
শামিকে পুরোপুরি হিসাবের বাইরে ফেলে দেননি শুভমন। আবার এমন ইঙ্গিতও দেননি যে, শামি ফিরে আসতে পারেন। শুভমনের কথায়, “শামিভাইয়ের মতো বোলার খুব বেশি নেই। তবে আকাশ দীপ বা প্রসিদ্ধের মতো বোলারদের পারফরম্যান্সের দিকে যদি তাকান, বা সিরাজ বা বুমরাহ ভারতের হয়ে কেমন খেলেছে সেটা যদি দেখেন, তা হলে বুঝবেন সিদ্ধান্ত কতটা কঠিন। শামিভাইয়ের মতো বোলারকে বাইরে রেখে খেলতে কখনওই ভাল লাগে না। তবে একইসঙ্গে আমাদের সামনের দিকে তাকাতে হবে। ফিটনেস এবং নির্বাচন নিয়ে নির্বাচকেরা ভাল উত্তর দিতে পারবেন।”
ইডেনের পিচ কেমন?
রবিবার শহরে এলেও এখনও ইডেনের পিচ পুরোপুরি বুঝতে পারেননি শুভমন। বলেছেন, “বুধবার এসে দেখেছিলাম অন্য রকম উইকেট। আজ এসে দেখছি সেটা বদলে গিয়েছে। কাল এসে আরও এক বার দেখলে বুঝতে পারব। এমনিতেই পিচ দেখে শুকনোই মনে হচ্ছে। এ ধরনের পিচে রিভার্স সুইং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০২৪-এ ইংল্যান্ড সিরিজ়ে স্পিন সহায়ক পিচ হলেও পেসারেরা উইকেট নিয়েছিল। রিভার্স সুইং হলে পেসারদের কখনওই হিসাবের বাইরে রাখা যাবে না।”
প্রথম একাদশে কারা?
ধ্রুব জুরেল যে খেলবেন তা মোটামুটি নিশ্চিত। ব্যাটারদের নিয়েও চিন্তা নেই। তবে তিন স্পিনার হিসাবে কাকে কাকে খেলাবেন তা চূড়ান্ত করেননি শুভমন। তাঁর কথায়, “বছরের সেই সময়টায় এসে গিয়েছি, যখন একজন অতিরিক্ত পেসার নাকি অতিরিক্ত স্পিনার খেলাব, সেটা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে। সেই জন্যই শুক্রবার এসে পিচ দেখে সিদ্ধান্ত নেব। প্রথম একাদশ মোটামুটি নিশ্চিত। সাধারণত ভারতে স্পিনারেরাই ম্যাচ জেতাতে সাহায্য করে। যে হেতু ভারতের পূর্ব দিকের এই অঞ্চলে আলো তাড়াতাড়ি কমে যায়, তাই সেগুলোও মাথায় রাখতে হবে। তা ছাড়া আমাদের দলে খুব ভাল ভাল ব্যাটিং অলরাউন্ডার রয়েছে। সেটা অক্ষর, ওয়াশিংটন বা জাডেজা যে-ই হোক। ওদের বোলিং এবং ব্যাটিংয়ের রেকর্ড অসাধারণ। উত্তেজক একটা টেস্ট হতে চলেছে।”
তিন ফরম্যাটে খেলা
অস্ট্রেলিয়ায় শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার ছ’দিনের মধ্যে লাল বলে খেলতে নামবেন শুভমন। এখনও তিন ফরম্যাটে খেলার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া রপ্ত করতে হচ্ছে তাঁকে। বলেছেন, “এখনও ভাবছি কী ভাবে মানিয়ে নেব। এশিয়া কাপ থেকে পরের পর খেলে চলেছি। বিভিন্ন দেশে যাচ্ছি। চার-পাঁচ দিনের ব্যবধানে বিভিন্ন ফরম্যাটে নামতে হচ্ছে। সব ফরম্যাটে সাফল্য পেতে গেলে কী ভাবে নিজেকে ঠিক রাখতে হয়, সেটা জানার জন্য আর একটু সময় দরকার। তবে শরীরের থেকেও মনের চ্যালেঞ্জ বেশি।”
জোরে বোলারদের ওয়ার্কলোড
শুভমন বলেছেন, “ভারতে খেলার চেয়ে ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে গেলে জোরে বোলারদের উপরে চাপ বেশি পড়ে। কিন্তু আমাদের দলের পেসারেরা জানে, কী ভাবে ভারতের মাটিতে সাফল্য পেতে হয়। যদি পিচ থেকে রিভার্স সুইং পাওয়া যায়, তা হলে ওরা সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করবে। বুমরাহ নিজেও জানে যে ভারতের মাটিতে বল করতে গেলে ওর উপর সে ভাবে চাপ পড়বে না। ও সে ভাবেই সামলায় ব্যাপারটা।”
আরও পড়ুন:
প্রোটিয়া সিরিজ়ের গুরুত্ব
দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২-০ হারাতে পারলে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসবে ভারত। সে প্রসঙ্গে শুভমন বলেছেন, “এই দুটো ম্যাচ খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলতে গেলে এখানে ভাল খেলতেই হবে। দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট বিশ্বকাপ জিতে খেলতে এসেছে। শক্তিশালী দল। তাই লড়াই সহজ হবে না। অনেক কঠিন সময় আসবে। তবে দল হিসাবে একসঙ্গে সেগুলো সামলে দিতে পারব।”