বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম ম্যাচে শক্তিশালী দল হিসাবেই নামবে ভারত। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে, শেষ পাঁচটি এক দিনের ম্যাচের মধ্যে তিনটিতেই জিতেছে বাংলাদেশ। তাই এক দিনের ক্রিকেটে বাংলাদেশকে হালকা ভাবে নেওয়া উচিত হবে না রোহিত শর্মাদের। দেখে নেওয়া যাক বৃহস্পতিবার ভারত এবং বাংলাদেশের ম্যাচে কোন কোন ব্যক্তিগত লড়াই দেখা যেতে পারে।
রোহিত বনাম মুস্তাফিজুর
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে শতরান করেছেন রোহিত। কিন্তু তার আগে ধারাবাহিক ভাবে রান পাচ্ছিলেন না তিনি। একটি শতরানের পর তিনি ফর্মে ফিরে এসেছেন কি না তা বোঝা মুশকিল। শতরান করার পরের ম্যাচে রান পাননি। এই অবস্থায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলতে নামবেন রোহিত। আর সেই ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে নতুন বল হাতে আক্রমণ শুরু করতে পারেন মুস্তাফিজুর রহমান। বাঁহাতি পেসারদের বিরুদ্ধে রোহিত খুব স্বচ্ছন্দ নন। বাংলাদেশ সেই অস্ত্রটাই প্রয়োগ করতে পারে। এক দিনের ক্রিকেটে ১০ বার মুখোমুখি হয়েছেন রোহিত এবং মুস্তাফিজুর। এর মধ্যে তিন বার রোহিতকে আউট করেছেন বাংলাদেশের বাঁহাতি পেসার। মুস্তাফিজুরের বিরুদ্ধে ওই ১০টি ইনিংসে ১২৩ বলে ১৩০ রান করেছেন রোহিত। ফলে ভারতের ইনিংসের শুরুতেই রোহিত বনাম মুস্তাফিজুর লড়াই জমে যেতে পারে।
কোহলি বনাম তাসকিন
ভারতীয় ব্যাটারের অফ সাইডের বাইরের বল খেলতে সমস্যা হচ্ছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিরাট কোহলিকে সমস্যায় ফেলতে পারেন তাসকিন আহমেদ। বাংলাদেশের ডানহাতি পেসার কোহলিকে অফ সাইডের বাইরে টানা বল করে গেলে অবাক হওয়ার থাকবে না। যদিও লাল বলের মতো সাদা বল অত সুইং করে না। ফলে কোহলি কিছুটা সুবিধা পেতে পারেন। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচে ৫২ রান করেছিলেন কোহলি। এখন দেখার তিনি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে রান করতে পারেন কি না। তাসকিনের বিরুদ্ধে এক দিনের ক্রিকেটে চারটি ইনিংস খেলেছেন কোহলি। এর মধ্যে মাত্র এক বার আউট হয়েছেন তিনি। তবে করেছেন মাত্র ৩৫ রান। তাসকিনকে এক দিনের ক্রিকেটে কখনও ছক্কা মারতে পারেননি কোহলি। ফলে এই লড়াইয়ের দিকেও নজর থাকবে সকলের।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
হার্দিক বনাম মেহেদি
এক দিনের ক্রিকেটে বড় ভূমিকা নেন অলরাউন্ডারেরা। ভারতীয় দলে যেমন রয়েছেন হার্দিক পাণ্ড্য, তেমনই বাংলাদেশ দলে রয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। হার্দিক যেমন প্রয়োজনে দলের পেস আক্রমণকে সাহায্য করবেন, তেমনই ব্যাট হাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবেন। মেহেদিও বাংলাদেশের তেমনই ভরসার ক্রিকেটার। তিনি ব্যাট হাতে দলকে ভরসা দেন আবার বল হাতেও উইকেট তুলে নেন। শাকিব আল হাসানের পরবর্তী সময়ে দলের অন্যতম অলরাউন্ডার মেহেদি। দুই দলের ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য হার্দিক এবং মেহেদি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন।
জাডেজা বনাম মুশফিকুর
ভারতের স্পিন আক্রমণে সবচেয়ে অভিজ্ঞ জাডেজা। দুবাইয়ের পিচে যদি স্পিনারেরা সাহায্য না পান, তা হলেও জাডেজা বড় ভূমিকা নেবেন। তিনি ক্রমাগত উইকেট লক্ষ্য করে বল করে যেতে পারেন। সেটাই তাঁকে সব ধরনের পিচে ভয়ঙ্কর করে তোলে। মাঝের ওভারে জাডেজার সেই আক্রমণ সামলাতে হতে পারে বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমকে। বাংলাদেশের ব্যাটার স্পিনের বিরুদ্ধে বরাবর ভাল খেলেন। ফলে জাডেজাদের সামলানোর জন্য বাংলাদেশ মুশফিকুরকে ব্যবহার করতে পারে।
আরও পড়ুন:
শামি বনাম সৌম্য
বাংলাদেশের ওপেনার সৌম্য সরকারের সঙ্গে মহম্মদ শামির লড়াইয়ের দিকেও নজর থাকবে। নতুন বল হাতে শুরু করবেন শামি। ২০২৩ সালের এক দিনের বিশ্বকাপে তিনিই ছিলেন সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়া বোলার। আরও এক বার একটি আইসিসি প্রতিযোগিতায় নামতে চলেছেন শামি। যদিও চোট সারিয়ে ফেরার পর এখনও শামিকে পুরনো ফর্মে দেখা যায়নি। তবে বাঁহাতি ব্যাটারদের বিরুদ্ধে শামি যথেষ্ট ভয়ঙ্কর। বাংলাদেশের ওপেনার সৌম্য সরকারকে তাই সামলে খেলতে হবে। শুরুতেই উইকেট হারাতে চাইবে না বাংলাদেশ। সেটার জন্য সৌম্যকে বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে।