তখন যুযুধান। রুট ও ওয়ার্নার।
ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে কুখ্যাত ঘুষিটা মেরেছিলেন তিনি। দু’বছর পরে সেই ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন ডেভিড ওয়ার্নার। কিছুটা কাকতালীয় ভাবে, অ্যাসেজ শুরুর দিনকয়েক আগে।
৯ জুন, ২০১৩ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচে এজবাস্টনে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছিল ইংল্যান্ড। সেই রাতে বার্মিংহ্যামের ‘ওয়াকঅ্যাবাউট’ বারে ইংল্যান্ডের জো রুটকে সজোরে ঘুষি মেরে বসেন অস্ট্রেলীয় ওপেনার ওয়ার্নার। রুটের থুতনিতে অস্ট্রেলীয় পরচুলা পরা নাকি তাঁর পছন্দ হয়নি। তাঁর হাবভাব দেখে ওয়ার্নারের মনে হয়েছিল, দক্ষিণ আফ্রিকার হাসিম আমলাকে নকল করছিলেন তিনি। তবে ওয়ার্নার তখন বিশেষ কিছু না বলায় ব্যাপারটা জল্পনার স্তরেই থেকে গিয়েছিল। এ দিন অবশ্য ওয়ার্নার বললেন, রুট যে ভাবে থুতনিতে নকল দাড়ি পরে ঘুরছিলেন, সেটা তাঁর বর্ণবৈষম্যমূলক বলে মনে হয়েছিল। শুধু তাই নয়, অস্ট্রেলীয় ওপেনার আরও জানালেন যে, সেই রাত শেষ হওয়ার আগে নাকি ইংরেজ পেসার স্টিভন ফিনের ঠিকানা ছিল নর্দমা! সেখানেই নাকি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন ফিন!
‘‘হোটেলের বারে আমরা কয়েক জন বসে ছিলাম। হঠাৎ সবাই মিলে ঠিক করলাম, কাছের বারে গিয়ে একটু মদ্যপান করব। সবাই বেরিয়ে পড়লাম। আইসিসির কয়েক জনও আমাদের সঙ্গে ছিল। তবে ওই নির্দিষ্ট বারে যাওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ ছিল, ওটা হোটেলের কাছে,’’ এ দিন সিডনি মর্নিং হেরাল্ডকে বলেছেন ওয়ার্নার। ‘ওয়াকঅ্যাবাউট’ বারে পৌঁছনোর পর সেখানকার প্রাইভেট একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয় অস্ট্রেলীয়দের।
তার মধ্যে সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ড টিমের কিছু সদস্য-সহ ইংল্যান্ডের রুট, ফিন এবং স্টুয়ার্ট ব্রড। ‘‘একটা জায়গা আমাদের জন্য আলাদা করে দেওয়া হয়েছিল। ব্রডরাও সেখানে ঢুকে পড়ল। তখন রাত প্রায় দেড়টা। ওরা আমাদের গ্রুপের অংশ ছিল না। ব্যাপারটা এ ভাবেও দেখতে পারেন যে, আমি ওদের ওখান থেকে চলে যেতে বলার চেষ্টা করছিলাম,’’ বলেছেন ওয়ার্নার। তাঁর দাবি, গোটা রাতই নাকি ব্রডদের কাজকর্মে তিনি বিরক্ত হচ্ছিলেন। রুট সোনালি-সবুজ পরচুলা পরায় সহ্যের শেষ সীমা পেরিয়ে যান তিনি।
‘‘আমার একজন বন্ধুই প্রথমে ওই পরচুলাটা মাথায় পরে লাসিথ মালিঙ্গার হাবভাব নকল করছিল। রুট হঠাৎ করে ওর মাথা থেকে উইগটা খুলে থুতনিতে পরে ফেলল। লোকে মদ্যপ অবস্থায় এ রকম করে, তবু আমার মনে হয়েছিল ও যা করছে তা ঠিক নয়। তাই আমি গেলাম উইগটা ওর কাছ থেকে নিতে,’’ বলে ওয়ার্নার আরও যোগ করেছেন, ‘‘এখনকার সমাজে এ সব নিয়ে ইয়ার্কি মারাটা উচিত নয়। রুট হয়তো ইচ্ছে করে কিছু করেনি। কিন্তু আমার এটাই মনে হয়েছিল। মনে হয় আমার আগ্রাসন আর মদ আমাকে গিলে ফেলেছিল।’’
তাঁর সতীর্থ ক্লিন্ট ম্যাককে তাঁকে রুটের কাছ থেকে সরিয়ে আনেন। বার ছেড়ে বেরনোর সময় ওয়ার্নার দেখেন, নর্দমায় শুয়ে ঘুমোচ্ছেন ফিন। ‘‘পরের দিন সকালে রুটকে টেক্সট করেছিলাম। ব্যাপারটা ওখানেই মিটে গিয়েছিল,’’ বলছেন ওয়ার্নার। সেই সময় ইংল্যান্ড বোর্ড বিবৃতিতে জানিয়েছিল, ঘটনার জন্য দায়ী নন রুট। তার পর জাতীয় টিম থেকে নির্বাসিত হন ওয়ার্নার। মদ্যপানও ছেড়ে দেন।
এ দিকে, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর অপরাধে জরিমানার মুখে জেমস ফকনার। অস্ট্রেলীয় অলরাউন্ডার ল্যাঙ্কাশায়ারে খেলার সময় মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালান। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াও তাঁকে জরিমানা করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy