ছেলেমেয়ের সঙ্গে খোশমেজাজে ডার্বির নায়ক। সোমবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
ইস্টবেঙ্গল এবং ইলিশ মাছ সমার্থক জানতেন।
অভিষেক ডার্বিতেই জোড়া গোলের পর এক লাল-হলুদ সমর্থক জোড়া ইলিশ উপহার দিয়ে গিয়েছিলেন। প্রথমবার সেই মাছ খেয়েই বাগান-জয় সেলিব্রেশন করলেন র্যান্টি মার্টিন্স। স্ত্রী এবং ছেলে-মেয়েকে নিয়ে।
র্যান্টির আমন্ত্রণেই সোমবার দুপুরে বাইপাসের ধারে তাঁর ফ্ল্যাটে এসেছিলেন সতীর্থ এবং স্বদেশীয় ডুডু ওমেগাগামি। তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে মজা করেই র্যান্টি বললেন, “জীবনের প্রথম ডার্বিতেই গোল পেয়েছি। সেই সেলিব্রেশনটাও তাই স্পেশ্যাল হওয়ার দরকার ছ্লি। সে জন্য না হয় প্রথম বার ইলিশ খেয়েই ডার্বি জয় সেলিব্রেট করলাম!” শুধু ইলিশ মাছ খাওয়াই নয়, ডার্বির ‘হ্যাঙ্গওভার’ কাটাতে বিকেলে ডুডুকে নিয়ে ঘুরতেও বেরিয়ে পড়লেন রবিবারের ডার্বি জয়ের নায়ক। মঙ্গলবার থেকে আবার প্র্যাকটিস শুরু হয়ে যাচ্ছে। তাই এক দিনের ছুটি চুটিয়ে উপভোগ করতেই স্ত্রী এবং বন্ধুদের নিয়ে সেলিব্রেশনে মাতলেন র্যান্টি-ডুডু।
ছুটি উপভোগ করার পরদিন থেকেই যে নতুন লক্ষ্যে দুই নাইজিরিয়ান নেমে পড়বেন তা অবশ্য জানিয়ে দিলেন এ দিনই। “ডার্বি জেতা নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। লাল-হলুদ জার্সিতে ডার্বি ম্যাচ খেলতে নামার আগে থেকেই জানতাম, সমর্থকদের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে এই ম্যাচের সঙ্গে। তবে ডার্বি জেতার পাশাপাশি আমাদের ট্রফিও জেতা দরকার। আর তার জন্য মঙ্গলবার থেকে আবার ডার্বি ভুলে নতুন লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমে পড়তে হবে সবাইকে।” র্যান্টি এ কথা বলার পর তার পাশে দাঁড়িয়ে স্বদেশী ডুডু যোগ করেন, “ডার্বিকে অতীত করে এখন আমাদের কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য ঝাঁপাতে হবে। খেতাব না জিতলে ডার্বি জয়ের আনন্দটাই পাওয়া যাবে না।”
আইএসএলে খেলবেন লাল-হলুদের গুরুত্বপূর্ণ ১৬ ফুটবলার। তাদের আর কলকাতা লিগে পাওয়া যাবে না। এঁদের না থাকাটা বড় সমস্যা মনে করেছেন র্যান্টি। এ জন্য অবশ্য তাঁদের মতো সিনিয়র যাঁরা থাকছেন, তাঁদের বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে বলে জানিয়ে দিলেন। র্যান্টির দায়িত্ববোধ বোঝা গেল যখন তিনি বললেন, “খুব অল্পের জন্য বারবার গোলের সুযোগ নষ্ট করছিলাম। বল পোস্টে লাগছিল, নয়তো ক্রসপিসে। তাই অনুশীলনের পর আলাদা শুটিং প্র্যাকটিস করতাম।” তিনি গোল না পেলে দল যে সমস্যায় পড়তে পারে, সেটা বুঝেই এই বাড়তি তাগিদ কাজ করেছিল। শুধু র্যান্টি কেন, ডুডুও তো টিমের কথা ভেবেই রবিবার ১৮ জনের দলে থাকতে রাজি হয়েছিলেন। শুক্রবার শহরে পৌঁছে মাত্র একদিন অনুশীলন করেই ডার্বি খেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ ছিল না। তা স্বীকার করে নিয়ে ডুডু বললেন, “শনিবার কোচ জানতে চান, আমি খেলতে পারব কি না? ওঁকে বললাম, আমি ক্লান্ত। শুনেছিলাম, আগের ম্যাচে ভাল ফল না করায় চাপে রয়েছে টিম। তাই অ্যালভিটো যখন আবার ফোন করে জানতে চাইল ১৮ জনের দলে আমাকে রাখবে কি না, তখন দলের কথা ভেবে না করতে পারিনি।”
ডার্বি জয়ের পাশাপাশি লাল-হলুদ সমর্থকরা তাকিয়ে রয়েছেন, বহুদিন অধরা আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দিকে। ডুডু-র্যান্টি জুটি এ বছর তাঁদের নতুন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছে। তবে তাঁদের দু’জনেরই দাবি, “শুধুমাত্র আমরা দু’জন মিলে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন করতে পারব না দলকে। এর জন্য চাই টিম গেম।”
র্যান্টিরা যখন ডার্বি সেলিব্রেশন করছেন তখন তাদের কোচ আর্মান্দো কোলাসো চলে গিয়েছেন গোয়ার বাড়িতে। সোমবার কাক ভোরে গিয়ে ফিরলেন বেশি রাতে। গোয়া থেকে ফোনে বললেন, “আই এস এলে ফুটবলাররা চলে যাবে ধরে নিয়েই জুনিয়রদের আমি তৈরি করছি। সেটা এ বার কাজে লাগবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy