Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
রিভার্স সুইং

ঠিক সময়ে সেরা ফর্ম আমদানি করছে ধোনিরা

আধুনিক বিশ্বকাপের সৌন্দর্য হল, এখানে সব সময় উদ্ভাবনী, সৃষ্টিশীল ক্রিকেটের প্রত্যাশা করা যায়। আমরা সত্তর বা আশির দশকে যা করার কথা কল্পনাও করতে পারতাম না, আধুনিক ক্রিকেটাররা সেগুলো করে চলেছে। আমরা বেশি কায়দা করে কিছু করতে গিয়ে ব্যর্থ হলে বকুনি খেতে হত। কিন্তু আজকালকার প্লেয়াররা প্রচণ্ড ঝুঁকি নিয়ে ক্রিকেট খেলে। সফল হলে যার পুরস্কার প্রচুর।

রিচার্ড হ্যাডলি
শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৫ ০২:৫৭
Share: Save:

আধুনিক বিশ্বকাপের সৌন্দর্য হল, এখানে সব সময় উদ্ভাবনী, সৃষ্টিশীল ক্রিকেটের প্রত্যাশা করা যায়। আমরা সত্তর বা আশির দশকে যা করার কথা কল্পনাও করতে পারতাম না, আধুনিক ক্রিকেটাররা সেগুলো করে চলেছে। আমরা বেশি কায়দা করে কিছু করতে গিয়ে ব্যর্থ হলে বকুনি খেতে হত। কিন্তু আজকালকার প্লেয়াররা প্রচণ্ড ঝুঁকি নিয়ে ক্রিকেট খেলে। সফল হলে যার পুরস্কার প্রচুর। আমার মনে হয় আগেকার প্লেয়ারদের চেয়ে এখনকার ক্রিকেটাররা অনেক বেশি প্রতিভাবান।

কোনও ব্যাটসম্যানকে র্যাম্প শট খেলতে দেখা বা মাথার উপর দিয়ে বল স্কুপ করে ছয় মারা আমার প্রচণ্ড আকর্ষক লাগে। রিভার্স সুইপ, সুইচ শট, পিছিয়ে গিয়ে কভারের উপর দিয়ে শট মারা বা অফস্টাম্পের বাইরে গিয়ে লেগ সাইডের যে কোনও দিকে শট নেওয়া এগুলো করার জন্য প্রতিভা আর আত্মবিশ্বাস দরকার।

তার পর পেসারদের অস্ত্রশালাটা দেখুন। কত রকম ডেলিভারে এখন ওদের হাতে। ওদের তিন-চার রকম স্লোয়ার আছে। আমার ছিল দুটো! তা ছাড়া স্পিনারদেরও তো সফল হওয়ার কথা। ওদের এত সূক্ষ্ন বৈচিত্র আছে। তার উপর বলের গতি কমিয়ে ওরা ব্যাটসম্যানদের বাধ্য করে ক্লোজ ফিল্ডারদের হাতে ক্যাচ তুলতে। আসলে ভাল জাতের স্পিনাররা যে কোনও জায়গাতেই সফল হবে।

আর এখনকার ফিল্ডিং তো দুর্দান্ত! আগেকার চেয়ে আধুনিক ফিল্ডাররা অনেক বেশি ফিট আর ক্ষিপ্র। ওরা যে একটা রান বাঁচাতেও নিজেদের শরীর নিয়ে ঝুঁকি নেয়, হার-জিতের মধ্যে সেটাই পার্থক্য গড়ে দেয়। এই যে দেখি বাউন্ডারির কয়েক সেন্টিমিটার ভেতরে দাঁড়িয়ে একজন ক্যাচ নিচ্ছে, তার পর সেটা হাওয়ায় ছুড়ে দিয়ে নিজে বাউন্ডারি পেরোচ্ছে, তার পর আবার মাঠের ভেতর ঢুকে বলটা ধরে ফেলছে এটাকে অবিশ্বাস্য ছাড়া কী বলব বলুন?

যাই হোক, বিশ্বকাপের এই পর্যায় নানা রকম অজানা ফ্যাক্টর টিমদের ভয় ধরিয়ে দিতে পারে। যেমন ধরুন নিচু র্যাঙ্কিংয়ের একটা টিমের বিরুদ্ধে ম্যাচ বৃষ্টির জন্য ডাকওয়ার্থ-লুইস নিয়মের আওতায় চলে গেল। যার জন্য ফেভারিট টিমটা গুরুত্বপূর্ণ একটা পয়েন্ট হারাল। বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়া ম্যাচ বা বিপজ্জনক উইকেটে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নামা এগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। বাংলাদেশ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া যার সামনে পড়ল। অনেক প্লেয়াররা এর মধ্যে চোট সমস্যাতেও ভুগছে। সিনিয়রদের ফর্মে না থাকা, চোট বা অন্যান্য পরিস্থিতি ২০১৫-র বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ঠিক করে দিতে পারে।

আমরা এখন টুর্নামেন্টের মাঝের পর্বে আছি। গ্রুপ ‘বি’র শীর্ষে থেকে শেষ করা ভারতের জন্য প্রায় নিশ্চিত। ওরা দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলছে। প্রথম চারটে ম্যাচে চারটে দারুণ জয়। একদম ঠিক সময় সেরা ফর্মে এসেছে ভারত। আশা করব গ্রুপে অপরাজিত থাকবে মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরা। ওদের পেসাররা ভাল খেলছে। আর বোলিং আক্রমণে জরুরি ভারসাম্য আনছে রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচে ওদের টার্গেট খুব বেশি না হলেও দ্রুত উইকেট হারিয়ে একটা সময় বিপদে পড়ে গিয়েছিল ভারত। কিন্তু ক্যাপ্টেন এমএস ধোনি দায়িত্ব নিয়ে ওই অবস্থা থেকে দলকে বাঁচাল। ভারতকে দেখে মনে হচ্ছে টিমটার ফোকাস ঠিকঠাক আছে। অস্ট্রেলিয়ার মাঠে সাম্প্রতিকের খারাপ স্মৃতিগুলোও মন থেকে মুছে ফেলেছে। পিঠোপিঠি দুটো বিশ্বকাপ জেতার ব্যাপারে ভারতের ভাল আগ্রহ আছে মনে হচ্ছে।

আশা করছি টুর্নামেন্টটা ন্যায্য প্রতিদ্বন্দ্বিতার সঙ্গে খেলা হবে। আমি প্লেয়ারদের মধ্যে ঝামেলা বা কথা কাটাকাটি একদম দেখতে চাই না। মাঠ আর মাঠের বাইরে আজকাল এ রকম ঘটনা বড্ড বেশি ঘটছে। এ সব ফালতু জিনিসের কোনও জায়গা নেই ক্রিকেট খেলাটায়। বরং দেখা উচিত যাতে সব সময় ক্রিকেটের স্পিরিট অক্ষুণ্ণ থাকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

world cup 2015 richard hadlee india cricket team
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE