Advertisement
E-Paper

প্রোদুনোভাকে বিখ্যাত করতে পারাই ‘পদক’ দীপার

রাজ্য সরকারের সম্মান প্রদান অনুষ্ঠানে এসে মুখ্যমন্ত্রীকে কী বলছিলেন দীপা কর্মকার এবং তাঁর দ্রোণাচার্য কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দী? কিছুক্ষণের মধ্যেই তা ফাঁস করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং।

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৫৫
মুখ্যমন্ত্রীর দীপা-বরণ। সোমবার নেতাজি ইন্ডোরে।-নিজস্ব চিত্র

মুখ্যমন্ত্রীর দীপা-বরণ। সোমবার নেতাজি ইন্ডোরে।-নিজস্ব চিত্র

রাজ্য সরকারের সম্মান প্রদান অনুষ্ঠানে এসে মুখ্যমন্ত্রীকে কী বলছিলেন দীপা কর্মকার এবং তাঁর দ্রোণাচার্য কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দী? কিছুক্ষণের মধ্যেই তা ফাঁস করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। ‘‘এখন দেশের সেরা মেয়ে জিমন্যাস্টরা তো শুনছি সব বাংলার। ওঁরা একটা জিমন্যাস্টিক্স অ্যাকাডেমির কথা বলছিলেন। করুন না, আমরা সব সাহায্য করব।’’

দিল্লির জাতীয় শিবির থেকে এক দিনের ছুটিতে পুরষ্কার নিতে এসেছিলেন রিও অলিম্পিক্সে ইতিহাস তৈরি করা ত্রিপুরার মেয়ে। নিজেকে যিনি বঙ্গললনা বলতেই বেশি ভালবাসেন। সোমবার রাজ্য সরকারের অনুষ্ঠানে দীপা কর্মকারই ছিলেন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে। তাঁর সঙ্গে সেলফি তোলার জন্য বা কথা বলার জন্য হুড়োহুড়ি লেগেই থাকল।

অনুষ্ঠান থেকে ফিরে মধ্য কলকাতার হোটেলে বসে একান্তে সাক্ষাৎকার দিতে বসে দীপা বলছিলেন, ‘‘আগরতলায় বড় হলেও আমি নিজেকে বাঙালিই ভাবি। তাই এই সম্মানাটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’’ সচিন তেন্ডুলকরের হাত থেকে নিয়েছিলেন বিএমডব্লিউ গাড়ি। সোনার মুকুট, সোনার অলঙ্কারের সঙ্গে ত্রিপুরা-সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে নানা সম্মান। সব মাথায় রেখেও দীপার মন্তব্য, ‘‘এখন আমরা জাতীয় শিবিরে যে আটজন রয়েছি তাদের মধ্যে আমাকে ধরলে সাত জনই তো বাংলার। বাংলার একটা অ্যাকাডেমি হলে আরও মেয়ে উঠে আসবে।’’ দীপার হাতে এ দিন মমতা তুলে দেন পাঁচ লাখ টাকার চেক। তাঁর কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দীকে রাজ্য সরকার দিল এক লাখ টাকা।

সামনে বিশ্ব ও এশীয় চ্যাম্পিয়নশিপ রয়েছে। প্রত্যাশার চাপ বেড়েছে কি না জানতে চাইলে দেশের সেরা মেয়ে জিমন্যাস্ট বলে দেন, ‘‘চাপ নেই। জিমন্যাস্টিক্স এমন একটা খেলা যে, যখন-তখন চোট হতে পারে। পদক পাব ভেবে কখনও বিমে নামি না। সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করে যাব। তারপর যা হয় হবে।’’ এতদিন যেটা প্রকাশ্যে আনেননি, সেটাও স্বীকার করে নেন সোমবার বিকেলে। ‘‘বিশ্বাস করুন, রিও-তে ব্রোঞ্জ হাতছাড়া হওয়ার পর হোটেলে ফিরে কেঁদেছিলাম ঠিক। পরে ভেবেছি, অলিম্পিক্সে চতুর্থ হয়েছি। দুঃখ করব কেন? কারণ আট থেকে আমি চারে উঠেছি। যারা আমার সঙ্গে নেমেছিল তাদের সবাই আমার চেয়ে এগিয়েছিল। আমি তো মাত্র তিন মাস অনুশীলন করে নেমেছিলাম।’’

আরও পড়ুন-

অটোচালকের সংসারে আলো আনল ক্রিকেট

অক্টোবরে মন্ট্রিওল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ। সেখানেই পদকের জন্য চোখ রাখছেন। ‘‘অলিম্পিক্সে যে সোনা জিতেছিল সেই সিমোন বাইলস বিশ্ব প্রতিযোগিতায় নামবে না। তবে অনেক নতুন মেয়ে উঠে আসছে খবর পাচ্ছি। সবার দিকে নজর রাখছি ইউ টিউবের মাধ্যমে।’’

রিওতে দীপার প্রোদুনোভা ভল্ট দেখার জন্য সারা দেশ রাত জেগেছিল। দীপা বলছিলেন, ‘‘আমি প্রোদুনোভা ভল্ট করি বলে প্রোদুনোভা শব্দটা এখন সবার রান্নাঘরে ঢুকে পড়েছে। লোকে জিমন্যাস্টিক্স নিয়ে খোঁজ করার চেয়ে প্রোদুনোভা নিয়েই বেশি জানতে চায়। আমার আনন্দ হয় এটা ভেবে যে প্রোদুনোভা নামটাকে আমাদের দেশে জনপ্রিয় করতে পেরেছি।’’

আগের মতোই আইসক্রিম, ফাস্ট ফুড বা কোল্ড ড্রিঙ্ক নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দিয়েছেন তাঁর কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দী। সব অনুষ্ঠানে যাওয়া বাতিল। এ দিনই দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে ‘মহিলা দিবস’-এ তাঁকে শুভেচ্ছা দূত করার আবেদন এসেছিল। কিন্তু দীপার কোচ ফোনেই তা পত্রপাঠ বাতিল করে দিলেন।

বিশ্ব মঞ্চে পদক এখনও অধরা। ঘণ্টা খানেক তাঁকে দেখে মনে হল, পদক এবং পদক— এই মোক্ষ নিয়েই জীবন বাজি রাখতে তৈরি দীপা কর্মকার।

Dipa Karmakar Mamata Banerjee Produnova vault
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy