বিরোধীদের অনুরোধে লোকসভায় পিছিয়ে গেল জাতীয় ক্রীড়া প্রশাসন বিল নিয়ে আলোচনা। বুধবার থেকে ওই বিল নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা থাকলেও, বিরোধীরা বাদল অধিবেশনের শেষসপ্তাহে বিলটি নিয়ে আলোচনার করার পক্ষপাতী। গত ২৩ জুলাই পেশ হওয়া ওই বিলে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে তথ্যের অধিকার আইনের আওতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কিন্তু সংশোধনী পেশ করে সরকার জানিয়েছে, আপাতত তথ্যের অধিকার আইনের বাইরে থাকবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।
যে সিদ্ধান্তকে অনেকেই ভারতীয় বোর্ডের কাছে সাময়িক স্বস্তিদায়ক বলে মনে করছেন। তথ্যের অধিকার আইনের আওতায় আসা নিয়ে এর আগেও প্রতিবাদ জানিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। তাদের বক্তব্য ছিল, অন্যান্য অনেক ক্রীড়া সংস্থার মতোভারতীয় বোর্ড সরকারি অনুদানের উপরে নির্ভরশীল নয়। যে কারণে তথ্যের অধিকারের আইনের আওতায় বোর্ডকে আনা ঠিক নয়।
ভারতীয় বোর্ডের সঙ্গে যুক্ত কেউ কেউ মনে করেন, এই সংশোধনীর পরে বোর্ডের আর চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। আবার সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে এক সূত্র বলেছে, ‘‘সংশোধনীতে পরিষ্কার ব্যাখ্যা করে দেওয়া হয়েছে, কারা সরকারি তহবিল আর সাহায্যের উপরে নির্ভর করে আছে। যদি এটা না করা হত, তা হলে অনেক ধূসর জায়গা থেকে যেত। যা নিয়ে পরে আদালতে প্রশ্ন তোলার জায়গা থাকত। বিলটিও আটকে যেতে পারত।’’
তবে সেই সূত্রটি আরও বলেছে, ‘‘কোনও জাতীয় ক্রীড়া সংস্থা যদি সরকারের থেকে আর্থিক সাহায্য নাও নেয়, তা হলেও তাদের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলার জায়গা থাকে। যদি সেই সংস্থা কোনও রকমের সরকারি সাহায্য নিয়ে থাকে। সরকারি সাহায্য শুধু আর্থিক হয় না,পরিকাঠামোগতও হয়।’’
গোড়ায় ওই বিলে ক্রিকেট বোর্ডকে তথ্যের অধিকার আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছিল। প্রথমে ঠিক হয়েছিল দেশের সবক’টি ক্রীড়া সংস্থাকে তথ্যের অধিকার আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। কিন্তু পরে ওই বিলে একটি সংশোধনী আনেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী মনসুখ মান্ডবীয়। যাতে বলা হয়েছে, যে সমস্ত ক্রীড়া সংস্থা সরকারি অর্থ সাহায্য পেয়ে থাকে তাদেরই শুধু তথ্যের অধিকার আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। পাশাপাশি ওই বিল পাশ হলে ক্রীড়া প্রশাসকেরা ৭০ বছরের পরিবর্তে ৭৫ বছর পর্যন্ত ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচনে লড়তে পারবেন।
বিহারের ভোটার তালিকা সংশোধনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনার দাবিতে সংসদের উভয় কক্ষে সরব বিরোধীরা। এ দিন হট্টগোলের মধ্যে জাতীয় ক্রীড়া প্রশাসন বিল পাশ করিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল শাসক শিবির। কিন্তু বিরোধীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ওই বিলের বিষয়বস্তু গুরুত্বপূর্ণ। দেশের স্বার্থে এ নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।
তৃণমূলের লোকসভার মুখ্য সচেতক কাকলি ঘোষদস্তিদার বলেন, ‘‘বিলটিতে খেলাধুলোয় হওয়া ডোপিং-এর মতো বিষয় রয়েছে। এ ছাড়া ক্রীড়া ক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের বিষয় নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।’’ এর পরে আলোচনা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার পক্ষ।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)