ছয়ে ছয়ের উৎসবে মাতোয়ারা ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা। সোমবার ক্লাব তাঁবুতে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
যুবভারতী জুড়ে রবিবার বিকেলে নিজের ছবির অসংখ্য কাটআউট আর তাঁকে ঘিরে লাল-হলুদ জনতার আবেগ দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন তরুণ কোরিয়ান মিডিও!
ডার্বির আঠারো ঘণ্টা পর সোমবার সকালে যখন ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে পা দিচ্ছেন, তখনও লাল-হলুদের নতুন পোস্টারবয়ের ঘোর যেন কাটেনি! সকালে ঘুম ভাঙার পর থেকেই মাথায় শুধু ঘুরপাক খেয়েছে ডার্বি জয়ের সঙ্গেই হেক্সা লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রঙিন মুহূর্তগুলো।
রবিবারের মতোই সোমবারও ডংয়ের পিছনে জনস্রোত। ক্লাবের সামনে গাড়ি থেকে নামার পরই তাঁকে ঘিরে শুরু হয়ে যায় সদস্য-সমর্থকদের গ্যাংনাম নাচ। ওটাই যে লাল-হলুদ জনতার নতুন নায়কের প্রিয় নাচ। আবিরে-মালায় বরণের পর কার্যত মানুষের কাঁধে চেপে ক্লাব তাঁবু পর্যন্ত গেলেন ডং। পতাকা তোলার সময়ও র্যান্টি, মেহতাবদের ছেড়ে উন্মাদনার কেন্দ্রে ডং। ভালবাসার অত্যাচারে এক মুহূর্তের জন্যও মুখের হাসি মেলায়নি বিদেশির। বরং তাঁকে বেশ উচ্ছ্বসিত হয়েই বলতে শোনা গেল, ‘‘গ্যালারি জুড়ে কাটআউট দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল নিজের ঘরের মাঠে খেলছি। এত জায়গায় খেলেছি, কিন্তু এ রকম উচ্ছ্বাস আর আবেগ কোথাও দেখিনি।’’
একশো দিন আগে গোষ্ঠ পালের মূর্তি থেকে ইডেনের পাশ দিয়ে যাওয়া ডান দিকের রাস্তাটা উচ্ছ্বাস, আবেগের সবুজ-মেরুন রংয়ে রঙিন হয়ে গিয়েছিল। এ দিন তার একেবারে উল্টো ছবি। বাঁ দিকে লেসলি ক্লডিয়াস সরণিতে শুধুই লাল-হলুদ জনতার মিছিল। উচ্ছ্বাসের বাঁধভাঙা ঢেউ আছড়ে পড়তে দেখা গেল ক্লাব তাঁবুতে। আবির, মশাল নিয়ে নাচ, মিষ্টি বিতরণ—সব মিলিয়ে দেড় মাস আগেই দুর্গোৎসব শুরু ইস্টবেঙ্গলে!
বাগান তাঁবুতে আই লিগ ঢোকার পর থেকেই যন্ত্রণাটা বুকে বয়ে বেড়াতেন শুধু ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরাই নন, ফুটবলাররাও। রবিবার সেই যন্ত্রণায় কিছুটা হলেও মলম পড়ল। হেক্সা লিগ জয়ের প্রত্যেক বছর যিনি ছিলেন টিমের সঙ্গী সেই সৌমিক দে বলছিলেন, ‘‘মোহনবাগানের আই লিগ জয়টা আমাদের যন্ত্রণা বাড়িয়ে দিয়েছিল। সে জন্য ডার্বি সঙ্গে সঙ্গে কলকাতা লিগ জেতাটা আমাদের কাছে আলাদা চ্যালেঞ্জ ছিল।’’
এর পরে টানা ছ’বার কলকাতা লিগের রেকর্ড হয়তো ছাপিয়ে যাবে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু আই লিগ যে এখনও অধরাই! কলকাতা লিগ জয়ের আনন্দের মাঝেও এটা বড় আফসোস লাল-হলুদ ব্রিগেডের। সৌমিকের মতো টানা ছ’বারের প্রতিবারের টিমের সদস্য ছিলেন মেহতাবও। বললেন, ‘‘আমরা সেরা ছন্দে থেকেও অল্পের জন্য আই লিগ মিস করেছি বারবার। সেই আক্ষেপটা এ বার মেটাতে হবে।’’ ডং আবার কলকাতা লিগের আসল সেলিব্রেশনটা তুলে রাখতে চাইছেন আই লিগের জন্য। ‘‘আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হলে মা, বাবা, বান্ধবী সবাইকে এখানে নিয়ে এসে সেলিব্রেট করব। আমার বান্ধবী ফোন করেছিল। আমি দু’টো গোল করেছি এবং টিম চ্যাম্পিয়ন হয়েছে শুনে দারুণ খুশি।’’
ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে ফুটবলাররা সবাই মিলে এ দিন ক্লাব পতাকা উত্তোলন করেন। অনেকেই এ বার চলে যাবেন আইএসএলের টিমগুলোতে। সে জন্য পতাকা তোলাটা এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সেরে ফেলার ব্যবস্থা করেছিলেন কর্তারা। সেখানেই নতুন স্বপ্নের কথা বলে যান র্যান্টি। ‘‘যে টিম ইতিহাস তৈরি করেছে, সেই টিমের সদস্য হতে পেরে আমি গর্বিত। তবে এখন থেকে আমাদের আই লিগের জন্য তৈরি হতে হবে। আমার দেখা ভারতে খেলতে আসা সেরা বিদেশিদের তালিকায় এখনই ডংকে রাখব না। তবে আই লিগে ডংয়ের সঙ্গে আমার জুটিটা জমবে বলেই মনে হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy