প্রশ্ন: লিগ হাতছাড়া, তাও এত চনমনে লাগছে আপনাকে? রসায়নটা কী?
ডুডু: ডুডু এ রকমই। সব ম্যাচের আগে নিজেকে চনমনে না রাখলে গোল করব কী করে! জিততে গেলে খুশি মনে থাকতে হয়। তার পর আবার দু’দিন পর ডার্বি। ওটা তো জিততে হবে।
প্র: প্র্যাকটিসের আগে হঠাৎ দেখা গেল আপনি রোলারে উঠে পড়লেন। চালাতেও শুরু করলেন। ইস্টবেঙ্গলের উপরও কি ডুডু-রোলার চলবে রবিবার?
ডুডু: (হো হো করে হেসে) আরে না না, ও রকম কিছু নয়। ইস্টবেঙ্গলকে আমি একা নই, সবাই মিলে হারাতে চাইছি! নিজেকে আর সতীর্থদের উজ্জীবিত করার জন্য আমি তো এ রকম মজা করেই থাকি। জাস্ট আ ফান। দেখলেন না লালকমল, সুখেনরা কেমন লাফ মেরে ওই রোলারের উপরে উঠে পড়ল। এ ভাবেই তো ম্যাচের আগে নিজে চাপমুক্ত থাকি। আর টিমের সিনিয়র হিসেবে বাকিদেরও চাপমুক্ত করাটা আমার কাজ মনে করি।
প্র: কলকাতা লিগ তো হাতছাড়া। ডার্বিতে পুরনো ক্লাবের বিরুদ্ধে তা হলে মোটিভেশন কী?
ডুডু: আরে ডার্বি জেতাটাই তো পুরো টিমের কাছে মোটিভেশন। ইস্টবেঙ্গলকে হারাতে পারলে কলকাতা লিগ না পাওয়ার আফসোসটা থাকবে না। কোচও বলেছেন, ডার্বি জিতলেই সমর্থকদের মুখে হাসি ফুটবে। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য এখন রবিবারের ম্যাচ জেতা। আর ডার্বি না জিতে লিগ পেলেও তার দাম কমে যায়। সেই চেষ্টাটা করছি।
প্র: এ বার র্যান্টিকে পাশে পাবেন না। বরং ডার্বির লড়াই হয়ে যেতে পারে এ বার ডুডু বনাম র্যান্টি।
ডুডু: আমরা দু’জনেই পেশাদার ফুটবলার। তাই ডার্বির নব্বই মিনিট র্যান্টি আমার শত্রু। ম্যাচের পর আবার আমরা বন্ধু। আমি তো চাইব, রবিবার র্যান্টি যেন গোল না করে।
প্র: ডু ডং তো একাই সবাইকে হারিয়ে দিচ্ছেন? এ বার লিগে গোল করার ব্যাপারেও তো আপনাকে পিছনে ফেলে দিলেন। সব ম্যাচেই গোল পাচ্ছেন। ডংকে নিশ্চয়ই ভয় পাচ্ছেন?
ডুডু: রবিবারই বোঝা যাবে ডং কত বড় ফুটবলার! এখনও তো ও মোহনবাগানের বিরুদ্ধে খেলেনি। আগে খেলতে দিন। আমি কিন্তু এখনও ডংয়ের চেয়ে র্যান্টিকেই বেশি নম্বর দিচ্ছি।
প্র: ও তো কথার কথা। আসল কথাটা বলুন। ডংকে আটকানোর ক্ষমতা আপনার ডিফেন্সের আছে? যা সব গোল খাচ্ছে!
ডুডু: আপনার সঙ্গে একমত হচ্ছি না। আমাদের চেয়ে ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্স কিন্তু বেশি গোল খেয়েছে। ডং নিয়ে এত হইচই হচ্ছে। ওদের ডিফেন্স ডুডুকে আটকাক। আমরা টিম গেম খেলছি। আমাদের রক্ষণ অন্তত ইস্টবেঙ্গলের চেয়ে ভাল খেলছে। ডং আমাদের রক্ষণে কিছু করতে পারবে না। দেখে নেবেন, আমরা বরং ওদের রক্ষণ ভাঙব।
প্রশ্ন: কাতসুমির মতো পাসার নেই। এটা তো আপনার পক্ষে অসুবিধা?
ডুডু: কোচ কাকে খেলাবেন জানি না। কাতসুমি খেলবে কী না বলা সম্ভব নয়। তবে আমার পাশে আজহারউদ্দিন বলে যে ছেলেটা খেলছে সে যথেষ্ট ভাল। কেন লুইসও গোল পাচ্ছে, ভাল পাস বাড়াচ্ছে। পঙ্কজ মৌলা বেশ ভাল। আসলে তরুণ-ব্রিগেড আমাদের অনেক শক্তিশালী করেছে। সমস্যা নেই।
প্র: ডুডুর কাছে কি রবিবারের ডার্বি ইস্টবেঙ্গলকে দেখিয়ে দেওয়ার ম্যাচ? আপনাকে তাড়িয়ে যে ওরা ভুল করেছে সেটা বোঝানোর তাগিদ নিশ্চয়ই আছে আপনার?
ডুডু: আমার লক্ষ্য কী তা বলে ওদের তাতিয়ে দিতে চাই না। ইস্টবেঙ্গলকে হারানোটাই আমার আগামী আটচল্লিশ ঘণ্টার একমাত্র লক্ষ্য। কারণ আমি এখন মোহনবাগানের ফুটবলার। গত বছর কলকাতায় খেলার সুবাদে দেখেছি, ডার্বি নিয়ে সমর্থকদের আবেগ। আর এই আবেগকে সম্মান করার জন্যই ডার্বি জিততে চাই। মোহনবাগান সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাতে চাই।
প্র: রবিবার আপনার নিজের লক্ষ্য কী থাকছে? সমর্থকরা তো আপনার গোলের দিকেই তাকিয়ে আছেন।
ডুডু: ডার্বিতে গোল করলে সব সময়ই ভাল লাগে। তবে আমার কাছে মোহনবাগানের জয়টা গুরুত্বপূর্ণ। সে আমিই গোল করি বা টিমের অন্য কেউ।