দুই প্রধানের কোচ হয়ে পি কে বন্দ্যোপাধ্যায় মঞ্চে দাঁড়িয়ে অমল দত্তের প্রশংসার মানপত্র পড়ছেন এটা কেউ কখনও কল্পনায় এনেছেন?
দুই প্রধানের কোচ হয়ে সুভাষ ভৌমিক বলছেন, ‘‘সুব্রত সফল হোক এটা দেখতে চাই।’’ বা সুব্রত ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘সুভাষ আরও উপরে উঠুক। আরও ট্রফি জিতুক, এটাই চাই।’’ এটা কেউ ভাবতে পেরেছেন কখনও?
শনিবাসারীয় সন্ধ্যায় দু’টি ঘটনাই ঘটে গেল। তবে অন্য মোড়কে। অন্য মেজাজের মঞ্চে। দুই প্রধানের চিরকালীন যুদ্ধের আগুন থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে বন্ধুত্বকে সামনে এনে দিলেন সঞ্জয় সেন আর বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য। মাস দু’য়েক পর যাঁরা একে অন্যেকে হারানোর জন্য প্রাণপাত করবেন। মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল রিজার্ভ বেঞ্চে বসে। তারাই একে অন্যকে ভরিয়ে দিলন প্রশংসায়। চাইলেন সাফল্য।
তেরো বছর পর বাগানকে আই লিগ দেওয়া কোচ সঞ্জয়ের জন্য লিখে আনা প্রশংসাপত্র পড়লেন লাল-হলুদের এ বারের কোচ বিশ্বজিৎ। তার পর হাসতে হাসতে তুলে দিলেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী কোচের হাতে।
আর সঞ্জয় পাল্টা কী করলেন? যার সঙ্গে ছোটবেলায় চাউমিন আর মিষ্টি খেয়ে অনুশীলন শেষে প্রতিদিন চেতলার বাড়ি ফিরতেন, আবেগে সেই বিশুদার সাফল্য কামনা করে বসলেন। সবাইকে কিছুটা চমকে দিয়ে সঞ্জয় বলে দিলেন ‘‘আমি চাই, আমি আর বিশুদা দু’জনেই এ বার সাফল্য পাই। বিশুদা তো যথেষ্ট ভাল কোচ। এটা নিয়ে তো কোনও সন্দেহ নেই।’’ আর বিশ্বজিতের মন্তব্য, ‘‘আমি চাই ও আরও ট্রফি জিতুক। আরও ওপরে উঠুক।’’
কিন্তু সেটা কী করে সম্ভব? ডার্বিতে কি কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলবেন? দু’জনেই তো বাঙালির দু’ভাগ হয়ে যাওয়া আবেগের ম্যাচে একে অন্যকে শেষ করে দেওয়ার ছক কষবেন! জিততে চাইবেন আই লিগ, কলকাতা লিগ-সহ সব ট্রফি।
না, এ সব ভাবার মতো অবস্থা মনে হয় এ দিন ছিল না সাদার্ন স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের সংবর্ধনা মঞ্চে। বরং ক্লাবের দুই প্রাক্তন খোলোয়াড়ের আবেগে বলে যাওয়া নানা কথা চেটেপুটে নিলেন সবাই। সবাই মানে— একঝাঁক প্রাক্তন তারকা ফুটবলার, ক্লাবের কয়েকশো শিক্ষার্থী-সহ শ’খানেক দর্শক।