Advertisement
০৫ মে ২০২৪
East Bengal

মশালের আগুনে ছারখার পিয়ারলেস

ভারতীয় ফুটবল প্রাঙ্গন থেকে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাওয়া ছেলেটি যে এই ভাবে নিজেকে মেলে ধরবেন তা হয়ত স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি কোটি কোটি ইস্টবেঙ্গল সমর্থক।

ম্যাচ শেষে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের উল্লাস।-নিজস্ব চিত্র।

ম্যাচ শেষে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের উল্লাস।-নিজস্ব চিত্র।

কৌশিক চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৭ ২০:০৬
Share: Save:

বর্ষাসিক্ত ময়দানেও মশাল জ্বালাল ইস্টবেঙ্গল। ঘরের মাঠে পিয়ারলেস এস সি-কে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দিল খালিদ জামিলের ছেলেরা। ইস্টবেঙ্গলের হয়ে হ্যাটট্রিক করেন চার্চিল থেকে আগত সুরাবদ্দিন মল্লিক এবং বাকি দু’টি গোল উইলিস প্লাজা এবং গ্যাব্রিয়ালের। পিয়ারলেসের হয়ে ব্যবধান কমান রহিম নবি।

তবে, ম্যাচের স্কোর লাইন অনুযায়ী ইস্টবেঙ্গলের খেলা যদি বিচার করা হয় তা হলে বড় ভুল করবেন লাল-হলুদ সমর্থকরা। এ দিন ম্যাচের প্রথমার্ধে লাল-হলুদের বহু যুদ্ধের সৈনিক সৈয়দ রহিম নবির নেতৃত্বে বর্ষার ময়দানে ইস্টবেঙ্গলের ঘাড়ে চেপে বসে পিয়েরলেসের তরুণ প্রতিভারা। কাদা মাঠে রহিমের অভিজ্ঞতার উপর ভর করে বার বার ইস্টবেঙ্গল রক্ষণের উপর আঘাত হানতে থাকেন ডোডোজ-টোরেরা। কিন্তু স্রেফ অভিজ্ঞতার অভাবে লাল-হলুদ দূর্গে ফাটল ধরাতে ব্যর্থ হয় পিয়ারলেস।

এরই মধ্যে খেলার গতির বিপরীতে বহু কাঙ্খিত গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দেন উইলিস প্লাজা। গত দু’ম্যাচে গোল না পাওয়া প্লাজা এ দিনে গোল করে যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন। কিন্তু প্লাজার গোলের রেশ কাটতে না কাটতেই গোল হজম করে ইস্টবেঙ্গল। রহিম নবির গোলমুখি বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালে জড়িয়ে দেন ইস্টবেঙ্গলের এক ফুটবলার। প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-১ গোলে।

ম্যাচের ফাঁকে দু'দলের ফুটবলাররা। -নিজস্ব চিত্র।

কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই খালিদের মাস্টারস্ট্রোকে পাল্টে যায় লাল-হলুদের খেলার চিত্র। ম্যাচের ৫৬ মিনিটে রালতের পরিবর্তে সুরাবদ্দিন মল্লিকের আগমন এবং ৬০ মিনিটে সুহেরের পরিবর্তে গ্যাব্রিয়ালের মাঠে নেমে উইং দিয়ে দৌড় বদলে দেয় খেলার গতিপ্রকৃতি।

আরও পড়ুন: নতুন পজিশনে মানিয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ নিয়ে নামছেন মনীশ

আরও পড়ুন: ভারতেও আসছেন না স্টার্ক

এই দুই উইং হাফের ক্রমাগত দৌড়ের উপর ভিত্তি করে ম্যাচে অগ্রগতির লক্ষ্যে একের পর এক আক্রমণ তুলে আনে ইস্টবেঙ্গল। যার সুবাদে ম্যাচে ৭০ মিনিটে প্লাজার পাস থেকে লাল-হলুদকে এগিয়ে দেন সুপারসাব গ্যাব্রিয়াল।

ম্যাচে দ্বিতীয় গোল হজম করার পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি পিয়ারলেস। তখন মাঠে এক চেটিয়া সুরাবদ্দিন রাজ। সুপারসাব হিসেবে নেমে, ভারতীয় ফুটবল প্রাঙ্গন থেকে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাওয়া ছেলেটি যে এই ভাবে নিজেকে মেলে ধরবেন তা হয়ত স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি কোটি কোটি ইস্টবেঙ্গল সমর্থক। ম্যাচের ৭৪ মিনিটে দুরন্ত হেডে দলের তৃতীয় গোল এবং চলতি মরসুমে নিজের প্রথম গোলটি করে ফেলেন সুরা। প্রথম গোলের ঠিক দু’মিনিটের মধ্যে আরও এক বার পিয়ারলেস রক্ষণ নাড়িয়ে দেন বজবজ একাডেমি থেকে উঠে আসা এই উইঙ্গার। ৪-১ এর লিড পেয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। সবাই যখন ধরে নিয়েছে ৪-১ এই শেষ হবে ইস্টবেঙ্গল-পিয়ারলেস ম্যাচ তখনই শেষ তাসটি বার করেন সুরাবদ্দিন। ম্যাচের শেষ লগ্নে গোল করে কলকাতার ময়দানে নিজের প্রথম হ্যাটট্রিকটি সেরে ফেলেন এই বাঙালি ফুটবলার।

ম্যাচ শেষে মল্লিক বলেন, “ইস্টবেঙ্গলের জার্সি গায়ে গোল করে ভাল লাগছে। আমার কেরিয়ারে এই হ্যাট্রিককে আমি সবার আগে রাখব।”

ম্যাচ শেষে লাল-হলুদ সারথী খালিদ জামিল বলেন, “দলের খেলায় আমি খুশি। সুরাবদ্দিন এবং গ্যাব্রিয়াল বেশ ভাল খেলেছে আজ। প্লাজাও নিজের কাজ ঠিক মতই করেছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE