Advertisement
E-Paper

নববর্ষের আগে সমর্থকদের বিক্ষোভে অগ্নিগর্ভ ইস্টবেঙ্গল

রণক্ষেত্র ইস্টবেঙ্গল মাঠ! গুরপ্রীত সিংহ সাঁধুর পরে এ বার রেহনেশ টিপি-কে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল লাল-হলুদ শিবির! সমর্থকদের মধ্যমা দেখিয়ে শাস্তির মুখে ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:১২
প্রতিবাদ: লাল হলুদ সমর্থকদের শান্ত করার চেষ্টায় বুকেনিয়া। শুক্রবার ক্লাব তাঁবুর বাইরে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

প্রতিবাদ: লাল হলুদ সমর্থকদের শান্ত করার চেষ্টায় বুকেনিয়া। শুক্রবার ক্লাব তাঁবুর বাইরে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

রণক্ষেত্র ইস্টবেঙ্গল মাঠ!

গুরপ্রীত সিংহ সাঁধুর পরে এ বার রেহনেশ টিপি-কে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল লাল-হলুদ শিবির! সমর্থকদের মধ্যমা দেখিয়ে শাস্তির মুখে ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার।

আই লিগে ব্যর্থতার জন্য কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যান ও গোলকিপার রেহনেশ-কেই মূলত দায়ী করছেন লাল-হলুদ সমর্থকরা। শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটা থেকেই ‘গো ব্যাক মর্গ্যান-রেহনেশ’ ধ্বনিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন সমর্থকরা। সেই সময় জিম থেকে বেরিয়ে অনুশীলন করতে মাঠে যাচ্ছিলেন লাল-হলুদ গোলকিপার। তাঁকে ঘিরে ধরেন সমর্থকরা। ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার তার জবাব দেন মধ্যমা দেখিয়ে। এখানেই শেষ নয়। রেহনেশের বিরুদ্ধে সমর্থকদের মারার অভিযোগও রয়েছে। মুহূর্তের মধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। ভেস্তে যেতে বসে অনুশীলন। প্রায় আধ ঘণ্টা আতঙ্কে মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়েছিলেন ফুটবলাররা। শেষ পর্যন্ত সমর্থকদের দাবি মেনে, রেহনেশ ক্ষমা চাওয়ার পরেই ডিএসকে শিবাজিয়ান্স ম্যাচের প্রস্তুতি শুরু করতে সক্ষম হন মর্গ্যান।

কিন্তু সমর্থকদের ক্ষোভ যে কমেনি, সেটা অনুশীলন শেষ হওয়ার পরেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। রেহনেশের পাশাপাশি এ বার তাঁদের প্রধান লক্ষ্য হয়ে ওঠেন অন্যতম কর্তা দেবব্রত সরকার। সাড়ে দশটা নাগাদ ক্লাব তাঁবুতে ঢোকার সময় তাঁর সঙ্গে সামান্য ধস্তাধস্তিও হয় সমর্থকদের। জ্বালানো হয় কর্তাদের কুশপুতুলও। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। ফুটবলারদের ক্লাব থেকে বেরোতেও বাধা দেন সমর্থকরা।

আরও পড়ুন: তীব্র গরম আর কার্ড নিয়ে চিন্তায় সঞ্জয়

নজিরবিহীন বিক্ষোভের মধ্যেই এক সমর্থককে ঠেলে কোনও মতে তাঁর গাড়িতে উঠেছিলেন মর্গ্যান। কিন্তু সমর্থকরা ধর্নায় বসে পড়ায় ফের গাড়ি থেকে নেমে আসতে বাধ্য হন তিনি। সমর্থকদের উদ্দেশে লাল-হলুদ কোচ বলেন, ‘‘আপনাদের মতো আমিও এই ব্যর্থতা মেনে নিতে পারছি না। আমারও যন্ত্রণা কিছু কম হচ্ছে না।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘মেনে নিচ্ছি, চেন্নাই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে রেহনেশের ভুলেই হেরেছি। তবে কথা দিচ্ছি, রবিবারের ম্যাচে অন্য ইস্টবেঙ্গলকে দেখবেন।’’ মর্গ্যানের আশ্বাসবাণীও শান্ত করতে পারেনি ক্ষুব্ধ সমর্থকদের। রেহনেশ-কে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানাতে শুরু করেন তাঁরা। আতঙ্কিত লাল-হলুদ গোলকিপার তখন রবিন সিংহের গাড়িতে বসেছিলেন। ডিফেন্ডার গুরবিন্দর সিংহ সমর্থকদের বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

রেহনেশ-কে না পেয়ে ফের আক্রমণের লক্ষ্য হয়ে ওঠেন মর্গ্যান। ফিরে আসে ছ’বছর আগের স্মৃতি!

কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে এরিয়ানের কাছে হারের পরে নিজেদের মাঠেই ঘণ্টা দু’য়েক বন্দি হয়ে ছিলেন ফুটবলাররা। মর্গ্যানের গায়েও থুথু দেন সমর্থকরা। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল শুক্রবার সকালে লাল-হলুদ কোচ গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময়।

কিন্তু ফের রেহনেশ-কে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পরিস্থিতি! রবিনের গাড়িতে ক্লাব ছাড়ার সময় আবার সমর্থকদের মধ্যমা দেখান তিনি! বিকেলে ক্ষুব্ধ মর্গ্যান বললেন, ‘‘রেহনেশ যা করেছে, সেটা কখনওই মেনে নেওয়া যায় না। ও হয়তো সমর্থকদের কটাক্ষে মেজাজ হারিয়ে ফেলেছিল। ভেবেছিলাম ও নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে বলেই ক্ষমা চেয়েছিল। একজন পেশাদার ফুটবলারের কাছ থেকে এই ধরনের আচরণ একেবারেই অপ্রত্যাশিত।’’

কোচ ও ফুটবলাররা ক্লাব ছাড়ার পরে ‘বিদ্রোহী’ সমর্থকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন লাল-হলুদ কর্তারা। মোহনবাগানের মতো ইস্টবেঙ্গলেও প্রাক্তন ফুটবলার নিয়ে টেকনিক্যাল কমিটি তৈরি-সহ পনেরো দফা দাবি তাঁরা পেশ করেছেন। অন্যতম শীর্ষ কর্তা বললেন, ‘‘দলের এই পারফরম্যান্সে সমর্থকদের ক্ষোভ থাকাটা স্বাভাবিক। ওদের যদি কোনও পরামর্শ থাকে সেটা যেন জানায়। ক্লাবের উন্নতির জন্য একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’’ সেই সঙ্গে জানালেন যে রেহনশেনকে কোনও অবস্থাতেই ছাড়া হবে না।

রবিবার শিবাজিয়ান্সের বিরুদ্ধে জিততে না পারলে পরিস্থিতি যে আরও জটিল হবে, তারই পূর্বাভাস মিলল বাংলা বছরের শেষ দিনে।

Football East Bengal East Bengal Fans Agitation I-League Trevor Morgan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy