Advertisement
E-Paper

‘বিদ্রোহী’রা নেমেও জেতাতে পারলেন না

ক্ষুব্ধ লাল-হলুদ সমর্থকেরা বারাসতের গ্যালারিতে বিশাল এক ব্যানার নিয়ে এসেছিলেন— ‘থার্টিন ইয়ার্স গন! ডু ইউ আন্ডারস্ট্যান্ড? নো, ইউ ডোন্ট।’

তানিয়া রায়

শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:২২
সেই অভিনব প্রতিবাদ। শুক্রবার বারাসতের গ্যালারিতে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের। -নিজস্ব চিত্র

সেই অভিনব প্রতিবাদ। শুক্রবার বারাসতের গ্যালারিতে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের। -নিজস্ব চিত্র

ইস্টবেঙ্গল-০ : স্পোর্টিং ক্লুব-০

ক্ষুব্ধ লাল-হলুদ সমর্থকেরা বারাসতের গ্যালারিতে বিশাল এক ব্যানার নিয়ে এসেছিলেন— ‘থার্টিন ইয়ার্স গন! ডু ইউ আন্ডারস্ট্যান্ড? নো, ইউ ডোন্ট।’

তেরো বছর ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে আই লিগ ঢুকছে না। তাই অভিনব ভাবে শুক্রবারের ম্যাচের তেরো মিনিটে প্রতিবাদীরা বেরিয়েও গেলেন স্টেডিয়াম ছেড়ে ব্যানার গুটিয়ে।

ইস্টবেঙ্গল ম্যানেজার, লাল-হলুদের প্রাক্তন গোয়ান ফুটবলার অ্যালভিটো ডি’কুনহাকে উদ্দেশ্য করে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান অবশ্য ম্যাচের আগাগোড়া আছড়ে পড়ল দলের রিজার্ভ বেঞ্চে। এমনকী ম্যাচের শেষেও থামল না।

জোড়া লাল-কার্ড। হলুদ কার্ডের ছড়াছড়ি। ধাক্কাধাক্কি, তর্কাতর্কি— কিছুই বাকি ছিল না ম্যাচে। শুধু গোলটাই করতে পারলেন না র‌্যান্টি-ডংরা। ওডাফার দলের কাছে দু’পয়েন্ট হারিয়ে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন সরকারি ভাবে তো শেষ হলই, লিগ টেবলে সেকেন্ড বয় হওয়ার সুযোগও হয়তো হাতছাড়া হচ্ছে ইস্টবেঙ্গলের। তাতেও যে অনেক অঙ্ক!

তাঁর বিরুদ্ধে নানা সময় যে সব লাল-হলুদ ফুটবলার ‘বিদ্রোহী’ হয়েছিলেন তাঁদের অনেককেই এ দিন নামানো হয়েছিল গোয়ার ক্লাবকে হারানোর জন্য। কিন্তু সেই প্লেয়ারদের হাল এতটাই খারাপ যে ইস্টবেঙ্গল জয়ের মুখ দেখতে পারল না। এ দিন টিভিতে অবশ্য তাঁর পুরনো টিমের খেলা দেখেননি সদ্য প্রাক্তন ইস্টবেঙ্গল কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য। তবে স্কোরলাইন শুনে ঘুরিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। এ মরসুমে লাল-হলুদকে জোড়া ডার্বি জেতানো বিশ্বজিৎ রাতের দিকে পাড়ার ক্লাবে আড্ডা দেওয়ার ফাঁকে মোবাইল থেকে বললেন, ‘‘খেলা দেখা হয়নি। তাই বলতে পারব না ইস্টবেঙ্গল কেমন খেলেছে। তবে আমার একটাই প্রশ্ন, খারাপ কোচ তো সব দায় নিজের ঘাড়ে নিয়ে সরে গিয়েছে। যাদের সে খেলাইনি বলে বিদ্রোহ হয়েছিল, তাতে ইন্ধন জোগাত কোচিং স্টাফের যারা, তাদের সবার কাছে জানতে চাইব সুযোগ পেয়েও জেতাতে পারল না কেন।’’

বিশ্বজিতের যুক্তি কিন্তু উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। যে লালরিন্দিকা তাঁকে খেলানো হচ্ছিল না বলে বিদ্রোহ করেছিলেন, যে ডংকে একটা সময় পারফরম্যান্স না থাকায় মাঠের বাইরে বসিয়ে রাখা হয়েছিল বলে ড্রেসিংরুমে গোলমাল পাকিয়েছিলেন, যে দীপক মণ্ডল সুযোগ না পেয়ে টিম মিটিংয়ে সরব হয়েছিলেন কোচের বিরুদ্ধে, তারা কী করলেন এ দিন ম্যাচে? সবাই একযোগে ফ্লপ। ডিকাকে ফাউল করে জোড়া হলুদ কার্ড (লাল কার্ড) দেখে স্পোর্টিং ডিফেন্ডার মেহরাজউদ্দিন বেরিয়ে গিয়েছিলেন। শেষ সাতাশ মিনিট দশ জন হয়ে যায় স্পোর্টিং ক্লুব। সেই সুযোগও কাজে লাগাতে পারলেন না র‌্যান্টিরা। খেলার শেষ দিকে ইস্টবেঙ্গলও দশ জন হয়ে যায়। নারায়ণ দাস লাল কার্ড দেখায়। লিগ হারিয়ে আসছে বছর আবার হবে-র সেই ক্লিশে হয়ে পড়া আশা নিয়ে শুক্রবার রাতে বাড়ি মুখো হলেন মাত্র শ’পাঁচেক লাল-হলুদ সমর্থক। ট্রফির আশা না থাকলে এই দাবদাহে এর চেয়ে বেশি আসবেই বা কেন?

ওডাফা তেরো মিনিট মাঠে ছিলেন। পায়ের চোট নিয়ে কিছুটা জোর করেই নেমেছিলেন। কলকাতায় এলে বোধহয় ওডাফার খেলার তাগিদ বেড়ে যায় কয়েকগুণ। তিনি খোঁড়াতে খোঁড়াতে উঠে যাওয়ার পর আশা করা গিয়েছিল, নির্বিষ স্পোর্টিংকে আক্রমণের ঢেউ তুলে জর্জরিত করে তুলবেন জোয়াকিমরা। কিন্তু কোথায় কী! দেখে মনে হচ্ছিল, পদত্যাগী কোচের বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহ’ আর ‘বিতর্ক’র ভুলভুলয়াইয়ায় ঢুকে ফুটবল খেলাটাই ভুলে গিয়েছেন লাল-হলুদ ফুটবলাররা! ম্যাচের পর স্টপগ্যাপ কোচ সঞ্জয় মাঝি আমতা আমতা করে বললেন, ‘‘খারাপ সময় চলছে। কোনও কিছুই কাজে আসছে না। সবাইকেই তো ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খেলালাম। কিন্তু জিতলাম কোথায়?’’

এক ম্যাচ পরেই ইস্টবেঙ্গলে ফিরছে মর্গ্যান-জমানা। তিনি কী বদলান লাল-হলুদকে সেটাই দেখার!

ইস্টবেঙ্গল: ব্যারেটো, সামাদ, দীপক, বেলো, নারায়ণ, সঞ্জু (সাবিথ), তুলুঙ্গা, মেহতাব (শেহনাজ), জোয়াকিম (ডিকা), র‌্যান্টি, ডং।

East Bengal I League Sporting Club Football
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy