Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Euro Cup 2020

এরিকসেনই শক্তি, বলছে ডেনমার্ক

এরিকসেনকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন শেষ আটের দ্বৈরথে ডেনমার্কের প্রথম গোলদাতা থোমাস ডিলানি।

উৎসাহ: করোনা আতঙ্কের মধ্যেও দলের পাশে রয়েছেন যাঁরা। ডেনমার্ক সমর্থকেরা । রয়টার্স, গেটি ইমেজেস

উৎসাহ: করোনা আতঙ্কের মধ্যেও দলের পাশে রয়েছেন যাঁরা। ডেনমার্ক সমর্থকেরা । রয়টার্স, গেটি ইমেজেস

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২১ ০৮:০৩
Share: Save:

প্রায় তিন দশক আগে ১৯৯২ সালে ইউরো খেতাব ঘরে উঠেছিল ডেনমার্কের। তার পরে গত ২৯ বছরে আর এই প্রতিযোগিতার ফাইনালে উঠতে পারেনি মাইকেল লাউড্রপের দেশ। শনিবার রাতে চেক প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে জয়ের পরে সেই ডেনমার্কই ইউরোর সেমিফাইনালে।

স্বভাবতই গোটা দেশে আনন্দ-উৎসবের ঢল নেমেছে। শেষ চারে ওঠার আনন্দে উচ্ছ্বাসে মাতোয়ারা ডেনমার্ক শিবিরও। তবে এই আনন্দের মাঝে ডেনমার্ক কোচ স্মরণ করেছেন হৃদরোগের কারণে প্রথম ম্যাচেই ছিটকে যাওয়া দলের গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনকে। ডেনমার্ক কোচ ক্যাসপার হিউলমান্ডের মতে, তাঁদের সকলের সঙ্গে এই সাফল্যের দিনেও জড়িয়ে রয়েছেন এরিকসেন। দলের মধ্যে লড়াই করার যে শক্তি দিয়েছেন ক্রিশ্চিয়ান, তা সকলে অনুভব করছেন। তাঁর ভালবাসাই ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে সেমিফাইনাল খেলার সুযোগ করে দিয়েছে ডেনমার্ককে।

উল্লেখ্য, ১২ জুন ইউরোর প্রথম ম্যাচে ফিনল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ চলাকালীন মাঠেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন এরিকসেন। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা শুরু হওয়ায় প্রাণ বাঁচে তাঁর। কোয়ার্টার ফাইনালে শনিবার চেক প্রজাতন্ত্রকে ২-১ হারিয়ে উঠে সাংবাদিক বৈঠকে এরিকসন প্রসঙ্গ টেনে আনেন ডেনমার্ক কোচ। তাঁর কথায়, ‍‘‍‘রোজ এরিকসেনের কথা মনে পড়ে। মনে হয়, ওর আমাদের দলের সঙ্গে এই মুহূর্তে থাকলে আরও ভাল হতে পারত। ও শেষ পর্যন্ত প্রাণে বেঁচে যাওয়ায় আমরা সকলেই খুশি। এই ম্যাচেও আমাদের হদয়ে ও ছিল। ওয়েম্বলিতেও যাচ্ছি হৃদয়ে এরিকসেনকে নিয়ে।’’ যোগ করেছেন, ‍‘‍‘ওই ভয়ঙ্কর দিনে ফুটবল খেললে কী উপলব্ধি হয়, তা বুঝতে পেরেছিলাম আমরা। এরিকসেন এই দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে ছিল দীর্ঘদিন। এমন নয় যে আমরা রাতারাতি দুরন্ত খেলতে শুরু করে দিয়েছি। দলের এই সাফল্যের পিছনে ওর বিশাল অবদান রয়েছে।’’

এরিকসেনকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন শেষ আটের দ্বৈরথে ডেনমার্কের প্রথম গোলদাতা থোমাস ডিলানি। কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচ সেরা এই ফুটবলার সতীর্থকে নিয়ে বলেছেন, ‍‘‍‘গত রাতে আমরা জিতে ফেরার পরে ক্রিশ্চিয়ান ফোন করে জানাল, ও সেই মুহূর্তে কতটা খুশি। আমাদের জন্য ও গর্ববোধ করছে। যা শুনে আমাদের সবার ভাল লেগেছে। ও আমাদের দলের সেরা ফুটবলার ছিল দীর্ঘদিন। আমাদের হৃদয়েই রয়েছে এরিকসেন।’’ দলের সাফল্য সম্পর্কে তিনি যোগ করেছেন, ‍‘‍‘আমাদের প্রজন্ম সেই ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ আর ১৯৯২ সালের ইউরোয় ডেনমার্কের সাফল্যের গল্প শুনে বড় হয়েছি। এ বার আমরাও সমর্থকদের ফুটবল-বিনোদন উপহার দিতে পেরে আনন্দিত।’’ আরও বলেন, ‍‘‍‘সেমিফাইনালে ওঠার অর্থ হল আমরা ভাল খেলেছি। আমরা এ বার ওয়েম্বলিতে আসছি। দুর্দান্ত একটা সফর চলছে আমাদের।’’

ডেনমার্ক কোচের মতে, প্রথমার্ধে ভাল খেললেও দ্বিতীয়ার্ধে তাঁদের চেপে ধরেছিল চেক প্রজাতন্ত্র। তবে তাঁর ফুটবলারেরা তৎপর থাকায় বিপদ হয়নি। সাংবাদিক বৈঠকে হিউলমান্ড বলেছেন, ‍‘‍‘আমরা আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলার জন্য গর্ববোধ করি। তবে সেই আক্রমণের তীব্রতা খেলার শেষ দিকে কিছুটা হারিয়েছিলাম। তার জন্য একটু সমস্যা হয়েছে।’’

এ দিকে, ২৯ বছর পরে দল সেমিফাইনালে যাওয়ায় শনিবার রাতে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহাগেন-সহ বিভিন্ন শহরেই উৎসবের শেষ ছিল না। শনিবার থাকায় শহরের বিভিন্ন পানশালা ও রেস্তরাঁ জুড়ে ছিল ভিড়। সেখানে এবং শহরের বিভিন্ন জায়গায় বড় পর্দায় খেলা দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ডিলানি ম্যাচের শুরুতেই প্রথম গোল করার পরে শুরু হয়ে যায় উৎসব। আর খেলা শেষ হওয়ার পরে বাঁশি বাজিয়ে, লোকসঙ্গীত গাইতে গাইতে বেশির ভাগ ফুটবলপ্রেমী শহর পরিক্রমায় বেরিয়ে পড়েন। ভোররাত পর্যন্ত চলে এই উৎসব। শনিবার সারাদিন কোপেনহাগেনে বৃষ্টি হলেও খেলা শুরুর ঠিক আগেই থেমে গিয়েছিল বৃষ্টি। ফলে জায়ান্ট স্ক্রিনে জাতীয় দলের খেলা দেখতে উপচে পড়েছিল ভিড়। কেউ কেউ জাতীয় সঙ্গীত বাজার সময় থেকে পুরো নব্বই মিনিট দাঁড়িয়ে খেলা দেখেছেন। আর জয়ের পরে সেই জমায়েত থেকেই আওয়াজ উঠেছে ‍‘‍‘আমরা এ বার চ্যাম্পিয়ন।’’ এর পরেই গাড়ির হর্ন বাজাতে বাজাতে স্লোগান দিয়ে শোভাযাত্রা শুরু হয় কোপেনহাগেনে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Denmark Euro Cup 2020 Christian Eriksen
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE