ডেভিস-যুদ্ধের প্রথম দিন দেশকে লড়াইয়ে ফিরিয়ে উচ্ছ্বসিত সোমদেব। ছবি পিটিআই।
প্রশ্ন: ম্যাচে আপনার প্রতিপক্ষকে প্যাচপ্যাচে গরমে যতটা কাহিল দেখাচ্ছিল, ম্যাচের পরে আপনাকে যেন তার চেয়েও বেশি কাহিল মনে হচ্ছে! দু’-দু’বার পুল সেশন হঠাৎ?
সোমদেব: গরম তো খুব বটেই। তবে আমি সে কারণে নয়, ভীষণ রিলিভড্ লাগছে বলে পুল সেশনে দ্বিতীয় বার যাব ভাবছি।
প্র: ভারতকে প্রথম দিনে ১-১ রাখতে পারার জন্যই কি আপনি এতটা রিলিভড্?
সোমদেব: ঠিক ধরেছেন। আসলে আরও দু’টো কারণ আছে। তার মধ্যে একটা, আগের ডেভিস কাপ টাইয়ে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে প্রথম দিনে খুব খারাপ খেলে হেরে দলকে বিপদের মধ্যে ফেলেছিলাম। আজ আমার সেই কষ্ট কিছুটা কমল। আর পরের কারণটা— পেশাদার ট্যুরে এই সে দিন চারশোর বেশি র্যাঙ্কিং পজিশনের প্লেয়ারের কাছেও হেরেছিলাম। তার পরে এমনও ভেবেছিলাম, এই ফর্ম নিয়ে ক’দিনের মধ্যে চেকদের বিরুদ্ধে দেশকে কী আর সার্ভিস দিতে পারব! আমার কি উচিত নিজে সরে গিয়ে অন্য কাউকে সুযোগ দেওয়া এই টাইয়ে? আমার সেই ভাবনাটাকে ভাবনাতেই রেখে দিতে পেরেছিলাম বলেও আজ খুব স্বস্তি লাগছে।
প্র: কাল তো ম্যাচ নেই আপনার। আজ রাতের দিকে কি গিটার-টিটার নিয়ে বসবেন নাকি?
সোমদেব: টাই এখনও শেষ হয়নি। আমাদের টিমের কারও কাজই এখনও শেষ হয়নি। তাই গিটারের কথা এখন ভাবছিই না। তবে রবিবার টাইটা জিততে পারলে সে দিন গোটা টিমের সেলিব্রেশনে গিটার বাজাব।
প্র: দূরসম্পর্কের হলেও রাহুল দেববর্মন পরিবারের সঙ্গে আত্মীয়তা থাকায় কি আপনার ভেতরে এই সঙ্গীতপ্রেম?
সোমদেব: বলতে পারেন। ছোটবেলা থেকেই আমি গিটার বাজাতে ভালবাসি। শিখেছিও মিউজিক স্কুলে। বছরভর টেনিস ট্যুরে এ দেশ-ও শহর ঘুরে বেড়াতে হলেও এখনও আমার টেনিস কিটসে একটা ছোট গিটার থাকে।
প্র: রবিবার রাতে গিটার বাজানোর পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে মনে করছেন? ভারত টাই জিতবে?
সোমদেব: এখনও চেকরা ফেভারিট। ডাবলসটা বাদে। কাল আমরা ফেভারিট। কিন্তু পরশু আবার ওরা। দুটো রিভার্স সিঙ্গলসেই। তবে একটা বিশেষ দিনে, একটা বিশেষ ম্যাচে অন্য রকম কিছু হতেই পারে। আজই তো হল।
প্র: রসোল সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, গতকাল রাতে ইউ টিউবে য়ুকির হারা কয়েকটা ম্যাচ দেখে সেগুলোয় যাঁরা যে ভাবে খেলে য়ুকিকে হারিয়েছিলেন, সেগুলো টুকে আজ তিনি জিতেছেন। আপনার বিশ্বের ৪০ নম্বর প্লেয়ারকে হারানোর পিছনে রহস্য কী?
সোমদেব: এই গরমে যত বেশি পারব বড়-বড় র্যালি খেলব। আর তার জন্য প্রত্যেকটা রিটার্ন আমাকে কোর্টে রাখতে হবে। তা ছাড়া আমি মনে করি, এ মরসুমের সেরা সার্ভিস আজই করেছি। ধারাবাহিক ভাবে। নইলে কী আর গোটা ম্যাচে মাত্র একটা সার্ভিস খোয়াই! অনভ্যস্ত গরমে প্রচুর রিটার্ন করতে করতে, গোটা কোর্ট ছুটতে ছুটতে ভেসেলি আরও বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। এটা আমি প্ল্যান করেই করেছি। রসোল যেমন প্রথম ম্যাচে প্ল্যান করে য়ুকিকে সারাক্ষণ ডিপ, ফ্ল্যাট শট মেরে গিয়েছে। যাতে য়ুকি রির্টানের বেশি সময় না পায়। ওর অভ্যাসের চেয়ে তাড়াতাড়ি রিটার্ন মারতে গিয়ে মিস করেছে। এ সবই গেমপ্ল্যান। যে দিন যার সব প্ল্যান খেটে যায়, তাকে সে দিন আটকানো কঠিন।
প্র: তিরিশে পৌঁছে গিয়েছেন। এখনও সোমদেব দেববর্মন গ্র্যান্ড স্ল্যাম কোয়ালিফাইং রাউন্ড টপকাতেই সমস্যায় পড়ছেন। কী ভাবছেন?
সোমদেব: এ বারের মরসুম প্রায় শেষ। চেষ্টা করব পরের বছর কয়েকটা চ্যালেঞ্জার জিতে এটিপি ট্যুরে নিয়মিত মেন রাউন্ডে খেলার সুযোগ পাওয়ার মতো র্যাঙ্কিংয়ে পৌঁছনোর। তার পরের ধাপে চেষ্টা করব এটিপি ট্যুরে ভাল করে গ্র্যান্ড স্ল্যামে সরাসরি খেলার। আমি যদি আবার প্রথম একশোয় ফিরতে পারি তা হলে কী আর গ্র্যান্ড স্ল্যামে আমাকে কোয়ালিফাই করতে হবে?
প্র: দেশের এক নম্বর সিঙ্গলস প্লেয়ার হিসেবে কাল লিয়েন্ডারদের ডাবলস ম্যাচে কি আপনি সাইডলাইন থেকে চিয়ারলিডার হবেন?
সোমদেব: একেবারে তাই। আজ সাইডলাইন থেকে অনেক ভাল ভাল টিপস পেয়ে সেই মতো খেলে রেজাল্ট পেয়েছি। কাল আমার দুই সিনিয়র টিমমেটকে তার প্রতিদান দিতে পারলে খুব খুশি হব। ভাবব লি-বপসের সঙ্গে আমিও জিতলাম!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy