যুবভারতীতে জমজমাট ডার্বি শেষ হল অমীমাংসিত ভাবে।
যুবভারতীতে মরসুমের প্রথম ডার্বি ড্র হল। ঘাত-প্রতিঘাতে ভরা ম্যাচে প্রথমে দু'গোলে এগিয়ে গিয়েছিল মোহনবাগান। ইস্টবেঙ্গল দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও অদম্য লড়াইয়ে সমতা ফেরাল।
প্রথমার্ধেই হল তিন গোল। প্রথম আধ ঘণ্টার মধ্যেই দু'গোল করে ফেলেছিল মোহনবাগান। প্রথমে ১৯ পিন্টু মাহাতো। বক্সের মধ্যে ডান পায়ের জোরালো শটে গোল করছিলেন তিনি। তারপর ২৯ মিনিটে হেনরি কিসেক্কা। তিনিও জোরালো শটে দলের দ্বিতীয় গোল করলেন।
প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে ব্যবধান কমালেন ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতে অভিষেক হওয়া জনি আকোস্তা। বক্সের মধ্যে জটলা থেকে বল জালে জড়ালেন কোস্টা রিকার বিশ্বকাপার। যা বিরতিতে মনোবল ফিরিয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের। বিরতিতে মোহনবাগান ২-১ এগিয়ে ছিল। বিরতির পরে ৬১ মিনিটে ২-২ করলেন লালডানমাইয়া। কর্নার থেকে শিলটনের ফিস্ট করা বল তিনি জালে জড়ালেন। ইস্টবেঙ্গলের দুটো গোলই এল ছিটকে আসা বলে।
ম্যাচের ৫৩ মিনিটে পোড়খাওয়া মেহতাব হোসেনকে নামালেন মোহনবাগান কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী। তুলে নিলেন শিলটন ডি সিলভাকে। কিন্তু তাতে লাভ বিশেষ হল না। বহু আকাঙ্খিত জয়ের গোলের পাস বেরিয়ে এল না তাঁর পা থেকে। বরং চোট পেয়ে মাঠ ছাড়লেন তিনি।
ইস্টবেঙ্গল ক্রমশ মাঝমাঠের দখল নিল। দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি অবশ্য দুই দলের ফুটবলারদের ধাক্কাধাক্কি উত্তেজনা ছড়াল মাঠে। হলুদ কার্ড দেখলেন মোহনবাগানের শিলটন পাল ও ইস্টবেঙ্গলের আল আমনা।
আরও পড়ুন: স্বপ্নার জন্য বিশেষ জুতো, খরচ দেবে চেন্নাইয়ের এক কোম্পানি
আরও পড়ুন: চতুর্থ ইনিংসে রান তাড়া করা কঠিন হবে, সতর্ক করলেন গাওস্কর
রবিবারই ময়দানে প্রথমবার ম্যাচে নামলেন কোস্টা রিকার বিশ্বকাপার জনি আকোস্তা। তাঁকে নিয়ে আগ্রহ ছিল মারাত্মক। প্রথম দিকে তাঁর উপস্থিতি সে ভাবে অনুভূত না হলেও ইনজুরি টাইমে তিনিই ম্যাচে ফেরালেন ইস্টবেঙ্গলকে। মোহনবাগান গোলরক্ষক শিলটন পালের হাত থেকে ছিটকে বেরিয়ে আসা বল জালে জড়াতে ভুল করেননি তিনি।
মোহনবাগান গোলের জন্য দিপান্ডা ডিকা ও হেনরি কিসেক্কা জুটির দিকে তাকিয়ে ছিল। দু'জনে একের পর এক আক্রমণ তুলে আনলেন লাল-হলুদ রক্ষণে। সেই আক্রমণের ঝড়ে ইস্টবেঙ্গল রক্ষণকে দেখাচ্ছিল ভঙ্গুর। হেনরি নিজে গোলও করলেন। কিন্তু পরের দিকে সেই তীক্ষ্ণতা আর দেখা গেল না।
দুপুর থেকে ফুটবলপ্রেমীরা ভিড় জমাতে শুরু করেছিলেন যুবভারতী স্টেডিয়ামে। সবুজ-মেরুন বনাম লাল-হলুদ, ইলিশ বনাম চিংড়ির চিরন্তন দ্বন্দ্ব এই ম্যাচের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ওতপ্রোত ভাবে। ময়দানের প্রাচীন প্রবাদ বলে, এই ম্যাচ নিয়ে আগাম বলা যায় না। শক্তির বিচারে এই ম্যাচের ফয়সালা হয় না সব সময়। এই ম্যাচে অনেক সময়েই তফাত গড়ে দেয় হার-না-মানা মানসিকতা। যা ঘুচিয়ে দেয় শক্তির তারতম্য। এটা সেজন্যই বড় ম্যাচ। ময়দানে ফুটবলার হিসেবে জাতে ওঠার মঞ্চ। তা প্রথম ডার্বিতেই লাল-হলুদ জনতার হৃদয় জিতে নিলেন আকোস্তা।
এই ম্যাচ দুই দলের দুই চাণক্যের ফুটবলমস্তিষ্কের লড়াই হিসেবেও চিহ্নিত হচ্ছিল। একদিকে ইস্টবেঙ্গলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর প্রবীণ সুভাষ ভৌমিক। টিডি হলেও তিনিই চালান দল। অন্যদিকে, মোহনবাগানের কোচ নবীন শঙ্করলাল চক্রবর্তী। তা দিনের শেষে রবিবাসরীয় বিকেলে গুরু বনাম শিষ্যের কেউই হারলেন না।
(খেলা মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল থেকে এটিকে। কলকাতা ডার্বি, আইলিগ থেকে আইএসএল, কলকাতা ময়দানের সমস্ত খবর জানতে পড়ুন আমাদের খেলাবিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy