বিশ্বকাপ ফুটবলের যোগ্যতা অর্জন করল কেপ ভার্দে। সাড়ে ৫ লক্ষ লোকের এই দ্বীপরাষ্ট্র এই প্রথম বিশ্বকাপ খেলবে। কেপ ভার্দের জনসংখ্যা কলকাতার জনসংখ্যার ন’ভাগের এক ভাগ। মোট আয়তনে পশ্চিমবঙ্গের ২২ ভাগের এক ভাগ। তারাই পেয়ে গেল ২০২৬ সালের বিশ্বকাপের টিকিট।
কেপ ভার্দে ৩-০ গোলে ইসোয়াতিনিকে হারাতেই বিশ্বকাপের ছাড়পত্র পেয়ে গেল। আইসল্যান্ডের পর বিশ্বের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম দেশ হিসাবে বিশ্বকাপের টিকিট অর্জন করল আফ্রিকার এই দেশ। ১৪৫ কোটি মানুষের দেশ ভারত কবে বিশ্বকাপ খেলতে পারবে, তা নিয়ে অপেক্ষাই সার।
এই বছর কেপ ভার্দের স্বাধীনতার ৫০ বছর। ফলে এই ইতিহাসের তাৎপর্য অনেক বেশি। কোচ পেদ্রো ব্রিটো, যিনি বুবিস্তা নামে পরিচিত, বলেন, ‘‘দেশের মানুষদের এই আনন্দ দেওয়াটা বিরাট ব্যাপার। এটা কেপ ভার্দের সকল জনগণের জয়। যাঁরা আমাদের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিলেন, এই জয় তাঁদের জন্য।’’
কেপ ভার্দে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে যোগ্যতা অর্জন করল। তারা টেক্কা দিল আট বার বিশ্বকাপ খেলা ক্যামেরুনকে। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ডেইলন লিভ্রামেন্টো, উইলি সেমেদো এবং স্টপিরা গোল করেন। খেলা শেষ হতেই কেপ ভার্দের রাজধানী প্রাইয়ায় উৎসব শুরু হয়ে যায়। মানুষ রাস্তায় নেমে এসে হর্ন বাজাতে বাজতে বাজি ফাটাতে শুরু করেন। স্থানীয় রেগে এবং ফানানা গানের সঙ্গে মানুষ নাচতে শুরু করেন।
বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের শুরুটা ভাল হয়নি কেপ ভার্দের। অ্যাঙ্গোলার সঙ্গে ড্র এবং ক্যামেরুনের কাছে হেরে যাওয়ার পর টানা পাঁচটি ম্যাচ জিতে যোগ্যতা অর্জন করেছে তারা।
আরও পড়ুন:
কেপ ভার্দে দলটির অধিকাংশ ফুটবলারেরই জন্ম দেশের বাইরে। কিন্তু তাঁদের বাবা-মা অথবা দাদু-দিদারা কেপ ভার্দের নাগরিক। অধিনায়ক রায়ান মেন্ডেস বলেন, ‘‘সত্যি বলতে, এই মুহূর্তটা বর্ণনা করার মতো শব্দ আমার কাছে নেই। আমি খুব, খুব খুশি।’’ ৩৯ বছর বয়সি গোলরক্ষক ভোজিনহা বলেন, ‘‘আমি ছোটবেলা থেকেই এই মুহূর্তটির স্বপ্ন দেখছিলাম।’’ ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোও ইতিহাস রচনা করার জন্য কেপ ভার্দের ফুটবল দলকে অভিনন্দন জানান।
১৯৭৫ সালে স্বাধীনতা লাভ করে কেপ ভার্দে। ২০০২ সালে প্রথম বার তারা বিশ্বকাপ ফুটবলের বাছাইপর্বে খেলে। এরপর থেকে ধারাবাহিক ভাবে তাদের অগ্রগতি হয়েছে। ২০১৩ এবং ২০২৩ সালে আফ্রিকা কাপ অফ নেশনস-এর কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে কেপ ভার্দে।
এই নিয়ে মোট ২২টি দেশের টিকিট পাকা হল বিশ্বকাপে। আয়োজক দেশ হিসাবে কানাডা, মেক্সিকো, আমেরিকা খেলবে। আফ্রিকা থেকে কেপ ভার্দে ছাড়াও যোগ্যতা অর্জন করেছে ঘানা, মরক্কো, তিউনিসিয়া, মিশর, আলজেরিয়া। এশিয়া থেকে টিকিট পেয়েছে উজ়বেকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া, জর্ডন, অস্ট্রেলিয়া, ইরান, জাপান। এর মধ্যে জর্ডন এবং উজ়বেকিস্তান এই প্রথম বিশ্বকাপে খেলবে। লাতিন আমেরিকা থেকে জায়গা পেয়েছে আর্জেন্তিনা, ইকুয়েডর, ব্রাজ়িল, উরুগুয়ে, প্যারাগুয়ে, কলম্বিয়া। ওশেনিয়া থেকে খেলবে নিউ জ়িল্যান্ড। ইউরোপ থেকে এখনও কোনও দল যোগ্যতা অর্জন করেনি। সেখান থেকে সরাসরি ১৬টি দল যোগ্যতা অর্জন করবে।
সব মিলিয়ে ২২টি দেশের খেলা নিশ্চিত হয়েছে। এখনও বাকি ২৬টি জায়গা।