E-Paper

এশীয় পর্যায়েও প্রমাণ করতে মরিয়া ছিলাম, বলছেন অ‌্যান্টনি

বয়স মাত্র ২৯ বছর। খুব কম মানুষই এই বয়সে কোচ হওয়ার কথা চিন্তা করতে পারেন। চেহারাতেও কোচ সুলভ সেই গাম্ভীর্য নেই।

সুতীর্থ দাস

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:৫১
আগমন: এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলে কলকাতায় ফিরলেন ইস্টবেঙ্গলের মহিলা ফুটবলারেরা। বিমানবন্দরে উল্লাস।

আগমন: এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলে কলকাতায় ফিরলেন ইস্টবেঙ্গলের মহিলা ফুটবলারেরা। বিমানবন্দরে উল্লাস। ছবি: সুদীপ ঘোষ।

ইস্টবেঙ্গলের পুরুষ দল যখন সশব্দে ব‌্যর্থতার চোরাগলিতে আশার আলো খুঁজছে, তখন মহিলা দলে নিঃশব্দে বিপ্লব ঘটে চলেছে। নেপথ‌্য নায়কের নাম- অ‌্যান্টনি অ‌্যান্ড্রুজ়। ইস্টবেঙ্গলের দায়িত্ব নেওয়ার পরে দলকে আইডব্লিউএল, কন‌্যাশ্রী কাপ জিতিয়েছেন। তাঁর সাফল‌্যের ঝুলিতে সাম্প্রতিক সংযোজন- নারীবাহিনীকে এএফসি চ‌্যাম্পিয়ন্স লিগের মূল পর্বে পৌঁছে দেওয়া।

বয়স মাত্র ২৯ বছর। খুব কম মানুষই এই বয়সে কোচ হওয়ার কথা চিন্তা করতে পারেন। চেহারাতেও কোচ সুলভ সেই গাম্ভীর্য নেই। অথচ তাঁর পরিসংখ‌্যান দেখলে চোখ কপালে উঠতে বাধ‌্য। গোকুলম কেরলের হয়ে দু’বার (২০২১-’২২ ও ২০২২-’২৩ মরসুমে) আইডব্লিউএল জিতেছেন। ইস্টবেঙ্গলে এসেও সেই সাফল‌্যের ধারায় ভাটা পড়েনি, বরং নতুন নতুন ঢেউ সমস্ত রেকর্ডকে চুরমারকরে দিচ্ছে।

আইডব্লিউএলে সাফল‌্য এনে দেওয়ার পরেও বাদ পড়েন দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা ঘানার এলসাদাই আচেমপং। যা নিয়ে কোচ অ‌্যান্টনিকেও কম প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়নি। পরিবর্তে দলে আসেন গোকুলম কেরলে খেলা উগান্ডার জাতীয় দলের ফুটবলার ফাজ়িলা ইকওয়াপুট। তিনি গত দুই আইডব্লিউএলে মোট ৩৬টি গোল করেছেন। মহিলাদের উয়েফা চ‌্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলারও অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। দলে নেওয়া হয় মিডফিল্ডার আমনা নবাবিকে। রক্ষণ মজবুত করার জন‌্য সই করানো হয় নাইজিরিয়ার মরিন ওকপালা ও ঘানার আবেনা ওপোকুকে।

শুধু বিদেশিরাই নন, গোকুলম কেরল থেকে আসেন জাতীয় দলের মিডফিল্ডার সিল্কি দেবী ও গোলকিপার পায়েল বাসুদেব। এর মধ‌্যে সিল্কি আবার ২০২৪-’২৫ মরসুমে আইডব্লিউএলে সেরা মিডফিল্ডার হয়েছিলেন। পাশাপাশি আইডব্লিউএল জয়ী দলেরও ১৪ জন ফুটবলারকে ধরে রাখা হয়। তাদের মধ‌্যে রয়েছেন ফেডারেশনের বর্ষসেরা পুরস্কার পাওয়া সৌম‌্যা গুগুলথ, পান্থোই চানু, সুস্মিতা লেপচা, সুইটি দেবীর মতো ফুটবলার। এএফসিতে যাওয়ার আগে কল‌্যাণীতে চলেছে দু’মাস ধরে প্রস্তুতি শিবির। ফলে এই সাফল‌্য পাওয়ার জন‌্য যে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে, তা দিনের আলোর মতোই পরিষ্কার।

এএফসি চ‌্যাম্পিয়ন্স লিগে যোগ‌্যতা অর্জনের প্রথম ম‌্যাচে পেনম পেন ক্রাউন এফসিকে ১-০ গোলে হারায় মশালবাহিনী। রবিবার দ্বিতীয় ম‌্যাচে সঙ্গীতা বাসফোরের গোলে ১-১ ড্র করে কিচি এফসির বিরুদ্ধে। তাতেই চার পয়েন্ট পেয়ে শীর্ষে থেকে মূল পর্ব নিশ্চিত হয়। অভিযানের আগে মেয়েদের কী মন্ত্র দিয়েছিলেন? সিঙ্গাপুরে বিমান ধরার ফাঁকে ফোনে আনন্দবাজারকে অ‌্যান্টনি বলে দিলেন, “বলেছিলাম, নিজেদের স্বাভাবিক খেলা খেলো। ব‌্যক্তি নয়, দলগত সাফল‌্যই আসল। মনে রাখো, তোমরা দেশের পাশাপাশি এক ঐতিহ‌্যশালী ক্লাবেরও প্রতিনিধিত্ব করছ। সেরাটা মেলে ধরে ক্লাবকে গর্বিত করো।”

তবে তাঁদের সাফল‌্যের জ্বালানিতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে কটাক্ষ। কড়া হলেও এটাই সত‌্যি! অ‌্যান্টনি বলছিলেন, “আইডব্লিউএল জয়ের পরেও অনেক কটাক্ষ শুনতে হয়েছিল। এমনকি অনেকে জানিয়েছিলেন, বিদেশের মাটিতে আমরা মুখ থুবড়ে পড়ব। বলতে পারেন, সেই সমালোচনা, কটাক্ষই এশিয়ার মঞ্চে আমাদের জবাব দিতে আরও বেশি করে সাহায‌্য করেছে। ক্লাব যা দায়িত্ব দিয়েছ, তা পালন করেছি।’’ আজ, মঙ্গলবার ময়দানের ক্লাব তাঁবুতে ফুটবলারদের জন্য নৈশভোজের আয়োজনকরেছে ইস্টবেঙ্গল।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

AFC Champions League

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy