গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে পর্তুগাল ও লিভারপুলের ফুটবলার দিয়োগো জোতার। তাঁর মৃত্যুর খবর এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না সতীর্থ ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। ফুটবলারের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন সিআর৭।
নিজের ইনস্টাগ্রাম পোস্টে জোতার একটা সাদা-কালো ছবি দিয়েছেন রোনাল্ডো। তিনি লিখেছেন, “এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না। আমরা তো সবে জাতীয় দলে খেলা শুরু করেছিলাম। তুমি সদ্য বিয়ে করেছিলে। তোমার পরিবার, স্ত্রী ও সন্তানদের সমবেদনা। এই ধাক্কা সামলানোর শক্তি যেন ওঁরা পান। আমি জানি তুমি সবসময় ওঁদের পাশে আছ। শান্তিতে ঘুমোও দিয়োগো ও আন্দ্রে (জোতার ভাই)। তোমাদের মিস্ করব।”
স্পেনে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে জোতার। দু’সপ্তাহ আগেই বিয়ে করেছিলেন দীর্ঘ দিনের বান্ধবী রুতে কার্দোসোকে। তাঁদের তিন সন্তান রয়েছে। ২৮ বছরের ফুটবলার দেশের জার্সিতে পর্তুগালের হয়ে খেলতেন। জোতার মৃত্যুর খবর প্রথম প্রকাশ্যে আসে স্পেনের সংবাদমাধ্যমে। পরে খবরটি নিশ্চিত করেন পর্তুগালের ফুটবল সংস্থার প্রধান পেদ্রো প্রোয়েনসাও। এক বিবৃতিতে লিখেছেন, “পর্তুগালের ফুটবল সংস্থা এবং পর্তুগাল ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত সকলে এই খবরে বিধ্বস্ত। জাতীয় দলের হয়ে ৫০-এর কাছাকাছি ম্যাচ খেলেছিল। মানুষ হিসাবে অসাধারণ ছিল জোতা। সতীর্থ, বিপক্ষ সকলেই ওকে সমীহ করত।”
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, জোতার সঙ্গে গাড়িতে ছিলেন তাঁর ভাই আন্দ্রে। স্থানীয় সময় বুধবার রাত ১২.৪০ নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। বিলাসবহুল গাড়িতে ভাইয়ের সঙ্গে যাচ্ছিলেন তিনি। অন্য একটি গাড়িকে পিছনে ফেলতে গিয়ে জোতাদের গাড়িটি উল্টে যায়। গাড়ির চাকা ফেটে আগুন ধরে যায়। সেখান থেকে গোটা গাড়িয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ হয়। স্থানীয় প্রশাসন সমাজমাধ্যমে দু’জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে। জ়ামোরা প্রদেশের সের্নাদিলা অঞ্চলে গাড়ি দুর্ঘটনাটি হয়েছে। আন্দ্রে পর্তুগালের দ্বিতীয় ডিভিশনের ফুটবল ক্লাবে খেলতেন।
আরও পড়ুন:
২০২০ সালে উলভারহ্যাম্পটন থেকে লিভারপুলে যোগ দিয়েছিলেন জোতা। তার পরেই তৎকালীন কোচ জুরগেন ক্লপের দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে ওঠেন। নিয়মিত প্রথম একাদশে সুযোগ পেতে থাকেন। গত মরসুমে লিভারপুলের লিগ জয়ী দলেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ২৬টি ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি।
সম্প্রতি পর্তুগালের হয়ে উয়েফা নেশন্স লিগ জিতেছিলেন জোতা। ফাইনালে তিনি পরিবর্ত খেলোয়াড় হিসাবে নেমেছিলেন। কয়েক ঘণ্টা আগেই নিজের বিয়ের ছবি পোস্ট করেছিলেন জোতা। লিখেছিলেন, তিনি দুনিয়ার সবচেয়ে ভাগ্যবান পুরুষ। বহু সমর্থক এবং অনুরাগী ছাড়াও সেই ছবিতে ‘লাইক’ দিয়েছিলেন লিভারপুলের সতীর্থ ডারউইন নুনেজ়, অ্যালিসন বেকাররা।
পোর্তোয় জন্ম জোতার। সেখানকারই ক্লাব পাকোস দে ফেরেরার হয়ে ফুটবলজীবন শুরু তাঁর। ২০১৫ সালে অভিষেক হয়। এক বছর পর তিনি যোগ দেন স্পেনের আতলেতিকো মাদ্রিদে। তবে লা লিগায় একটি ম্যাচও খেলতে পারেননি। এক বছর লোনে কাটান এফসি পোর্তোয়। সেখানে আটটি গোল করেন। চোখে পড়ে যান উলভ্সের। প্রথমে লোনে, পরে পাকাপাকি ভাবে জোতাকে কিনে নেয় উলভ্স। প্রথম মরসুমে ১৭ গোল এবং পরের মরসুমে ১৬ গোল করেন তিনি।
লিভারপুলের প্রাক্তন কোচ ক্লপ ফরোয়ার্ডে বিকল্প বাড়াতে জোতাকে কেনেন। লিভারপুলে গত পাঁচ মরসুমে ইপিএলে ৪৭টি গোল করেছেন জোতা। প্রিমিয়ার লিগ ছাড়াও এফএ কাপ এবং দু’বার লিগ কাপ জিতেছেন।