Advertisement
১১ মে ২০২৪
Indonesia

ঠিক কী ঘটেছিল ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল মাঠে, কী ভাবে ঘটল এমন মর্মান্তিক ঘটনা?

আসনের থেকে মাঠে বেশি দর্শক। ঘটনার শুরুতে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ। পরে আবার অতিসক্রিয়তায় অভিযুক্ত পুলিশ। ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল মাঠের মর্মান্তিক ঘটনার রিপোর্ট তলব করল ফিফা।

শিশুকে কোলে নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে এক সমর্থক। ইন্দোনেশিয়ার কানজুরুহান স্টেডিয়ামে।

শিশুকে কোলে নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে এক সমর্থক। ইন্দোনেশিয়ার কানজুরুহান স্টেডিয়ামে। ছবি: টুইটার।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২২ ১৭:৫৫
Share: Save:

ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল মাঠে দাঙ্গার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে তৈরি হল বিভ্রান্তি। প্রথমে এক সরকারি আধিকারিক ১৭৪ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিলেন। ১৮০ জনের আহত হওয়ার কথাও জানান তিনি। পরে ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব জাভা প্রদেশের ডেপুটি গভর্নর জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা ১২৫। শহরের ১০টি হাসপাতালের মিলিত তথ্যের ভিত্তিতেই এই সংখ্যা।

ইন্দোনেশিয়া সরকারের পক্ষে জানানো হয়েছে, স্টেডিয়ামের দর্শকাসনের থেকে অনেক বেশি টিকিট বিক্রি করা হয়েছিল। উঠেছে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা এবং অতি সক্রিয়তার অভিযোগও। মৃতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হলেও ঠিক কী ভাবে ঘটল এমন মর্মান্তিক ঘটনা? একাধিক ভিডিয়ো ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যমে। ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল লিগে শনিবার জাভার দুই ক্লাব আরেমা এবং পার্সিবায়া সুরাবায়ার খেলা ছিল। পূর্ব জাভার মালাং রিজেন্সিতে আয়োজিত ম্যাচে আরেমা ৩-২ ব্যবধানে হেরে যায়। এর পর দু’দলের সমর্থকরা মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। একাধিক ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, রাত ১০টার কিছু আগে রেফারি খেলা শেষের বাঁশি বাজাতেই মাঠে নেমে পড়েন আরেমা সমর্থকরা। ক্ষুব্ধ সমর্থকদের আটকানোর চেষ্টা করেন কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা। পুলিশ কর্মীদের সঙ্গেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন আরেমা সমর্থকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে পুলিশ। ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় ক্ষুব্ধ জনতা।

বহু মানুষ এক সঙ্গে স্টেডিয়ামের বাইরে যাওয়ার চেষ্টা শুরু করেন। বাইরে বেরনোর দরজার কাছে শুরু হয় প্রবল ধাক্কাধাক্কি। সেই ধাক্কাধাক্কিতেই অনেকে পড়ে যান। তখনই অনেকে পদপিষ্ট হন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় অন্তত ৩৪ জনের। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে বা হাসপাতালে চিকিৎসা চলার সময় বাকিদের মৃত্যু হয়েছে। পূর্ব জাভার পুলিশ প্রধান নিকো আফিনতা বলেছেন, ‘‘স্টেডিয়ামের ১০ নম্বর গেটের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। বাইরে যাওয়ায় দরজার কাছে প্রচুর মানুষ ভিড় করেন। সেই ভিড়ে মহিলা এবং শিশুরাও ছিল। অভিযুক্তরা তাদের ধাক্কা মেরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।’

স্থানীয় একটি টেলিভিশন চ্যানেলের ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, ধোঁয়া এবং ভিড়ের চাপে অনেকে জ্ঞান হারান। পরে স্টেডিয়ামের বাইরে আবার সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে পুলিশের। ইন্দোনেশিয়ার নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী মহম্মদ মাহফুদ বলেছেন, ‘‘কানজুরুহান স্টেডিয়ামে ৩৮ দর্শক খেলা দেখতে পারেন। অথচ সংগঠকরা ৪২ হাজার টিকিট বিক্রি করেছিলেন।’’ ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহ লিগের খেলা বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল ফেডারেশন।

ফিফার নিয়ম অনুযায়ী, সমর্থকদের নিয়ন্ত্রণ করতে কাঁদানে গ্যাস বা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা যায় না। রয়টার্সের দাবি, পূর্ব জাভা পুলিশ প্রথম দিকে সময় নষ্ট না করলে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটত না। অশান্তি শুরু হওয়ার সময় পুলিশ ছিল দর্শকের ভূমিকায়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় অতি সক্রিয় হয়ে ওঠে পুলিশ বাহিনি। ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল ফেডারেশনের কাছে ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছে ফিফা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Indonesia Riot football fifa Dead
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE