Advertisement
E-Paper

পোলিশ দুর্গ গুঁড়িয়ে স্বপ্ন অটুট মেসির, শেষ ষোলোয় আর্জেন্টিনা

পোল্যান্ডকে ২-০ গোলে হারিয়ে শেষ ষোলোয় পৌঁছে গেল আর্জেন্টিনা। ১৯৯০ সালে প্রথম ম্যাচ হারের পরেও দলকে ফাইনালে তুলেছিলেন দিয়েগো মারাদোনা।

মজিদ বাসকর

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:১১
যাদু-জয়: আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় গোল করে লাফ ইউলিয়ান আলভারেজ়ের।

যাদু-জয়: আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় গোল করে লাফ ইউলিয়ান আলভারেজ়ের। ছবি রয়টার্স।

লিয়োনেল মেসি বনাম রবার্ট লেয়নডস্কির দ্বৈরথ দু’ভাগে বিভক্ত করে দিয়েছিল বার্সেলোনা সমর্থকদের। কেউ কেউ বলছেন, ‘‘পুরনো নায়ককে কখনও ভোলা সম্ভব নয়।’’ কারও মত, ‘‘লেয়নডস্কির জন্যই আমাদের প্রার্থনা করা উচিত।’’ বিশ্বকাপের মাঝেও ক্লাব ফুটবল নিয়ে চর্চা স্বাভাবিক। কিন্তু বুধবার গ্রুপের শেষ ম্যাচে লেয়নডস্কি ছিল নিষ্প্রভ। পেনাল্টি মিস করার পরেও ম্যাচ জুড়ে ঝলমলে দেখাল মেসির দলকে।

পোল্যান্ডকে ২-০ গোলে হারিয়ে শেষ ষোলোয় পৌঁছে গেল আর্জেন্টিনা। ১৯৯০ সালে প্রথম ম্যাচ হারের পরেও দলকে ফাইনালে তুলেছিলেন দিয়েগো মারাদোনা। মেসির দলের খেলায়ও তার ছোঁয়া রয়েছে। নক-আউটে যোগ্যতা অর্জন করার পরে এই দলকে কিন্তু আর সহজে আটকানো যাবে না। ৪৭ মিনিটে ক্রস থেকে শট করে শেজ়নির ডান দিক থেকে বল জালে জড়িয়ে দেয় আলেক্সির ম্যাকঅ্যালিস্টার। ব্রাইটনের এই ফুটবলার দেশের হয়ে প্রথম গোল পেল। দ্বিতীয় গোল ইউলিয়ান আলভারেজ়ের। বক্সের মধ্যে বল পেয়ে ডান দিকে কাট করে শট নেয় দ্বিতীয় পোস্টের কোণ লক্ষ্য করে। ওই দুই গোলই বিশ্বকাপের মঞ্চে মেসির স্বপ্ন এখনও অটুট রেখে দিল। এই আর্জেন্টিনার মধ্যে জেতার খিদে লক্ষ্য করেছি শুরু থেকেই। মেসিকে ঈশ্বরের মতো সম্মান করে রদ্রিগো দে পল, এনজ়ো মার্তিনেসরা। ওর জন্য শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যেতে পারে এই আর্জেন্টিনা দলটি। প্রতিভায় ভরা না থাকলেও সকলেই যোদ্ধা।

শেষ ষোলোয় আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ খুব একটা শক্তিশালী নয়। মেসিদের খেলতে হবে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। সে দলে একাধিক লড়াকু ফুটবলার থাকলেও মেসিদের বিরুদ্ধে জেতার সুযোগ খুবই কম। সুতরাং কোয়ার্টার ফাইনালের রাস্তা এখন অনেকটাই পরিষ্কার আর্জেন্টিনার সামনে। শেষ ষোলোর আগে মেসির ছন্দে ফিরে যাওয়াও দলকে অনেকটা চাঙ্গা করে তুলবে। ওর দৌড়, নড়াচড়া, নিখুঁত পাসিং ফুটে উঠছিল প্রত্যেক মুহূর্তে। দলের গোল বাড়িয়ে তোলার মরিয়া চেষ্টা করে গিয়েছে শেষ মিনিট পর্যন্ত। নক-আউটে মেসি এই ছন্দে থাকলে বিপক্ষ যে কোনও দল সমস্যায় পড়ে যাবে।

প্রথমার্ধে পোল্যান্ডকে দাঁড়াতেই দেয়নি আর্জেন্টিনা। এ যেন স্বর্ণযুগের দিয়েগো মারাদোনাদের দল। ফিরে এসেছে সেই শিল্প। ছোট ছোট পাসে বিপক্ষের আক্রমণ ভাগে উঠে যাওয়া। উইং দিয়ে আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ানো, খুবই পরিচিত দৃশ্য আর্জেন্টিনা সমর্থকদের কাছে। প্রথম দু’টি ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে বল এতটা পায়ে রাখতে দেখা যায়নি। পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেই সমস্যাও মিটিয়ে নিয়েছে লিয়োনেল স্কালোনির দল। প্রথমার্ধে ওদের বল পজেশন ছিল ৬৬ শতাংশ। এই পরিসংখ্যানই বুঝিয়ে দিতে পারে, আর্জেন্টিনা কতটা এগিয়ে ছিল।

মেসির বেশ কয়েকটি আক্রমণ শুরুতেই পিছিয়ে দিতে পারত পোল্যান্ডকে। কিন্তু বিপক্ষ গোলে প্রাচীরের মতো দাঁড়িয়েছিল ওইচেখ শেজ়নি। একের পর এক শট প্রতিরোধ করে গোলের মুখ বন্ধ করে রেখেছিল সে। ৩৫ মিনিটের মাথায় একটি বল বাঁচাতে গিয়ে মেসির মুখে লেগে যায় তার হাত। ভিএআর প্রযুক্তি ব্যবহার করে রেফারি পেনাল্টি দেন। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত আদৌ কতটা যুক্তিসম্মত, প্রশ্ন থাকবে। গোলকিপার বল বাঁচানোর জন্য ৩০ গজের মধ্যে যে কোনও জায়গায় যেতে পারে। রিফ্লেক্স অ্যাকশনেই হাতটা চলে গিয়েছিল। তবুও পেনাল্টি দেওয়ায় কিছুটা অবাকই হয়েছি।

শেজ়নি যদিও মেজাজ হারায়নি। ৩৮ মিনিটে মেসির পেনাল্টি বাঁ-দিকে ঝাঁপিয়ে বাঁচিয়ে দেয় শেজ়নি। এই নিয়ে বিশ্বকাপে দ্বিতীয় বার পেনাল্টি বাঁচাল জুভেন্টাসের এই গোলকিপার। সৌদি আরবের আল দৌসারির শটও বাঁচিয়েছিল সে। মেসি এগোনোর আগে সতীর্থদের হাত দেখিয়ে আশ্বস্ত করে শেজ়নি। মেসির পেনাল্টি হাতছাড়া হওয়ার পরেও আর্জেন্টিনাকে হাল ছাড়তে দেখলাম না। ৪৩ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে আলভারেজ়ের গোল লক্ষ্য করে শট শেজ়নি না বাঁচালে, প্রথমার্ধেই চাপে পড়ে যেত পোল্যান্ড। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। পোল্যান্ডও পৌঁছে গিয়েছে শেষ ষোলোয়। গোল পার্থক্যে তারা এগিয়ে মেক্সিকোর চেয়ে। লেয়নডস্কিদের এ বার পরীক্ষা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের বিরুদ্ধে।

পোল্যান্ডকে এতটাই রক্ষণাত্মক দেখাল যে, প্রশ্ন থাকল ফ্রান্সের সঙ্গে তাদের লড়াই দেওয়ার ক্ষমতা নিয়েই।

FIFA World Cup Qatar 2022 Argentina Lionel Messi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy