আইএসএলে মুম্বই সিটি বরাবরই মোহনবাগানের কঠিন প্রতিপক্ষ। এর আগে ১১ বারের সাক্ষাতে মাত্র এক বার জিতেছিল মোহনবাগান। সেটা গত বার। এই মুম্বইকে হারিয়েই লিগ-শিল্ড জিতেছিল তারা। এ বার মনে হচ্ছিল, প্রথম বার মুম্বইকে তাদের ঘরের মাঠে হারাবে মোহনবাগান। প্রথমার্ধে দুই গোলে এগিয়ে থেকেও জিততে পারল না তারা। শেষ পর্যন্ত ২-২ ম্যাচে শেষ হল খেলা। প্রথম লেগের খেলাও শেষ হয়েছিল ২-২ গোলেই। মোহনবাগান ড্র করায় ইস্টবেঙ্গলের প্লে-অফে ওঠার আশা কমল।
মোহনবাগান আইএসএল লিগ-শিল্ড জিতে নিলেও এই ম্যাচে দর্শকের ভিড় ছিল। মোহনবাগানের অনেক সমর্থক খেলা দেখতে গিয়েছিলেন। এই ম্যাচে প্রথম একাদশে কয়েকটি বদল করেছিলেন বাগান কোচ হোসে মোলিনা। সৌরভ ভানওয়ালা, অভিষেক সূর্যবংশীরা প্রথম থেকে খেলছিলেন। আক্রমণ প্রতি-আক্রমণের খেলা চলছিল। দু’দলই মাঝমাঠের দখল নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। মাঝেমধ্যে একটু গা-জোয়ারি ফুটবলও হচ্ছিল।
৩২ মিনিটের মাথায় বাগানকে এগিয়ে দেন ম্যাকলারেন। প্রতিপক্ষ ফুটবলার ব্যাক পাস দিয়েছিলেন। সেই ব্যাক পাস ধরে বক্সে ঢুকে গোল করেন বাগানের বিদেশি স্ট্রাইকার। এগিয়ে যাওয়ার পরে আক্রমণের ঝাঁজ বাড়ে সবুজ-মেরুনের। তার ফলও মেলে। ৪০ মিনিটের মাথায় লিস্টন কোলাসোর ক্রস বার করার চেষ্টা করেন মুম্বইয়ের গোলরক্ষক পূর্বা লাচেনপা। বল সরাসরি যায় পেত্রাতোসের কাছে। তিনি ঠিকমতো বল মারতে পারেননি। তা-ও বল জালে জড়িয়ে যায়। ২-০ গোলে এগিয়ে বিরতিতে যায় মোহনবাগান।
আরও পড়ুন:
দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণ আরও বাড়ায় মুম্বই। কারণ, এই ম্যাচ তাদের কাছেও খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। হারলে প্লে-অফে উঠতে সমস্যা হত। তাই কোচ পিটার ক্রাতকি তাঁর সব তাস খেলে ফেলেন। তার ফল মেলে। বার বার আক্রমণ করতে করতে অবশেষে বিশাল কাইথকে পরাস্ত করে মুম্বই। ৫৬ মিনিটের মাথায় গোল করেন জন টোরাল। তার চার মিনিট পরেই ধাক্কা খায় মুম্বই। লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় স্ট্রাইকার বিক্রম প্রতাপ সিংহকে। তবে রেফারির সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
১০ জন হয়ে যাওয়ার পরেও হাল ছাড়েনি মুম্বই। দর্শকদের সমর্থনও পায় তারা। ফলে বেশির ভাগ খেলাই হচ্ছিল মোহনবাগানের অর্ধে। প্রথম লেগের খেলায় শেষ মুহূর্তে গোল করে ড্র করেছিল মুম্বই। এ বারও তাই হল। ৮৮ মিনিটে গোল খেল বাগান। বল বার করতে গিয়ে ভুল করেন বিশাল। মনবীর সিংহের পায়ে লেগে বল লাগে নেথান রদ্রিগেসের মাথায়। বল গোলের দিকে যাচ্ছিল। বিশাল হাত দিয়ে তা আটকানোর চেষ্টা করেও পারেননি। বল জালে জড়িয়ে যায়। কোনও রকমে ড্র করে মাঠ ছাড়ে মুম্বই। বাণিজ্যনগরীর মাঠে মোহনবাগানের জয়ের স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়।
এই ম্যাচের পর মুম্বইয়ের পয়েন্ট ২২ ম্যাচে ৩৩। তারা যদি বাকি দুই ম্যাচে এক পয়েন্টও পায় তা হলেই প্লে-অফে চলে যাবে। ফলে ইস্টবেঙ্গলের প্লে-অফের আশা কিছুটা হলেও ধাক্কা খেল।