মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলে সেনাবাহিনীর শিবিরে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকলেও আতঙ্কে কেঁপে কেঁপে উঠছে একঝাঁক খুদে ফুটবলার। প্রতীকী ছবি।
মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলে সেনাবাহিনীর শিবিরে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকলেও আতঙ্কে কেঁপে কেঁপে উঠছে একঝাঁক খুদে ফুটবলার। প্রতি মুহূর্ত উদ্বেগে কাটাচ্ছেন তাদের কোচ জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক রেনেডি সিংহও! বদলে যাওয়া মণিপুরে এখন শুধুই গুলির শব্দ, মৃত্যুর হাহাকার, বেঁচে থাকার কঠিন লড়াই।
মেইতেইদের জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের কাছে রাজ্যকে সুপারিশ পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিল মণিপুর হাইকোর্ট। আপত্তি জানায় কুকিরা। প্রতিবাদে পথে নামে মণিপুরের ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অব মণিপুর’ (এটিএসইউএম)। সেই মিছিল থেকেই সূত্রপাত সংঘাতের। ইম্ফলের বিস্তীর্ণ এলাকায় ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। বোমা, গুলির শব্দে কেঁপে উঠছে শহর। বেসরকারি মতে মৃতের সংখ্যা ৫৫ ছাড়িয়ে গিয়েছে। কার্ফু জারি করে, ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া সত্ত্বেও পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। রবিবার দুপুরে যখন রেনেডিকে ফোনে ধরা হল, কম্পিত স্বরে বললেন, ‘‘ইম্ফলের পরিস্থিতি এখনও ভয়াবহ। গত কয়েক দিন শুধুই গুলির শব্দ শুনছি, মৃত্যমিছিল দেখছি। আমাদের কাছে এখন বেঁচে থাকাটাই সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা। তবে আমি নিজেকে নিয়ে ভাবছি না। চিন্তিত আমার অ্যাকাডেমির একঝাঁক খুদে ফুটবলারের ভবিষ্যৎই নিয়ে।’’
কেন? ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের হয়ে কলকাতা ময়দান কাঁপানো তারকা বললেন, ‘‘আমার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের একঝাঁক খুদে ফুটবলারের কোনও খবর পাইনি অশান্তি শুরু হওয়ার পরের কয়েক ঘণ্টা। শুনেছি, ওদের অনেকেরই বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। সেনাবাহিনী ওদের উদ্ধার করে আশ্রয় শিবিরে নিয়ে গিয়েছে জানার পরে একটু স্বস্তি পেয়েছি।’’ যোগ করলেন, ‘‘সেনাবাহিনীর আশ্রয় শিবিরে থাকলেও পুরোপুরি নিশ্চিন্ত হতে পারছি না। পরিস্থিতি এখনও শান্ত হয়নি। রবিবার সকালে মাত্র ঘণ্টা তিনেকের জন্য কার্ফু তুলে নেওয়া হয়েছিল। তার পরেও অবশ্য অধিকাংশ মানুষই বাড়ির বাইরে বেরোনোর ঝুঁকি নেননি।’’
উদ্বেগে রয়েছেন ইস্টবেঙ্গলের হয়ে আইএসএলে খেলা মহেশ সিংহও। বলছিলেন, ‘‘ইম্ফলের মতো ভয়াবহ অবস্থা আমাদের গ্রামে নেই। কিন্তু জাতীয় দলে সতীর্থ চিংলেনসানা সিংহ ও উদান্ত সিংহর বাড়ি যেখানে, সেখানে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ। ওরা কেউই অবশ্য এখন মণিপুরে নেই। উদান্ত সম্ভবত বেঙ্গালুরুতে রয়েছে। চিংলেনসানা রয়েছে হায়দরাবাদে। কিন্তু ওদের পরিবারের সকলেই মণিপুরে। ওঁদের কারও ফোন পাওয়া যাচ্ছে না। আশা করছি, সকলেইনিরাপদে আছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy