Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

স্মৃতিমন্থন, আবেগে ভাসলেন প্রাক্তনেরা

শ্রদ্ধায়, স্মরণে মঙ্গলবার পালিত হল ইস্টবেঙ্গলের ক্রীড়া দিবস। যেখানে একাকার হয়ে গিয়েছিলেন লাল-হলুদ শিবিরের গত ছয় দশকের ফুটবলার, অধিনায়ক, কোচেরা।

মিলনমেলা: মঞ্চে ইস্টবেঙ্গলের গর্বিত অধিনায়ক অর্ণব থেকে হরমনজ্যোৎ খাবরা, মেহতাব হোসেন থেকে সঞ্জু প্রধান। তাঁর উত্তরসূরিদের দেখলেন মজিদ (একেবারে বাঁ দিকে)। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

মিলনমেলা: মঞ্চে ইস্টবেঙ্গলের গর্বিত অধিনায়ক অর্ণব থেকে হরমনজ্যোৎ খাবরা, মেহতাব হোসেন থেকে সঞ্জু প্রধান। তাঁর উত্তরসূরিদের দেখলেন মজিদ (একেবারে বাঁ দিকে)। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৯ ০৪:৩৩
Share: Save:

যেন চাঁদের হাট বসেছিল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে! যেখানে সংবর্ধনা নিতে হাজির গত ছয় দশকের ইস্টবেঙ্গল অধিনায়ক ও কোচেরা। সব মিলিয়ে অনুষ্ঠান মঞ্চে সম্মানিত হলেন চল্লিশ জন প্রাক্তন ইস্টবেঙ্গল অধিনায়ক ও কোচ।

যা দেখে অভিভূত একই মঞ্চে সংবর্ধিত সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ও। তাঁর আবেগপূর্ণ প্রতিক্রিয়া, ‘‘সমর্থক হিসেবে বৃত্তটা আজ সম্পূর্ণ হল। যাঁদের খেলা গ্যালারিতে বসে দেখতাম, তাঁদের সঙ্গে একই মঞ্চে সম্মানিত হলাম।’’

এ ভাবেই শ্রদ্ধায়, স্মরণে মঙ্গলবার পালিত হল ইস্টবেঙ্গলের ক্রীড়া দিবস। যেখানে একাকার হয়ে গিয়েছিলেন লাল-হলুদ শিবিরের গত ছয় দশকের ফুটবলার, অধিনায়ক, কোচেরা। সুকুমার সমাজপতি, চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়, অরুণ ঘোষদের সঙ্গে সংবর্ধনা দেওয়া হয় শ্যাম থাপা, সুভাষ ভৌমিক, সৈয়দ নইমুদ্দিন, কুলজিৎ সিংহ, অ্যালভিটো ডি’কুনহা, মেহতাব হোসেন, অর্ণব মণ্ডলদের।

বাদ যাননি ইস্টবেঙ্গলে সব চেয়ে স্বল্প মেয়াদের কোচ মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায় বা অ্যাকাডেমির প্রধান কোচ রঞ্জন চৌধুরীও। গোয়া থেকে উড়ে আসেন প্রাক্তন কোচ আর্মান্দো কোলাসোও। সম্মানিত হলেন, আসিয়ান কাপ জয়ী দলের অধিনায়ক সুলে মুসাও। তবে আমন্ত্রণ পেলেও দেখা যায়নি সুধীর কর্মকার, গৌতম সরকার বা ১৪ বছর পরে ইস্টবেঙ্গলকে কোচ হিসেবে ফেড কাপ দেওয়া সুব্রত ভট্টাচার্যকে।

আবেগে ভেসে গিয়েছিলেন প্রাক্তন ফুটবলারেরাও। সুকুমার সমাজপতি যেমন বলে দেন, ‘‘ওপার বাংলা থেকে ঘরবাড়ি খুইয়ে আসা মানুষদের প্রতীক ছিল ইস্টবেঙ্গল পতাকা।’’ আইএফএ শিল্ডের ঐতিহাসিক ফাইনালে পাস ক্লাবের বিরুদ্ধে গোল করে জয় আনা পরিমল দে-র প্রতিক্রিয়া, ‘‘ইস্টবেঙ্গল জার্সি গায়ে মাঠে নামলে একটা আলাদা অনুভূতি হত।’’ প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘লাল-হলুদ জার্সি গায়ে তিরিশ শতাংশ দিলে, একশো শতাংশ ছন্দ এনে দেয় সমর্থকদের উৎসাহ।’’

ক্লাবের প্রাক্তন অধিনায়ক ও ইস্টবেঙ্গলের দুই ‘ঘরের ছেলে’ ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায় ও মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়াতেও ঝরে আবেগ। ভাস্কর বলেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলের ভালবাসা জীবনে ভুলতে পারব না।’’ মনোরঞ্জন বলে গেলেন, ‘‘জীবনদা, পল্টুদা যে দিন সই করিয়েছিলেন এই ক্লাবে, সে দিনের আনন্দটা ভুলব না। মনে হয়েছিল স্বপ্ন সার্থক।’’ আশির দশকের তারকা বিকাশ পাঁজি বললেন, ‘‘ঘটি বাড়ির ছেলে হয়েও আমার রক্তে ইস্টবেঙ্গল।’’

পঞ্জাব থেকে আসা কুলজিৎ সিংহ আবার স্মৃতিমেদুর এয়ারলাইন্স কাপে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ফ্রি কিকে গোলের উৎসব নিয়ে। আবেগে কেঁদেই ফেললেন সুলে মুসা। তাঁর কথায়, ‘‘এটা আমার ‘মাদার ক্লাব’। ছেলেরা বড় হয়ে ফুটবল খেললে এই ক্লাবেই পাঠাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Football Sports Day East Bengal Centenary
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE