Advertisement
E-Paper

হারার পরেও উদ্বুদ্ধ করলেন পিকে, ভাস্কর

আসলে ওই পেনাল্টিটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে গেল শেষ পর্যন্ত। ম্যাচের পর মাতোস স্বীকার করলেন, ‘‘ওই গোলটা বোকার মতো হজম করেছি আমরা। ওটাই আমাদের ক্ষতি করে দিল।’’

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:১৮
সৌজন্য: দর্শকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার ভারতীয় দলের। ছবি: গেটি ইমেজেস

সৌজন্য: দর্শকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার ভারতীয় দলের। ছবি: গেটি ইমেজেস

যুক্তরাষ্ট্র ৩

ভারত ০

পেনাল্টিই ২৮ মিনিট ধরে চলা উৎসবের মধ্যে শোকের আবহ ডেকে আনল নেহরু স্টেডিয়ামে। গ্যালারিতে বসে উন্মুখ হয়ে খেলা দেখতে থাকা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মাথায় হাত দিলেন। শব্দব্রহ্মটা স্তব্ধ হয়ে গেল! হাততালি দিতে দিতে নাগাড়ে চলতে থাকা স্লোগানটাও মূক! রিজার্ভ বেঞ্চ থেকে উঠে দৌড়ে মাঠের মধ্যে যাচ্ছিলেন লুইস নর্টন দে মাতোস। চতুর্থ রেফারি উরুগুয়ের মেয়ে ক্লদিয়া আম্পিরেজ ভারতের কোচকে থামালেন।

আসলে ওই পেনাল্টিটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে গেল শেষ পর্যন্ত। ম্যাচের পর মাতোস স্বীকার করলেন, ‘‘ওই গোলটা বোকার মতো হজম করেছি আমরা। ওটাই আমাদের ক্ষতি করে দিল।’’ হার না মানা মনোভাব, জেদ আর একাত্মতার গৌরব নিয়ে মাঠে নেমেছিল ভারতের প্রথম বিশ্বকাপ যোদ্ধারা। সেই চেষ্টাটাই শুষে নিল যুক্তরাষ্ট্রের অধিনায়ক জশ সার্জেন্টের ওই গোল। টালিগঞ্জের ছেলে জিতেন্দ্র সিংহ নিজেদের বক্সে সার্জেন্ট-কেই টেনে ফেলে দিল। সদ্য অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ খেলে ফিরেছে সার্জেন্ট। টগবগ করে ফুটছে। শুধু অধিনায়ক একাই নন যুক্তরাস্ট্র টিমটাই তো প্রচণ্ড শক্তিশালী। বেশির ভাগ ফুটবলার মেজর সকার লিগের ক্লাবে খেলে। মেক্সিকোর ক্লাবে খেলে দু’জন। তাদের কাছে ভারত ০-৩ হারবে এটা অকল্পনীয় বিষয় কিছু নয়। গোয়ায় এক বছর আগে এই দলটার কাছেই তো চার গোল খেয়েছিল ভারত। কিন্তু হারলেও সোনালি চুলের কোমল থাটাল, আনোয়ার আলিরা শেষ পর্যন্ত যেভাবে লড়ে গেল, তাঁকে কুর্নিশ জানাতেই হবে। ম্যাচের পর মাতোসের টিম যখন দর্শকদের অভিবাদন জানাতে ফেন্সিংয়ের কাছে গেল, তখন পুরো স্টেডিয়াম দাঁড়িয়ে। দু’জন দর্শককে দেখা গেল রেলিং টপকে মাঠে ঢুকে ফুটবলারদের জড়িয়ে ধরতে। আবেগের এমনই বহিঃপ্রকাশ। ফুটবলার, দর্শকদের মতো মাতোস কিন্তু আবেগপ্রবণ নন। পতুর্গিজ কোচ বরং বাস্তবের জমিতে। বলে গেলেন, ‘‘ওরা গত দু’মাসে সাতটা শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে। সেই অভিজ্ঞতাটা কাজে লাগিয়েছে। আমাদের ছেলেরা লড়াই করার চেষ্টা করেছে। প্রথম বার এ রকম স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শকের সামনে খেলছে ওরা। শুরুতে তাই ওরা কিছুটা কুঁকড়ে ছিল।’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘আমরা শেষ ১৫ মিনিটে কয়েকটা গোলের সুযোগ পেয়েছিলাম। কোমল দুটো গোল নষ্ট না করলে বা আনোয়ারের শট পোস্টে লেগে না ফিরলে ফলটা ২-১ হতে পারত।’’

আরও পড়ুন: ভারতের প্রথম ম্যাচ দেখে কী বললেন বিশেষজ্ঞরা? দেখুন ভিডিও

ভারত শুরু করেছিল ৪-৫-১ ফর্মেশনে। একেবারে আলট্রা ডিফেন্সিভ ভাবনা। যুক্তরাষ্ট্র ঠিক উল্টোটা। ৪-৩-৩। পেনাল্টিতে গোলের পর ক্রিস ডারকিন বিরতির পর করে দিল ২-০। শেষ গোলটা খেলা শেষ হওয়ার ৬ মিনিট আগে। অ্যান্ড্রু কার্লটনের। ম্যাচের পর যুক্তরাষ্ট্র কোচ জ্যাক হাওয়ার্থ ভারতীয় দলের গোলকিপার ধীরজের প্রশংসা করলেন। বললেন, ‘‘বেশ কয়েকটা ভাল গোল বাঁচিয়েছে। ভারতের কিপারের প্রশংসা করতেই হবে।’’

অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনের জন্য ভারতকে কোনও ম্যাচ খেলতে হয়নি। সংগঠক দেশ হিসাবে তারা সরাসরি খেলছে। সেটা অমরজিৎ কিয়ামদের অনেকটা পিছিয়ে দিয়েছে বোঝা গিয়েছে প্রতিটি মুহূর্তে। অভিজ্ঞতায় মার খেয়ে গিয়েছে তারা। ফারকটা অনেক হয়ে গিয়েছে। সেটা কিন্তু আবগ বা জেদ দিয়ে পূরণ করা সম্ভব নয়। তা সে যতই সকালে বাবা-মাকে টিম হোটেলে নিয়ে গিয়ে ছেলেদের উদ্বুদ্ধ করার ব্যবস্থা করুক ফেডারেশন। ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে আসা প্রাক্তনরা যদিও অখুশি নন। স্টেডিয়াম ছেড়ে যাওয়ার সময় যুব দলের লড়াই দেখে প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়রা বরং বাহবাই দিচ্ছেন। পিকে বললেন, ‘‘ফারাকটা অনেক। তবুও ছেলেগুলোর চেষ্টা আমার ভাল লেগেছে।’’ ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘যুক্তরাষ্ট্র যথেষ্ট শক্তিশালী দল। ভারত খারাপ খেলেনি। লড়ে গেছে শেষ পর্যন্ত, এটাই তো অনেক।’’

ভারত: ধীরজ মোরাংথেম, জিতেন্দ্র সিংহ, আনোয়ার আলি, সঞ্জীব স্ট্যালিন, সুরেশ ওয়াংজাম, নিনথোইংবা মিতাই (নোনডাংবা নওরেন), অমরজিৎ কিয়াম, অনিকেত যাদব, অভিজিৎ সরকার (রহিম আলি), কোমল থাটাল, রাহুল কোনোলি।

FIFA U-17 World Cup Football
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy