ফরাসি ওপেনের ফাইনালে উঠে ভালবাসার গল্প শোনালেন নাদাল ছবি: টুইটার
চোট ছিল শুরু থেকে। হয়তো এখনও আছে। কিন্তু তাঁকে দেখে সেটা বোঝার উপায় নেই। তিনি রাফায়েল নাদাল। লাল মাটির গন্ধ পেলেই তিনি অন্য মানুষ। সুরকির গুঁড়োগুলোই ব্যথা কমানোর জন্য কী রকম ম্যাজিকের মতো কাজ করে। চোটই তখন পালাতে পারলে বাঁচে। তখন আর হাইড্রোকর্টিজনের দরকার পড়ে না। ফরাসি ওপেনের ফাইনালে উঠে সেটাই বললেন ৩৬ বছরের নাদাল।
সেমিফাইনালে হারিয়েছেন ১১ বছরের ছোট আলেকজান্ডার জেরেভকে। ফাইনালে উল্টো দিকে ১৩ বছরের ছোট ক্যাসপার রুড। অতীত আর ভবিষ্যৎ পাশাপাশি রেখে নাদাল বলেন, ‘‘পা নিয়ে খুব চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু খেলার জন্য মানসিক ভাবে নিজেকে তৈরি করেছিলাম। যখন কোর্টে নেমেছি, লড়াই করেছি। রবিবার রোলাঁ গারোর ফাইনালে নামব। আরও একটা ম্যাচ খেলব। সেটা ভেবেই আমি খুশি।’’
তিনি টেনিস খেলতে ভালবাসেন। কোর্টে নামতে ভালবাসেন। লড়াই করতে ভালবাসেন। তাই সব চোট সামলে, বয়সের বাধা অতিক্রম করে এখনও টেনিস খেলছেন। কয়েক দিন আগে বলেছিলেন, প্রতিটি ম্যাচ জীবনের শেষ ম্যাচ ভেবে খেলেন। তিনি নিজেও জানেন না, আর কত দিন খেলতে পারবেন। চোটের সঙ্গে প্রতি দিন লড়াই করতে হয়। কোর্টে ঘাম ঝরাতে হয়। এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত দৌড়তে হয়। প্রয়োজনে খেলার মাঝে বিরতি নেন। কিন্তু থামেন না। লড়াই থামান না নাদাল। কারণ, তিনি টেনিস ভালবাসেন।
ফরাসি ওপেনের সেমিফাইনালে ফিলিপে শাতিয়ের কোর্টে যখন আলেকজান্ডার জেরেভ যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন, কোর্টের ও পার থেকে ছুটে এসেছিলেন নাদাল। মাঠের ধারে যখন জেরেভকে সুস্থ করে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন ডাক্তার-ফিজিয়োরা, তখন তিনি ঠায় দাঁড়িয়ে পাশে। চোটের যন্ত্রণা বোঝেন নাদাল। বোঝেন স্বপ্নভঙ্গের কষ্ট। তাই যখন প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ক্রাচের সাহায্যে জেরেভ কোর্টে ঢুকলেন তখন নাদাল ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরলেন তাঁকে। জেরেভ যখন কোর্ট ছেড়ে বেরোচ্ছেন তখনও তাঁর পাশে পাশে হাঁটলেন। তিনি নিজেও কি এ ভাবে ফাইনালে উঠতে চেয়েছিলেন। রোলা গাঁরোর রাজা লড়াই ভালবাসেন। লড়াই করে জিততে ভালবাসেন। কারণ, তিনি টেনিস ভালবাসেন। ম্যাচ শেষে সেই ভালবাসার কথা শোনান নাদাল। সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘‘প্রতি দিন কাউকে কিছু প্রমাণ করতে হবে আমাকে, এরকম ব্যাপার নয়। যেটা করছি সেটা কতটা উপভোগ করছি, কতটা ভালবাসছি, সেটাই আসল। ধরুন, কেউ গলফ খেলতে ভালবাসে। তা হলে সে সেটাই করবে। আমি টেনিস ভালবাসি। আমি টেনিস উপভোগ করি। তাই খেলছি।’’
আপাতত বয়স নিয়ে ভাবছেন না নাদাল। আরও একটা দিন নিজের প্রিয় লাল সুরকির কোর্টে নামতে পারবেন। আরও একটা দিন লড়াই করতে পারবেন। ফলাফল যাই হোক, আরও একটা দিন নিজের ভালবাসার টেনিস খেলতে পারবেন। সেটা ভেবেই খুশি রাফা।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy