ক্ষুব্ধ: করোনার মধ্যেও আইপিএল কেন, প্রশ্ন লিনেকারের। ফাইল চিত্র।
যে রাজধানীতে করোনা সঙ্কট তীব্র, অক্সিজেনের হাহাকার চলছে, সেখানেই রমরমিয়ে চলল চেন্নাই সুপার কিংস বনাম সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদ ম্যাচ। কোভিড নিয়ে জাতীয় বিপর্যয়ের মধ্যেও বন্ধ হয়নি আইপিএল। শুধু ক্রিকেট নয়, বিভিন্ন খেলার আন্তর্জাতিক তারকারাও এ নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। যদিও ভারতীয় ক্রিকেট মহল থেকে কারও কণ্ঠ খুব একটা শোনা যায়নি।
ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ফুটবল তারকা গ্যারি লিনেকার টুইট করে বলেছেন, দেশের এমন তীব্র সঙ্কটের মুহূর্তে আইপিএল চালিয়ে যাওয়াটা ঘোর অন্যায়। ‘‘আমি নিজেও আইপিএল দেখতে ভালবাসি। কিন্তু কোভিড বিপর্যয়ের মধ্যে তা চালিয়ে যাওয়াটা ঘোর অন্যায় হচ্ছে। রানের চেয়েও দ্রুতগতিতে মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন!’’ বিস্ময় প্রকাশ করে লিখেছেন লিনেকার।
আইপিএলে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণ নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। তিন জন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার ইতিমধ্যেই আইপিএল ছেড়ে চলে গিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়া ভারত থেকে সব উড়ান বন্ধ করে দিয়েছে। ক্রিস লিনের মতো কেউ কেউ দাবি করেছেন, চার্টার্ড ফ্লাইটে তাঁদের ফেরানোর ব্যবস্থা করা হোক। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন সোজাসাপ্টা বলে দিয়েছেন, ক্রিকেটারদের ফেরার ব্যবস্থা নিজেদেরই করতে হবে। যদিও এ দিন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারদের সংস্থা জানিয়েছে, তারা অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে কথা বলছে, যদি ক্রিকেটারদের ফেরানোর জন্য চার্টার্ড ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা যায়।
বিশ্ব জুড়ে সমালোচিত হচ্ছে ভারতীয় বোর্ডের বিদেশি ক্রিকেটারদের অভয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সিওও চিঠি লিখে বিদেশি ক্রিকেটারদের জানিয়েছেন, দেশে ফেরা নিয়ে তোমরা কেউ ভেবো না। প্রয়োজনে ভারতীয় বোর্ড ব্যবস্থা করবে। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে যে, দেশে যখন অক্সিজেন সঙ্কট, হাসপাতালে বেড পাওয়া যাচ্ছে না, জাতীয় বিপর্যয়ের চেহারা নিয়েছে কোভিড অতিমারি, তখন আইপিএল চালিয়ে যাওয়ার জন্য এত মরিয়া কেন বোর্ড? জনতার মনে আরও প্রশ্ন, সরঞ্জামের অভাবে অনেক শহরে কোভিডের পরীক্ষা করা যাচ্ছে না। সেখানে বোর্ড কর্তারা বলছেন, আইপিএলের জৈব সুরক্ষা বলয়ের স্বাস্থ্যবিধি আরও জোরদার করা হবে। তার জন্য বাড়ানো হতে পারে কোভিড পরীক্ষার হার। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন যে, ‘‘সাধারণ মানুষের জন্য কিট যদি না থাকে, আইপিএলের বলয়ে কী করে সব দলের এত বার পরীক্ষা হচ্ছে? আর সেটা কতটাই বা জরুরি?’’ অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার ক্রিস লিন জানিয়েছেন, সম্ভবত সামনের সপ্তাহেই তাঁরা প্রতিষেধক পেয়ে যাবেন। এ নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে যে, দেশজুড়ে যখন প্রতিষেধকের আকাল, তখন আইপিএল খেলবেন বলে সুস্থ-সবল ক্রিকেটারদের কেন তড়িঘড়ি প্রতিষেধক দেওয়া হবে? তারকা বলে আলাদা সুবিধা ়কেন?
ভারতীয় বোর্ডের পক্ষ থেকে, আইপিএলের দলগুলি এবং ক্রিকেটারদের তরফে বলার চেষ্টা হচ্ছে, এই কঠিন মুহূর্তে ক্রিকেট খেলা নাকি স্বস্তি ফেরাবে মানুষের মনে। বিপর্যয় থেকে মানুষের মনকে অন্য দিকে ঘোরাতে সাহায্য করবে। যত সময় যাচ্ছে, আইপিএল গ্রহের বাইরে এই মতের সমর্থকের সংখ্যা কমছে। অন্য মত হচ্ছে, বিপুল আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি এড়াতেই আইপিএল বন্ধ করছে না বোর্ড। ক’দিন আগে অ্যাডাম গিলক্রিস্টের টুইট, ‘‘ভারতের জন্য শুভকামনা। আতঙ্কিত হওয়ার মতো সব কোভিড সংখ্যা ভেসে উঠছে। তার মধ্যেই চলছে আইপিএল। ঠিক হচ্ছে? না কি মন ঘোরাচ্ছে খেলা? যেটাই ঠিক হোক,
প্রার্থনা তোমাদের জন্য!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy