Advertisement
E-Paper

হার্দিকের হয়ে তোপ ক্যাপ্টেন কোহালির

নিজের কেরিয়ারেও তাঁর আগ্রাসী এবং পরোয়াহীন ভঙ্গির জন্য অনেকের রোষানলের মুখে পড়েছেন কোহালি। সম্ভবত সেই কারণেই হার্দিকের অবস্থা বুঝে তাঁর পাশে প্রবল ভাবে দাঁড়ালেন।

সুমিত ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৭ ০৫:৪৯

হার্দিক পাণ্ড্যর ট্যাটু বা কানের দুল দিয়ে বিচার না করার আবেদন জানালেন বিরাট কোহালি। শ্রীলঙ্কাকে তিন টেস্টের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করে ভারত অধিনায়কের বার্তা— হার্দিককে ওর ক্রিকেটীয় প্রতিভা দিয়ে বিচার করা হোক।

হার্দিকের এনার্জি এবং তাঁর অলরাউন্ড দক্ষতার উপর প্রবল আস্থা রয়েছে কোহালির। সেই কারণে অভিষেক টেস্টে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের তরুণ প্রতিভা ভাল করার পরে তিনি এসে সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, এই মুহূর্তে বিশ্বের এক নম্বর অলরাউন্ডার বেন স্টোকসের সমান সাফল্য পাওয়ার দক্ষতা রয়েছে হার্দিকের। সেটা শুনে অনেকে হাসাহাসি করতে ছাড়েনি। কেউ কেউ এমনও দাবি করতে থাকে যে, কোহালির বক্তব্য অতিরঞ্জিত। সেই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কথা হয়তো তাঁর কানে গিয়ে থাকবে।

পাল্লেকেলে হার্দিক দুরন্ত সেঞ্চুরি করার পরে তাই কোহালিও ছাড়লেন না। পাল্টা বলে গেলেন, ‘‘আমি চাইব, ওর মাঠের বাইরের হাবভাব নিয়ে কথা না বলে ক্রিকেটীয় পারফরম্যান্সটাই লোকে বিচার করুক। বাইরে থেকে অনেকের ওকে নিয়ে সমস্যা থাকতে পারে। কিন্তু টিমের মধ্যে আমরা জানি ও কী করতে পারে। কখনও তাই টিমের মধ্যে ওর দক্ষতা নিয়ে সংশয় ছিল না।’’ টিমের বাইরের লোকের সন্দেহ থাকতে পারে— কথাটা সেই সব বিশেষজ্ঞদের উদ্দেশে বলা যারা অধিনায়কের ‘স্টোকস মন্তব্য’ নিয়ে কটাক্ষ করছিল।

এখানেই না থেমে আরও বলে গেলেন, ‘‘আমরা হার্দিকের উপর কিছু চাপিয়ে দিই না। ওকে পাল্টাতে বলি না। ওকে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে দিই। নিজের প্রথম টেস্ট সিরিজ খেলতে এসে যে ছেলে প্রথম টেস্টে হাফ সেঞ্চুরি আর তৃতীয় টেস্টেই প্রথম সেঞ্চুরি পেতে পারে এবং সেটাও কি না আট নম্বরে ব্যাট করতে নেমে, সে নিশ্চয়ই বিশেষ প্রতিভাই হবে।’’ কথাগুলো বলার সময় বেশ ক্ষুব্ধই দেখাল অধিনায়ককে। নিজের কেরিয়ারেও তাঁর আগ্রাসী এবং পরোয়াহীন ভঙ্গির জন্য অনেকের রোষানলের মুখে পড়েছেন কোহালি। সম্ভবত সেই কারণেই হার্দিকের অবস্থা বুঝে তাঁর পাশে প্রবল ভাবে দাঁড়ালেন।

শোনা গেল, দলের মধ্যেও হার্দিককে কটাক্ষ করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কোহালি বলে চললেন, ‘‘৩২০-৬ হয়ে গিয়েছিলাম আমরা। সেখান থেকে ছেলেটা ইনিংসটা টেনে নিয়ে গেল। আর মোটেও উল্টোপাল্টা শট খেলে নয়। মস্তিষ্ক কাজে লাগিয়ে টেলএন্ডারদের সঙ্গে নিয়ে খেলে গেল। এটা আমাদের জন্য দারুণ সঙ্কেত।’’ তার পরেই আবার বলে উঠলেন, ‘‘বাইরে থেকে যারাই সংশয় প্রকাশ করুক় না কেন, টিমের মধ্যে আমাদের ১২০ শতাংশ আস্থা রয়েছে হার্দিকের প্রতি।’’

টিমের মধ্যে সুস্থ সংস্কৃতি গড়ে তোলার উপরও জোর দিলেন ভারত অধিনায়ক। খুব অর্থপূর্ণ ভাবে এ দিন তিনি বলে গেলেন, ‘‘টিমের সংস্কৃতি তখনই গড়ে তোলা যাবে যখন সকলে সেটাতে অবদান রাখতে চাইবে। আর সেটা তখনই হবে যদি লোকে বিচার করতে না বসে। যদি ছোটখাটো বিষয় নিয়ে প্রশ্ন না তোলা হয়। এই ব্যাপারগুলো থেকে আমরা একদম বেরিয়ে এসেছি।’’ এর পর আরও লম্বা ব্যাখ্যা দিলেন, ‘‘এই টিমে আমরা একে অন্যের সঙ্গে খোলামেলা ভাবে মিশতে পারি, ঠাট্টা-ইয়ার্কি করি। নতুন যে কেউ এই পরিবেশ আসবে, সে দ্রুত পরিণত হয়ে উঠবে। পুরো গ্রুপের থেকে তার উপর কোনও চাপই থাকে না। এই পরিবেশ গড়ে তুলতে পেরে আমরা গর্বিত।’’

শুধু টিম সংস্কৃতি নয়, ম্যাচ নিয়ে অভিনব ভাবনাও ছিল অধিনায়কেরও। কী সেটা? জানা গেল, ভারতীয় টিম নিজেদের সামনে লক্ষ্যটা কঠিন করে নিতে চেয়েছিল। ধরে নেওয়া হয়েছিল, এটাই শেষ দিন। হাতেও বেশি ওভার নেই। তার মধ্যেই ম্যাচ জিততে হবে। অর্থাৎ প্রতিপক্ষের চ্যালেঞ্জ সহজ হলেও নিজেদের সামনে লক্ষ্যটা কঠিন করে তুলেছিল ভারত।

যে লক্ষ্যটা পূর্ণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিলেন মহম্মদ শামি। যাঁকে নিয়ে অধিনায়কও বলে গেলেন, ‘‘আমার মতে বিশ্বের অন্যতম সেরা তিন পেসারের মধ্যে পড়বে শামি। আমাদের জন্য ও খুবই গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র। যখন ফিটনেস নিয়ে সমস্যা থাকে না, ও এ রকমই দুর্দান্ত বল করে। ধারাবাহিক ভাবে বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলার হওয়ার দক্ষতা রয়েছে শামির। আশা করব, সেটা ও করে দেখাবে এবং আর কোনও ফিটনেস সমস্যায় ভুগবে না।’’

Virat Kohli Hardik Pandya India vs Sri Lanka বিরাট কোহালি Team India cricket
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy