Advertisement
E-Paper

অন্যদের হার প্রার্থনা করার মতো ক্রিকেটার আমি নই

আমাদের এই অবস্থাটা কী রকম জানেন? অনেকটা ক্লাস নাইনের সেই ছাত্রের মতো, যাকে খুব কম সময়ের মধ্যে সিলেবাসের অনেক কিছু মুখস্থ করতে হবে। যেখানে সে হাফ-ইয়ার্লি পরীক্ষায় দারুণ রেজাল্ট করেছিল। এই উদাহরণটা টানলাম কারণ আমাদের হাতে মাত্র একটা ম্যাচ, আর এখনও আমরা প্লে-অফের সেই মরীচিকা-সম জায়গাটা খুঁজছি।

গৌতম গম্ভীর

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৬ ০৩:৫৯
শহরে চলে এলেন যুবরাজরা। শনিবার। ছবি: শৌভিক দে

শহরে চলে এলেন যুবরাজরা। শনিবার। ছবি: শৌভিক দে

আমাদের এই অবস্থাটা কী রকম জানেন? অনেকটা ক্লাস নাইনের সেই ছাত্রের মতো, যাকে খুব কম সময়ের মধ্যে সিলেবাসের অনেক কিছু মুখস্থ করতে হবে। যেখানে সে হাফ-ইয়ার্লি পরীক্ষায় দারুণ রেজাল্ট করেছিল।

এই উদাহরণটা টানলাম কারণ আমাদের হাতে মাত্র একটা ম্যাচ, আর এখনও আমরা প্লে-অফের সেই মরীচিকা-সম জায়গাটা খুঁজছি। আর ক্লাস নাইনের ছাত্রের মতো আমরাও একটা সময় পয়েন্ট টেবলের শীর্ষে ছিলাম। হায়দরাবাদ, পঞ্জাব, পুণেকে পরপর হারিয়েছিলাম। তা-ও আবার ওদের ঘরের মাঠে। তখন আমাদের মনে আত্মবিশ্বাস ছিল, পদক্ষেপে একটা নিশ্চয়তা ছিল।

হয়তো ক্লাস নাইনের ছাত্রটা তার সাফল্য একটু বেশিই সেলিব্রেট করে ফেলেছিল। হাফ-ইয়ার্লির পর শীতের ছুটিতে হয়তো সে বেশি আত্মতুষ্ট হয়ে পড়েছিল। পরিস্থিতির উপর নিয়ন্ত্রণটা হারিয়ে ফেলেছিল। কেকেআর অন্তত তাই করেছে। গুজরাত আর ইডেনে আরসিবির কাছে হার দুটো শারীরিক ক্ষতের মতো। গোটা রাত আমি হার দুটো নিয়ে দুঃখ করে যেতে পারি। কিন্তু সত্যিটা হল যে, দুটো ম্যাচেই কেকেআর ভাল খেলতে পারেনি।

ইডেন আমাদের দুর্গ, আমাদের ইডেনে এর চেয়ে অনেক ভাল খেলা উচিত ছিল। কিন্তু আরসিবি ম্যাচে আমরা খুব সাধারণ কয়েকটা ভুল করে ফেলেছিলাম। যার মধ্যে আমার বিরাট কোহালির ওই লজ্জাজনক ক্যাচ ফেলাও রয়েছে। আমি আশা করেছিলাম আমাদের মতো চ্যাম্পিয়ন টিম এই হোঁচটগুলো থেকে শিখবে। কিন্তু কানপুরে আমাদের শেষ ম্যাচটা দেখিয়ে দিল যে, সেটা হয়নি।

শুরুতেই আমি মূর্খের মতো রান আউট হয়ে গেলাম। আরও এক বার। রবিন আর আমি যেটা করলাম, স্কুল ক্রিকেটেও কেউ করে না। এ রকম গুরুত্বপূর্ণ একটা ম্যাচে রান আউট হয়ে প্রায় অসুস্থ লাগছিল। কয়েকটা আউট খুব বেশি গা-ছাড়া হয়ে গেল। ডোয়েন স্মিথকে সম্মান করেই বলছি, ও যে আট রানে চার উইকেট তুলছে, তার মানে বিপক্ষের ব্যাটিং অত্যন্ত সাধারণ হয়েছে।

হ্যাঁ, কানপুর উইকেট সবুজ ছিল। কিন্তু একেবারে খেলা যাচ্ছিল না, সে রকম নয়। ইউসুফ পাঠান তো দেখিয়ে দিল যে, আমরা চাঁদে খেলছিলাম না। কিন্তু মিডল অর্ডারের বাকি কয়েকজন ওর থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারেনি। বারবার এক কথা বলে ফেলছি জানি, কিন্তু তবু বলব, রবিন আর আমার আরও বেশি দায়িত্ব নিয়ে খেলা উচিত ছিল। কানপুরের মতো সারফেসে তো ওপেনাররাই ইনিংসের রং ঠিক করে দেয়।

যাই হোক, আমাদের এখন এগিয়ে যেতে হবে। আমরা কলকাতায় ফিরে এসেছি আর হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে বিকেল চারটের ম্যাচের অপেক্ষা করছি। এ সবের মধ্যে আবার শুনছি বঙ্গোপসাগরের কাছাকাছি সাইক্লোন রোয়ানু ঘোরাফেরা করছে। শনিবার সন্ধেয় যখন এই কলাম লিখছি, তখন পর্যন্ত শহরে বৃষ্টি হয়নি। তাই আশা করছি রবিবার পুরো ম্যাচ হবে।

লিখতে লিখতে মুম্বই-গুজরাত ম্যাচটার দিকেও চোখ রয়েছে। কে যেন আমাকে বলল, মুম্বইয়ের ক্ষতি মানে আমাদের লাভ। যে ভাবনাটা পত্রপাঠ উড়িয়ে দিয়েছি। এক গর্বিত ক্রিকেটার হিসেবে শেষ চারে ওঠার জন্য আমি অন্য কারও হারের প্রার্থনা করতে পারি না। আমি ক্রিকেটটা এ ভাবে খেলি না। পড়ে পাওয়া চোদ্দো আনার অপেক্ষায় না থেকে নিজেদের ভাগ্য কেকেআরকে নিজেদের লিখতে হবে।

আইপিএলে ওর প্রথম আর দুর্দান্ত হাফসেঞ্চুরির জন্য নীতিশ রানাকেও অভিনন্দন। মুম্বইয়ের হয়ে ও খুব ভাল ব্যাট করেছে। কোচ সঞ্জয় ভরদ্বাজের অ্যাকাডেমিতে আমরা একসঙ্গে ট্রেন করি। যার জন্য জোর দিয়ে বলতে পারি যে, নীতিশ পরিশ্রমী ক্রিকেটার। আইপিএল থেকে যে সব প্রতিভাবান তরুণ উঠে আসে, তার মধ্যে নীতিশও থাকবে। সঞ্জয় স্যরকে যতটুকু চিনি, তাতে মনে হয় এই সাফল্য সেলিব্রেট করতে অ্যাকাডেমিতে ছোটখাটো কিছু একটা পার্টি হবে।

আর আমি নীতিশকে বলব, ক্লাস নাইনের ছাত্রের ওই উদাহরণটা থেকে শিখতে। জীবনে কোনও কিছুকে যেন ও সহজলভ্য না ভেবে নেয়।

IPL2016 KKR Gautam Gambhir
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy