দু’শোর দোরগোড়ায় থেমে যাওয়ার পর। রবিবার চিপকে। ছবি: পিটিআই
ফাইন লেগ দিয়ে আদিল রশিদকে বাউন্ডারি পার করিয়ে দিয়ে ১৯৯-এ পৌঁছলেন যখন, চেন্নাইয়ের গ্যালারিতে উৎসবের প্রস্তুতি। কে এল রাহুলের ডাবল সেঞ্চুরির উৎসব। টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষে যে এই একটাই প্রাপ্তি হতে পারত চিপকের সানডে ক্রাউডের।
কিন্তু পরের বলেই বজ্রপাত।
রাহুল আউট।
ফের অফ স্টাম্পের বাইরের বল। এ বার কভার ড্রাইভ করতে গিয়ে জস বাটলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেললেন! চিপকে যেন সত্যিই বাজ পড়ল। ক্রিজেই মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লেন চব্বিশের তরুণ।
ড্রেসিংরুমের সামনে তখন মুখে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে হতাশ বিরাট কোহালি। হতাশার ছাপ তাঁর সতীর্থদের চেখেমুখেও। শেষ টেস্ট ড্র হলেও কি এতটা হতাশ হবে ভারতীয় দল?
১৯৯-এ আউট! মনে পড়ে গেল ৩০ বছর আগের ঠিক এই সময়েরই এক টেস্টের কথা। কানপুরে ভারত-শ্রীলঙ্কা। মহম্মদ আজহারউদ্দিনও সেই টেস্টে আউট হয়েছিলেন ১৯৯-এ। সেই আজহার, আর এই রাহুল। ভারতের আর কেউ কখনও টেস্টে দুশোর দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে এ ভাবে ফিরে যাননি। ইংল্যান্ডের ৪৭৭-এর জবাবে ভারত তৃতীয় দিনের শেষে ৩৯১-৪। পার্থিব পটেলের ৭১-এর পর করুণ নায়ারও ৭১-এ নট আউট। নাটকীয় কিছু হলে তবেই শেষ টেস্ট ফয়সালার দিকে যেতে পারে। তবে কোহালির শিবিরে এই হতাশাকেও হয়তো ছাপিয়ে যেতে পারে রাহুলের ব্যর্থতার দুঃখ। যার উদাহরণ সারা বিশ্বে আর মাত্র দশ জনের আছে।
ম্যাচের পর নিজের যন্ত্রণার কথা শোনাচ্ছিলেন রাহুল, ‘‘ড্রেসিংরুমে ঢোকার পর অনেকে অনেক কথা আমাকে বললেও কারও কথাই আমি শুনিনি। একটা কথাও বলিনি কারও সঙ্গে।’’ কিন্তু কেন এমন ভুল করে বসলেন? ক্রিকেটে ‘এক বল অউর এক রান কি কিমত ক্যায়া হোতা হ্যায়’, তা এ দিনই হাড়ে হাড়ে টের পেয়ে রাহুল ব্যাখ্যা দিলেন, ‘‘সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিল। আউট হওয়ার আগে পর্যন্ত। আসলে ডাবল সেঞ্চুরির চাপটা নিতে পারলাম না। ভুল করে বসলাম। তবে ১৯৯ করেও কম তৃপ্ত নই আমি। পুরো ইনিংসটাই ভাল খেললাম যে। রানটাও দলের কাজে লাগল।’’
চিপককে এ দিন তৃপ্তি দিতে পারেননি বিরাট কোহালি (১৫) ও চেতেশ্বর পূজারাও (১৬)। তাই পাশের রাজ্যের রাহুল ও করুণ নায়ারের দিকেই তাকিয়ে ছিলেন তাঁরা। পার্থিবের সঙ্গে ১৫২-র পার্টনারশিপ খেলার পর ১১ বছর বয়স থেকে এক সঙ্গে ক্রিকেট খেলা করুণের সঙ্গে ১৬১-র পার্টনারশিপও খেলেন রাহুল।
ভারতীয় ক্যাপ্টেনকে এ দিন রাহুলের আউটে যেমন হতাশ হতে দেখা যায়, তেমনই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায় তাঁর সেঞ্চুরিতে। তখন নন স্ট্রাইকিং এন্ডেই ছিলেন ভারত অধিনায়ক। এগিয়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরেন সতীর্থকে। এই ব্যাপারে রাহুল বলেন, ‘‘এটাই ক্যাপ্টেন বিরাটের বৈশিষ্ট্য। দলের কেউ সফল হলে ও সবচেয়ে বেশি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে। সে জন্যই তো আমরা এক নম্বর টেস্ট টিম।’’
ইংল্যান্ড
প্রথম ইনিংস: ৪৭৭
ভারত
প্রথম ইনিংস (আগের দিন ৬০-০)
লোকেশ ক বাটলার বো রশিদ ১৯৯
পার্থিব ক বাটলার বো মইন ৭১
পূজারা ক কুক বো স্টোকস ১৬
কোহালি ক জেনিংস বো ব্রড ১৫
করুণ ন.আ. ৭১
বিজয় ন.আ. ১৭
অতিরিক্ত ২, মোট ৩৯১-৪
পতন: ১৫২, ১৮১, ২১১, ৩৭২
বোলিং: ব্রড ১৮-৪-৪৬-১, বল ১৫-১-৫০-০, মইন ২৪-১-৯৬-১, স্টোকস ৯-১-৩৭-১, রশিদ ১৭-০-৭৬-১, ডসন ২৩-৩-৭২-০, রুট ২-০-১২-০।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy