Advertisement
E-Paper

আমি আশাবাদী, ওভালে ফিরবে মেলবোর্নের রাত

পঁচাশির সেই বিশ্ব জয়ের অভিযানে ঝড় তোলা রবি শাস্ত্রী এক্সক্লুসিভ ইন্টারভিউ দিলেন আনন্দবাজার-কে। মেলবোর্নের নায়ক রবিবারের ওভালে থাকছেন কমেন্ট্রি বক্সে।

সুমিত ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৭ ০৪:৩৩
বেনসন অ্যান্ড হেজেস কাপ নিয়ে শাস্ত্রী। গেটি ইমেজেস

বেনসন অ্যান্ড হেজেস কাপ নিয়ে শাস্ত্রী। গেটি ইমেজেস

মেলবোর্নের সেই অমর ছবি। পঁচাশির বেনসন অ্যান্ড হেজেস চ্যাম্পিয়নশিপে তিনি হলেন চ্যাম্পিয়ন অব চ্যাম্পিয়ন্স। তাঁর জেতা অডি গাড়ির বনেটে চেপে বসে মাঠ ঘুরছেন সতীর্থরা। চিরকালীন ভারতীয় ক্রিকেটের রূপকথায় থেকে যাওয়া এক ছবি। বত্রিশ বছর পরে ফের বিশ্ব মানের এক পঞ্চাশ ওভারের ফাইনালে ফের ভারত বনাম পাকিস্তান স্বপ্নের ক্রিকেট দ্বৈরথ। পঁচাশির সেই বিশ্ব জয়ের অভিযানে ঝড় তোলা রবি শাস্ত্রী এক্সক্লুসিভ ইন্টারভিউ দিলেন আনন্দবাজার-কে। মেলবোর্নের নায়ক রবিবারের ওভালে থাকছেন কমেন্ট্রি বক্সে।

প্রশ্ন: ওভালের ফাইনালের আগে পঁচাশির সেই ঐতিহাসিক ফাইনালটা অনেকের মনে পড়ে যাচ্ছে। অডি গাড়ির মালিকের কি মনে পড়ছে না?

রবি শাস্ত্রী: হ্যাঁ, মনে পড়ছে। পঞ্চাশ ওভারের ম্যাচে সেটাই ছিল ফাইনালে দু’টো টিমের শেষ সাক্ষাৎ। আর এ বারের মতো সে বারও কিন্তু আমরা বেনসন অ্যান্ড হেজেস চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়েছিলাম। তার পর ফাইনালে গিয়েও হারাই। আশা করব, বিরাটদের ক্ষেত্রেও যেন একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়।

প্র: কী মনে হচ্ছে, কারা ফেভারিট?

শাস্ত্রী: অফকোর্স ইন্ডিয়া। কোনও সন্দেহই নেই। পাকিস্তান চমক দেখাতে পারে। বলছি না, ওরা পারবে না। ক্রিকেটে কোনও কিছুই আগাম ধরে নেওয়া যায় না। ওরা ভাল ক্রিকেট খেলে ফাইনালে পৌঁছেছে। দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ডের মতো দলকে হারিয়েছে। তবে ফেভারিট ভারতই। আমি বলব, জেতার সমীকরণ ভারতের পক্ষে ৬৫-৩৫।

প্র: মেলবোর্নের সেই ফাইনাল নিয়ে বলুন। কত রাত পর্যন্ত পার্টি চলেছিল?

শাস্ত্রী: অনেক রাত পর্যন্ত চলেছিল। আমার তো বেশ লেট নাইটই হয়েছিল (হাসি)। খুবই স্মরণীয় একটা রাত ছিল আমাদের পুরো টিমের কাছে। দেশের ক্রিকেট ভক্তরা খুব খুশি হয়েছিলেন। এখনও লোকে এসে আমাকে সেই বেনসন অ্যান্ড হেজেস জয়ের কথা বলে।

প্র: আপনার অডি জেতা আর দলের বাকি সব ক্রিকেটারের গাড়ির বনেটের ওপর উঠে বসে মেলবোর্ন চক্কর দেওয়া। এটা তো ভারতীয় ক্রিকেটের সেরা ছবিগুলোর একটা।

শাস্ত্রী: আমি এখনও অডির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর। ইয়েস, এখনও লোকে মনে রেখেছে সেই ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্টের পুরস্কার জেতাটা। আমার কাছে ওই টুর্নামেন্ট জেতার আর একটা বড় তৃপ্তির কারণ ছিল, বিশ্বকাপের ঠিক পরেই আমরা আবার একটা বিশ্বমানের টুর্নামেন্ট জিতলাম। লর্ডসে বিশ্বকাপ জেতার পরে অনেকে বলছিল, ফ্লুক। তাদের যেন বলতে পেরেছিলাম— দ্যাখ তোরা, কোনও ফ্লুক নয়। আমরা ক্রিকেটীয় যোগ্যতাতেই বিশ্বকাপ জিতেছিলাম। বেনসন অ্যান্ড হেজেস জিতে আমরা সেটা প্রমাণ করতে পেরেছিলাম।

প্র: অনেকে মনে করেন, শুধু ভারতীয় ক্রিকেট বলে নয়, বিশ্ব ক্রিকেটেও ওয়ান ডে-র জন্য পঁচাশির সেই বেনসন অ্যান্ড হেজেস ছিল টার্নিং পয়েন্ট। অনেক বেশি পেশাদারিত্ব এল এর পর থেকে।

শাস্ত্রী: সেটা ঠিক। সে বারই প্রথম রঙিন পোশাকে বিশ্ব মানের একটা টুর্নামেন্ট হল। আমরা তিরাশির বিশ্বকাপটাও তো জিতেছিলাম সাদা পোশাকে খেলে। হোয়াইট বল এল। নানা রকম নতুন ওয়ান ডে নিয়ম। ইয়েস, খেলাটা এর পর পাল্টে গেল।

প্র: বেনসন অ্যান্ড হেজেসে চ্যাম্পিয়ন অব চ্যাম্পিয়ন্স। কতটা আনন্দ দিয়েছিল?

শাস্ত্রী: ভীষণই আনন্দ দিয়েছিল। আমার ক্রিকেট জীবনের অন্যতম সেরা দিন ছিল সেটা। ওই টুর্নামেন্টে অলরাউন্ডার হিসেবে আমি ভাল করেছিলাম। সেই কারণেই ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট হয়েছিলাম। তবে সব চেয়ে আনন্দদায়ক ছিল চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা। টিম যে বিশ্বকাপের পর বিশ্ব সেরা হল, সেটা বিশাল প্রাপ্তি ছিল।

প্র: এই ইংল্যান্ডেই আপনি বিরাট, ধোনিদের টিমের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তখন ০-৪ হেরে মনোবল একদম তলানিতে। সেখান থেকে অবিশ্বাস্য ভাবে ঘুরে দাঁড়াল দল। ইংল্যান্ডে ওয়ান ডে সিরিজ জিতল। কী বলেছিলেন ছেলেদের?

শাস্ত্রী: বিশেষ কিছুই না। ওদের আত্মবিশ্বাস দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। বলেছিলাম, আমাদের ভয়ডরহীন হতে হবে। আত্মবিশ্বাস রেখে এগোতে হবে। ধারাবাহিক হতে হবে। আই অ্যাম হ্যাপি যে, ছেলেরা ইতিবাচক ভঙ্গিতে সাড়া দিয়েছিল।

প্র: আঠারো-উনিশ মাস ভারতীয় ক্রিকেট দলের সঙ্গে যুক্ত থাকার সময়েই বিরাটদের এই উত্তেজক ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলা শুরু। সেটা কী ভাবে ঘটেছিল?

শাস্ত্রী: পজিটিভ ক্রিকেট খেলতে চেয়েছিলাম আমরা। অস্ট্রেলিয়াতে হেরে গেলেও টিভি ইন্টারভিউতে আমি বলেছিলাম, তিন মাসের মধ্যে এই টিমটা বুলেট হবে, বুলেট! এক বারের জন্যও ছেলেদের যোগ্যতা, দক্ষতা নিয়ে আমার মনে কোনও সংশয় ছিল না।

প্র: ইংল্যান্ডে ০-৪ হেরে আতঙ্কের গহ্বরে ঢুকে থাকা একটা টিম। সেই ইংল্যান্ডেই ফাইনাল খেলছে।

শাস্ত্রী: সবচেয়ে যেটা আমার ভাল লেগেছে, তা হচ্ছে, ওদের পেশাদারি ভঙ্গি। কোনও গুলিয়ে ফেলার ব্যাপারই নেই। ঠান্ডা মাথায় কাজটা করে যাচ্ছে। ইয়েস, ভাল তো লাগছেই। এই টিমের প্রত্যেকের সঙ্গে আমি ভারতীয় ক্রিকেট দলের সংসারে থেকেছি। ওদের সাফল্যে আমি সব সময়ই অন্য রকম আনন্দ পাই।

প্র: ওভালের ফাইনালের আগে বত্রিশ বছর আগের মেলবোর্নের নায়কের প্রার্থনা কী?

শাস্ত্রী: চাইব, মেলবোর্নের পুনরাবৃত্তি হোক ওভালে। এবং, আমি খুব আশাবাদী সেটাই ঘটতে চলেছে।

interview Ravi Shastri বিরাট কোহালি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ICC Champions Trophy 2017 Champions Trophy cricket Virat Kohli The Oval
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy