Advertisement
E-Paper

এর পরেও কেন খেলানো হবে কেদারকে, দলে আসুক জাডেজা

কেন ওদের পারফরম্যান্স আজ খারাপ সেই ব্যাখ্যায় পরে আসছি। তার আগে বলি, বোলারদের নিয়ে বেশি ভাবতে হবে না। চার নম্বর ব্যাটসম্যান নিয়েও চিন্তা নেই আর। কিন্তু মাঝের সারির ব্যাটসম্যানদের নিয়ে অনেক পরিমার্জনের প্রয়োজন। 

এরাপল্লি প্রসন্ন

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৯ ০৪:১২
রবীন্দ্র জাডেজা।—ছবি রয়টার্স।

রবীন্দ্র জাডেজা।—ছবি রয়টার্স।

বিশ্বকাপে ভারত বনাম ইংল্যান্ড মানেই একটা বাড়তি উত্তেজনা অনুভব করি। ক্রিকেটার জীবনে তো ছিলই। এখনও দর্শক হিসেবে টিভির সামনে বসেও সেটা দূর হয়নি। রবিবার বার্মিংহামে ভারত বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচের আগেও সেই উত্তেজনা ছিল পুরোদমে।

ভারতীয় দল শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা হারল ৩১ রানে। ৫০ ওভারে ইংল্যান্ড করেছিল ৩৩৭-৭। জবাবে ভারতের ইনিংস শেষ হয় ৩০৬-৫ এ। ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখল ইংল্যান্ড। বিরাটের দলের ভাগ্য ভাল যে, এই হারটা এল প্রতিযোগিতার মাঝখানে। এখনও বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা ম্যাচ বাকি। এই দুই ম্যাচ থেকে এক পয়েন্ট পেলেই ভারত চলে যাবে সেমিফাইনালে। তাই এই হারের কাটাছেঁড়া করে রণনীতির ভুল শুধরে নেওয়ার সময় থাকছে।

এ দিন ভারতীয় স্পিনাররা হয়তো ভাল বল করতে পারেনি। কেন ওদের পারফরম্যান্স আজ খারাপ সেই ব্যাখ্যায় পরে আসছি। তার আগে বলি, বোলারদের নিয়ে বেশি ভাবতে হবে না। চার নম্বর ব্যাটসম্যান নিয়েও চিন্তা নেই আর। কিন্তু মাঝের সারির ব্যাটসম্যানদের নিয়ে অনেক পরিমার্জনের প্রয়োজন।

টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইংল্যান্ড। উইকেট শুকনো ঘাসে ঢাকা। পিচগুলোও খটখটে। বল পড়ে ব্যাটে আসছে। ব্যাটসম্যানদের স্বর্গ বলা যায়। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের ওঠার সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখতে এই ম্যাচটা জিততেই হত। তাই এ দিন কোনও ঝুঁকি নেয়নি ইংল্যান্ড। চোট থেকে সেরে ওঠা জেসন রয়কে ওরা দলে নিয়েছিল জেমস ভিন্সের জায়গায়। এর একটা বড় কারণ, গত কয়েকটা ম্যাচে ভিন্সের রান না পাওয়া। একই সঙ্গে বিরাটরা যে হেতু স্পিনের বিরুদ্ধে বিধ্বংসী তাই ইংল্যান্ড শিবির পেস আক্রমণ জোরদার করেছে লায়াম প্লাঙ্কেটকে দলে নিয়ে।

সেখানে ভারতের দল নির্বাচনেই ভুল ছিল। কেদার যাদব বল করেনি। মাঝের সারির ব্যাটসম্যান হিসেবেও (১৩ বলে ১২ রান) কোনও অবদান রাখতে পারেনি। তা হলে ওকে কোন যুক্তিতে দলে নেওয়া হয়েছিল? আমি মনে করি, কুলদীপ ও চহালের মধ্যে একজন রিস্টস্পিনারকে রেখে কেদারের বদলে দলে দরকার ছিল রবীন্দ্র জাডেজাকে। কারণ, জাডেজা স্লগ ওভারে দ্রুত রান যোগ করতে পারে। ভাল ফিল্ডার।

জাডেজাকে দলে রাখার আরও একটা বড় কারণ হল, পাটা উইকেটে ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানরা আক্রমণের জন্য বেছে নিয়েছিল কুলদীপ যাদব (১-৭২) ও যুজবেন্দ্র চহালকে (০-৮৮)। এই দুই স্পিনার মিলে ২০ ওভার বল করে দিয়েছে ১৬০ রান। ওদের দু’জনের শিকার এক উইকেট। কুলদীপ ও চহাল দু’জনেই রিস্ট স্পিনার। উইকেট তোলার জন্য বেশি ফ্লাইট করাতে চাইছিল। সেই বলগুলোই এগিয়ে এসে বিভিন্ন প্রান্ত দিয়ে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দিচ্ছিল এ দিন ১০৯ বলে ছ’টি ছক্কা ও ১০টি চার-সহ ১১১ রান করে যাওয়া জনি বেয়ারস্টো। ওদের ঠিক জায়গায় বল ফেলার কোনও জায়গাই দেয়নি ও। স্লগ সুইপ, রিভার্স সুইপ করে প্রতি বলে রান নিয়ে ভারতীয় স্পিনারদের মনোবলটাই নষ্ট করে দিয়েছিল ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানরা। এখানে একটু টেনে বল করতে হত। তা হলে ৩০-২০ রান কম হত। সেটা করতে পারত জাডেজা।

একসময়ে মনে হচ্ছিল ইংল্যান্ডের রান চারশোর কাছাকাছি চলে যাবে। কিন্তু ৩১-৪০ ওভার এই সময়ে মহম্মদ শামি (৫-৬৯) ও যশপ্রীত বুমরা (১-৪৪) বেন স্টোকসদের বিরুদ্ধে পরিকল্পনামাফিক বল করে ৪৩ রান দেয়। বেয়ারস্টোকে এই সময় ইয়র্কার দিয়ে শামির ফেরানো, ঠিক লাইন বজায় রেখে বল করে ভারতের দুই পেসার শেষের ২০ ওভারে ইংল্যান্ডকে কিছুটা চেপে ধরায় রানটা চারশোর আশেপাশে যায়নি।

৩৩৭ রান তাড়া করতে নেমে বিরাটদের রণনীতি ছিল শুরুতে উইকেট রেখে পরের দিকে আক্রমণে যাওয়া। রাহুল শুরুতেই শূন্য রানে ফেরায় প্রথম ১৫ ওভার খুব মন্থরই লাগল রোহিত ও বিরাটকে। রোহিত ১০৯ বলে ১০২ রান করে বিশ্বকাপে তৃতীয় শতরান করলেও আরও দায়িত্ববোধ দেখাতে পারত। বিরাটও কভার ও মিড উইকেট অঞ্চল দিয়ে খেলে রানটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু গুডলেংথ স্পটে পড়া বল কাট করতে গিয়েই বিপদটা ডেকে আনে ভারত অধিনায়ক।

কিন্তু তার পরেও ম্যাচটা বেরোতে পারত। কিন্তু মহেন্দ্র সিংহ ধোনি আর কেদার যাদব তা করতে পারল কোথায়? ধোনি ৩১ বলে ৪২ করল ঠিকই। মাথায় রাখতে হবে সব দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ নয়। ইংল্যান্ড, নিউজ়িল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ক্যারিবিয়ানদের চেয়ে অনেক পেশাদার প্রতিপক্ষ। এই দলগুলো কিন্তু ধোনিকে হাত খুলে মারতে দেবে না। মনে হচ্ছে, নিজের সেরা সময় পিছনে ফেলে এসেছে ‘ক্যাপ্টেন কুল’। স্লগ ওভারে চকিতে চার-ছক্কা মেরে রান বাড়ানোর আগের ঝলক আর দেখছি না ধোনির খেলায়। আটকে গেলেও উদ্ভাবনী ক্ষমতা প্রয়োগ করে রান বাড়াতে পারছে না। তবুও ওর বিশাল অভিজ্ঞতা ও মগজাস্ত্রের জন্য খেলিয়ে যেতে হচ্ছে।

তবে এই হারের দিনেও একটা প্রাপ্তি। তা হল চার নম্বরের প্রকৃত খেলোয়াড় পেয়ে যাওয়া। সে হল ঋষভ পন্থ। ২৯ বলে ৩২ রান করলেও ওর ইতিবাচক ব্যাটিং ভাল লাগল। বিজয় শঙ্করের চেয়ে চার নম্বরে অনেক কার্যকর হবে দিল্লির ওই ছেলেটা।

Cricket India England ICC World Cup 2019 Kedar Jadhav Ravindra Jadeja
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy