বিজয়ী: টেস্ট জিতে ভারতীয় ক্রিকেটারদের উৎসব। বেঙ্গালুরুতে। ছবি: পিটিআই
বেঙ্গালুরুতে ঐতিহাসিক টেস্ট শুরু হওয়ার আগে ভারতীয় অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানে বলেছিলেন, আফগানিস্তানকে কোনও রকম দয়া দেখাবেন না। নির্মম ক্রিকেট খেলবেন। কিন্তু এতটা নির্মম হয়ে উঠবেন, ভাবা যায়নি।
বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে দু’দিনের মধ্যে অশগর স্তানিকজাইদের দু’বার অলআউট করে তাঁদের ইনিংস ও ২৬২ রানে হারিয়ে দিলেন রাহানেরা। শুক্রবার বেঙ্গালুরুতে দুই ইনিংস মিলিয়ে আফগানরা সাড়ে ৬৬ ওভার ব্যাট করেন। ভারতের ৪৭৪ রানের জবাবে। একবার ১০৯ রানে ও পরের বার ১০৩ রানে। টেস্ট ক্রিকেটে যে এখনও হামাগুড়ি দেওয়া শেখা হয়ে ওঠেনি তাঁদের, তা প্রথম টেস্টেই টের পেয়ে গেলেন মুজিব-উর-রহমানরা। যার পরে তাঁদের ক্যারিবিয়ান কোচ ফিল সিমন্স বলতে বাধ্য হন, ‘‘এই দলকে এখন পাহাড়ে চড়তে হবে।’’
শুক্রবার মাঠে নামার আগেই তাঁদের চিরাচরিত পাঠান সুটে সেজে পরষ্পরকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান আফগান ক্রিকেটাররা। সকালটা খুশির হলেও বিকেলে যে এতটা হতাশা নেমে আসবে তাঁদের শিবিরে, তা বোধহয় ভাবতেই পারেননি রশিদ খানরা। এই দু’দিনে আফগানদের মনে রাখার মতো ঘটনা একটাই, প্রথম দিন চা-বিরতির পরে ভারতের পাঁচ উইকেট ফেলা। বাকিটা দুঃস্বপ্ন।
প্রথম ইনিংসে ৯০ রানে পৌঁছনোর আগেই তাদের ন’উইকেট পড়ে যায়। সবচেয়ে বেশি, ২৪ রান করেন মহম্মদ নবি। আর অশ্বিন চার উইকেট নেন ২৭ রান দিয়ে। ফলোঅন করে দ্বিতীয় ইনিংসেও ধস। এ বার মাত্র চার ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের স্কোর করলেন। চার উইকেট পেলেন রবীন্দ্র জাডেজা, উমেশ যাদব তিন। কেন আইসিসি দ্বিস্তরীয় টেস্ট ক্রিকেট চাইছে, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল নবিদের ব্যর্থতা।
ভারত এই প্রথম কোনও টেস্ট জিতল দু’দিনে। যদিও টেস্ট ক্রিকেটের ১৪১ বছরের ইতিহাসে দু’দিনে টেস্ট জেতার ঘটনা এই নিয়ে ঘটল ২১বার। তবে এক দিনে ২০ উইকেট ভারতই প্রথম নিল। ২০০২-এর অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের অবশ্য এর চেয়েও খারাপ দশা হয়েছিল। শারজায় দুই ইনিংসে তারা ৫৯ ও ৫৩ রানে অলআউট হয়ে যায়।
এমন ঐতিহাসিক জয়ের পরে ভারতের অধিনায়ক রাহানের মুখে সান্ত্বনার ভাষা ছাড়া কিছু নেই। সঙ্গে কিছু পরামর্শও। বললেন, ‘‘ওরা সবে টেস্ট খেলা শুরু করেছে। ওদের এখন অনেক শিখতে হবে। ওদের ব্যাটিং এখনও টেস্ট মানের নয়। ওদের টেস্ট ম্যাচের মতো পরিস্থিতি তৈরি করে অনুশীলন করতে হবে। টেস্ট খেলার মানসিকতাই অন্যরকম। সেটা ওদের রপ্ত করতে হবে।’’ ম্যাচের পরে সিরিজ জয়ের ট্রফি-সহ নিজেদের গ্রুপ ছবি তোলার সময় বিপক্ষের ক্রিকেটারদেরও ডেকে নেন রাহানে। তাঁর এই সৌজন্যবোধে যে মুগ্ধ দুই দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা, তা সোশ্যাল মিডিয়াতেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
তবে আফগানিস্তানের এই হার মেনে নিতে পারছেন না সে দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের অনেকেই। আইসিসি-র কাছে রশিদ খানদের টেস্ট খেলার অধিকারও ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি করেছেন কেউ কেউ। ভারতীয় তারকা স্পিনার হরভজন সিংহ টুইট করেন, ‘‘ম্যাচটা শুরু হওয়ার আগেই যে শেষ হয়ে গেল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy