Advertisement
E-Paper

লখনউয়ে ধোঁয়াশা বিতর্ক, অতীত থেকে শিক্ষা না নেওয়ার মাসুল, ম্যাচ বাতিলের নেপথ্যে বোর্ড কর্তারাই কাঠগড়ায়

বুধবার চতুর্থ টি-টোয়েন্টি বাতিল হয়ে যায় ধোঁয়াশার জন্য। বোর্ডকর্তারা অতীত থেকে সামান্য শিক্ষা নিলেই এই ঘটনা ঘটত না। বোর্ডকর্তাদেরই কাঠগড়ায় তুলেছেন ডেল স্টেন, রবিন উথাপ্পারা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:২১
cricket

লখনউয়ে এই ধোঁয়াশার জন্যই বাতিল হয়ে যায় ম্যাচ। ছবি: পিটিআই।

বুধবার লখনউয়ে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা চতুর্থ টি-টোয়েন্টি বাতিল হয়ে গিয়েছে ধোঁয়াশার জন্য। একটি বলও খেলা হয়নি। অথচ বোর্ডকর্তারা অতীত থেকে সামান্য শিক্ষা নিলেই এই ঘটনা ঘটত না। পুরনো অভিজ্ঞতাকে কেউ মাথায় রাখেননি বলেই এমনটা হয়েছে। বোর্ডকর্তাদেরই কাঠগড়ায় তুলেছেন ডেল স্টেন, রবিন উথাপ্পারা।

শীতকালে উত্তর ভারতের যে কোনও রাজ্যে যে প্রবল কুয়াশা এবং ধোঁয়াশা হয়, তা অজানা নয় কারও কাছেই। তা সত্ত্বেও কেন এই সময় লখনউয়ে খেলা দেওয়া হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্কুলে পড়া ছাত্ররাও জানে ভোরবেলা বা সন্ধ্যার পর থেকে গোটা উত্তর ভারতে কেমন কুয়াশা পড়ে। তবু বোর্ডকর্তারা সিদ্ধান্তে অবিচল ছিলেন। খেসারত দিতে হয়েছে ম্যাচ বাতিল করে, যার থেকে আর্থিক ক্ষতিও বেশ ভালই হয়েছে।

চলতি টি-টোয়েন্টি সিরিজ়ে যে পাঁচটি ম্যাচ রয়েছে, তার তিনটিই রয়েছে উত্তর ভারতের শহরগুলিতে। বোর্ডকর্তারা ভাগ্যবান যে মুল্লানপুর এবং ধর্মশালায় নির্বিঘ্নে ম্যাচ হয়েছে। ২০২৩ বিশ্বকাপে ধর্মশালায় দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ দু’বার বন্ধ করে দিতে হয়েছিল কুয়াশার কারণে। ভারতের একটি ম্যাচেও কুয়াশার কারণে সমস্যা হয়েছিল।

শুধু তাই নয়, ধর্মশালার ঠান্ডাতেও কেঁপে গিয়েছিলেন ক্রিকেটারেরা। দু’দলের ক্রিকেটারেরাই জানিয়েছিলেন, এমন পরিস্থিতির মধ্যে তাঁরা আগে কখনও খেলেননি। ধর্মশালায় ম্যাচের দিন সন্ধ্যায় তাপমাত্রা সাত-আট ডিগ্রির মতো ছিল। রাত বাড়তেই তাপমাত্রা আরও কমতে থাকে। রাত ১০.৩০টার সময় সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বরুণ চক্রবর্তী জানিয়েছিলেন, ঠান্ডার জন্য ম্যাচের আগের দিন অনুশীলনই করেননি। বলেছিলেন, “চেন্নাইয়ে (বরুণের নিজের শহর) এই ঠান্ডা কল্পনাই করা যায় না। গত কাল ঐচ্ছিক অনুশীলনে আসিনি। লেপ-কম্বলের তলায় ব্যস্ত ছিলাম। আজও বল হাতে ধরতে অসুবিধা হচ্ছিল। তাই হ্যান্ড ওয়ার্মার ব্যবহার করেছি।”

ঠান্ডা কম ছিল না লখনউয়েও। ক্রিকেটার থেকে আম্পায়ার, সকলকেই গরম পোশাকে দেখা গিয়েছে। কুয়াশার কারণে টসের সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়। তার পরেও কেন বার বার টস পিছিয়ে রাত ৯.৩০টা পর্যন্ত টানলেন আম্পায়ারেরা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দুই প্রাক্তন ক্রিকেটার। তাঁদের দাবি, রাত বাড়লে কুয়াশা বাড়াই স্বাভাবিক। তা হলে কিসের অপেক্ষা করছিলেন আম্পায়ারেরা?

উথাপ্পা বলেছেন, “বাকিদের কোনও কথাই আমার কানে ঢুকছে না। আম্পায়ারদের সিদ্ধান্তে আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি। রাত বাড়লে কী ভাবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে? কোনও ভাবেই কুয়াশা কমবে না। বরং আরও বাড়বে। আম্পায়ারেরা কী ভাবছে সেটাই জানি না। গত আধ ঘণ্টায় কি এমন হয়নি যেটা পরের আধ ঘণ্টায় হতে পারে? আমি ভাষাহীন।”

ভারতের ক্রিকেটার হার্দিক পাণ্ড্যকে সর্ব ক্ষণ মাস্ক পরে থাকতে দেখা গিয়েছে। রাত বাড়তেই দর্শকেরা মাঠ ছাড়তে শুরু করেন। অনেকে ফেরার আগে কাগজের কাপ মাঠে ছুড়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন।

উথাপ্পার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা স্টেন বলেন, “আমার মনে হয় একজন আম্পায়ারকে এখানে এনে জিজ্ঞাসা করা উচিত, হচ্ছেটা কী? ক্রিকেটারেরা মাঠে নেমে খেলতে চায়। কেন ওদের অকারণে অপেক্ষা করা হচ্ছে। এর পর যদি কোনও আম্পায়ার আমার সামনে দিয়ে যায়, তাঁকে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞাসা করব। আমি নিজে হয়তো এই পরিবেশে খেলতে পারতাম। এর থেকেও খারাপ পরিস্থিতিতে, আরও বেশি কুয়াশার মধ্যে প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছি। তবে এখনকার নিয়ম কী সেটা আমি ভাল জানি না।”'

বোর্ডের সহ-সভাপতি রাজীব শুক্লের ঘরের মাঠ লখনউ। তিনি বুধবার মাঠে ছিলেন। মাঠ পরিদর্শনও করেন। ম্যাচ বাতিল হওয়ার পর তাঁর যুক্তি, “১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারি কুয়াশা একটা বড় সমস্যা। আশা করি ভবিষ্যতে সূচি তৈরির আগে সেটা মাথায় রাখা হবে। ভারতের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে অন্যত্র ম্যাচ সরানোর সুবিধা আমাদের কাছে রয়েছে। সেটা মাথায় রাখা হবে।”

India vs South Africa 2025 Lucknow fog BCCI
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy