Advertisement
E-Paper

হতাশায় রেফারিং ছাড়ার পরিকল্পনা করছেন প্রাঞ্জল

বাণিজ্য বিভাগের স্নাতক আগরপাড়ার সুকান্তপল্লীর বাসিন্দা প্রাঞ্জল এই মুহূর্তে এমবিএ পাঠরত। ইংরেজিতে অনর্গল হওয়ায় দেশের বাইরে ভাষা সমস্যায়ও পড়তে হয় না তাঁকে। ফেডারেশন সূত্রে খবর, বাঙালি এই রেফারির ম্যাচ রিপোর্টও বেশ ঝরঝরে।

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৭ ০৫:২৭
চিন্তিত: ভবিষ্যৎ নিয়ে দোটানায় দেশের সেরা রেফারি। ফাইল চিত্র।

চিন্তিত: ভবিষ্যৎ নিয়ে দোটানায় দেশের সেরা রেফারি। ফাইল চিত্র।

সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের বিচারে ২০১৬-’১৭ মরসুমের সেরা রেফারি তিনি। রয়েছেন ফেডারেশনের এলিট প্যানেলেও। দাপটের সঙ্গে গত কয়েক বছর ধরে খেলাচ্ছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে— আই লিগ, আইএসএল, ফেড কাপের পাশাপাশি বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব ও এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও বাঁশি মুখে ম্যাচ খেলাচ্ছেন তিনি।

ভারতীয় ফুটবলের সেই বঙ্গসন্তান রেফারি প্রাঞ্জল বন্দ্যোপাধ্যায়ই কি না চিন্তা ভাবনা করছেন এ দেশে রেফারিং ছেড়ে বিদেশে চলে যাওয়ার ব্যাপারে!

কেন? জানতে চাইলে আগরপাড়ার ছেলে বলছেন, ‘‘হতাশায় ভুগছি। গত দু’তিন বছর ধরে সরকারি, বেসরকারি সব জায়গায় ঘুরেও একটা চাকরি পেলাম না। এ ভাবে চলতে থাকলে এ দেশে রেফারিং ছেড়ে দিয়ে বিদেশে চলে যাব!’’

রবিবারই বাঁশি মুখে প্রাঞ্জল কলকাতা লিগের মহমেডান-পাঠচক্র ম্যাচ পরিচালনা করেছেন কল্যাণীতে। সোমবার সেই প্রাঞ্জলই তাঁর দেশ ছাড়ার ভাবনা জানাতে গিয়ে বললেন, ‘‘এলিট প্যানেলের রেফারি হিসেবে ফেডারেশনের মাস প্রতি বেতন ও ম্যাচ ফি— এটাই আমার রোজগার। কিন্তু এই রোজগার তত দিন, যত দিন আমার ফিটনেস থাকবে। সেটা মেরেকেটে হয়তো আর বছর চারেক। তার পর সংসার চলবে কী ভাবে?’’

বাণিজ্য বিভাগের স্নাতক আগরপাড়ার সুকান্তপল্লীর বাসিন্দা প্রাঞ্জল এই মুহূর্তে এমবিএ পাঠরত। ইংরেজিতে অনর্গল হওয়ায় দেশের বাইরে ভাষা সমস্যায়ও পড়তে হয় না তাঁকে। ফেডারেশন সূত্রে খবর, বাঙালি এই রেফারির ম্যাচ রিপোর্টও বেশ ঝরঝরে।

নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কার কারণ হিসেবে প্রাঞ্জল এ দিন শোনালেন, তাঁর সতীর্থ আর এক বঙ্গসন্তান রেফারি রঞ্জিত বক্সির ঘটনা। প্রাঞ্জলের মতোই ফেডারেশনের এলিট লেভেলের বেতনভুক রেফারি ছিলেন রঞ্জিত। যিনি সোমবার বাঁশি মুখে পরিচালনা করলেন মোহনবাগান-সাদার্ন সমিতি ম্যাচ। গত বছর জন্ডিস হওয়ায় তিনি বেশ কয়েক মাস ম্যাচ খেলাতে পারেননি। সুস্থ হয়ে ফিটনেস ফিরে না পাওয়ায় ফেডারেশনের এলিট তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। ফলে রাতারাতি রোজগারহীন হয়ে গিয়েছিলেন তিনি।

আশঙ্কিত প্রাঞ্জলের তাই প্রশ্ন, ‘‘আমার এ রকম হলে কী করব! ক্রীড়ামন্ত্রীকে দু’বছর আগে বলেছিলাম এ ব্যাপারে। কিন্তু এখনও তো বেকারই রয়ে গেলাম।’’

একটু থেমে ফের প্রাঞ্জল বলেন, ‘‘নিউজিল্যান্ডে এক বন্ধু থাকে। সে বলেছে ওখানে গেলে রোজগারের ব্যবস্থা করে দেবে। কিন্তু তা হলে আমার আর এ দেশে রেফারিং করা হবে না। সব কিছু নতুন করে শুরু করতে হবে ওখানে গিয়ে। রেফারিং-এ দু কূলই যাবে তখন। ভবিষ্যৎ নিয়ে তাই দোটানায় রয়েছি। আগামী বছরের শুরুতেই হয়তো চূড়ান্ত একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলব। সংসার তো বাঁচাতে হবে!’’

প্রাঞ্জলের ব্যাপারে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বার কয়েক তাঁর ফোন বেজে গিয়েছে। পরে ফোন ধরে তিনি বলেন, ‘‘স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত রয়েছি। এ ব্যাপারে পরে কথা বলব।’’

Pranjal Banerjee referee Football
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy